ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গদি হারালেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা(Thai Prime Minister)। সে দেশের সাংবিধানিক আদালত তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। ৩৬ জন সেনেটরের আবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে সেখানকার সাংবিধানিক আদালত।উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত আপাতত ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হুম সেনের সঙ্গে তাঁর একটি কথোপকথনের একটি অডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। এরপর থেকেই পেতংতার্নের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল সাধারণ মানুষের মনে।
প্রধানমন্ত্রীর ফোন কল ফাঁস (Thai Prime Minister)
বিতর্কের সূত্রপাত একটি ফোন কল ফাঁসকে কেন্দ্র করে(Thai Prime Minister)। কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে সীমান্তবিরোধ নিয়ে আলোচনা করতে শোনা যায় সিনাওয়াত্রাকে। সেই ফোন কল ফাঁস হওয়ার পর থেকেই থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়। বিরোধীরা সরব হয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। ফাঁস হওয়া ফোন কলে শোনা যায়, সিনাওয়াত্রা কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ‘আঙ্কল’ বলে সম্বোধন করছেন । ২০২৩ সালে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়লেও সে দেশে হুনের প্রভাব বিস্তর।বস্তুত, গত মাসে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সংঘর্ষে কম্বোডিয়ার এক জন সেনার মৃত্যু হয়। এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। সেই আবহে কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপোকথন থাইল্যান্ডে অস্থিরতা সৃষ্টি করে।

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ (Thai Prime Minister)
হুন ও সিনাওয়াত্রার ফোন কল ফাঁস হওয়ার পর থেকেই থাইল্যান্ডে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়(Thai Prime Minister)। শুধু বিরোধীদেরই নয়, নিজের দলের আইনপ্রণেতাদেরও প্রশ্নের মুখে পড়েন সিনাওয়াত্রা। দিন দশেক আগেই থাইল্যান্ডে সিনাওয়াত্রার নেতৃত্বাধীন সরকারের হাত ছাড়ে সে দেশের অন্যতম প্রধান দল রক্ষণশীল ভুমজাইথাই পার্টি। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সিনাওয়াত্রার অপসারণের দাবিতে দেশজুড়ে নানা জায়গায় প্রতিবাদ বিক্ষোভও শুরু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক কোর্টের দ্বারস্থ হন সে দেশের এক দল সিনেটর। বিক্ষোভের মুখে পড়ে ক্ষমাও চান সিনাওয়াত্রা। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।
আরও পড়ুন-Stock Market: দিনভর ট্রেন্ডিংয়ের পর বাজার ফিরল সবুজে! কোন কোন স্টকে লাভ?
আদালতের নির্দেশ (Thai Prime Minister)
বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়তে থাকায় থাইল্যান্ডের জোট সরকার দলত্যাগের মুখে পড়ে(Thai Prime Minister)। অনেকের মতে, একের পর এক আইনপ্রণেতার দলত্যাগের কারণে খুব শীঘ্রই সিনাওয়াত্রার সরকারকে অনাস্থা ভোটের সম্মুখীন হতে হবে। আদালতে মামলাকারীরা জানান, সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তাঁর সততার অভাব রয়েছে। তাঁকে অপসারণের আর্জি জানানো হয়। তবে এখনই তাঁকে অপসারণের নির্দেশ দেয়নি আদালত। সিনাওয়াত্রাকে সাসপেন্ড করে আদালত জানিয়েছে, ভবিষ্যতে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।অন্যদিকে, হুন সেন স্বীকার করেন থাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের অডিও টেপ তিনি বহজনকে শেয়ার করেছিলেন তাঁদের অবহিত করতে। তারাই কেউ ফোনের অডিও ফাঁস করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-RCB: ‘পুলিশ কোনও জাদুকর নয়!’ বেঙ্গালুরু পদপিষ্টকাণ্ডে দায়ী আরসিবি, জানাল ট্রাইবুনাল
পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পরিচয় (Thai Prime Minister)
পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থাকসিনের কন্যা(Thai Prime Minister)। কোটিপতি থাকসিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার আগে থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন স্রেঠা থাভিসিন। তাঁকে পদচ্যুত করেছিল সে দেশের সাংবিধানিক কোর্ট। থাভিসিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অপরাধ মামলায় দোষী সাব্যস্তকে মন্ত্রী করেছিলেন আইন ভেঙে। তিনি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত বছর অগস্টে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করেন সে দেশের রাজা।
