ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া অবশেষে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে(Thailand Cambodia Ceasefire)। সোমবার (২১ জুলাই) মালয়েশিয়ার রাজধানী পুত্রজয়ায় এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট, তাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই, পাশাপাশি আমেরিকা ও চিনের রাষ্ট্রদূতরা।
আলোচনার ফলাফল (Thailand Cambodia Ceasefire)
বৈঠকের শেষে ইব্রাহিম জানান,“দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীই অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত সংঘর্ষবিরতির ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন(Thailand Cambodia Ceasefire)। তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া পারস্পরিক সমঝোতায় পৌঁছেছে।”
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি তাদের বিদেশমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।তবে সংঘর্ষবিরতির সঠিক সময়সীমা বা কার্যকারিতা নিয়ে হুন মানেট স্পষ্ট কিছু জানাননি। তিনি কেবল বলেছেন,“আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে এবং আমরা আশাবাদী, সংঘর্ষ অবিলম্বে বন্ধ হবে।”
সংঘর্ষের ক্ষয়ক্ষতি ও মানবিক সংকট (Thailand Cambodia Ceasefire)
হুন মানেট স্বীকার করেন যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে উভয় দেশই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে (Thailand Cambodia Ceasefire)।
- প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া হয়ে বিভিন্ন শরণার্থী শিবির বা অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছেন।
- গত সপ্তাহে শুরু হওয়া সংঘর্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে তাইল্যান্ডের ১৩ জন এবং কম্বোডিয়ার আট জন সাধারণ নাগরিক।
- সীমান্তবর্তী এলাকা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ, এবং পরিবহনে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
ট্রাম্পের সতর্কবার্তা ও মধ্যস্থতা (Thailand Cambodia Ceasefire)
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump) মধ্যস্থতার প্রশংসা করেছেন(Thailand Cambodia Ceasefire)। ট্রাম্প গত সপ্তাহে স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছিলেন,“যদি তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধ বন্ধ না করে, আমেরিকা তাদের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি বাতিল করবে।”
এই হুঁশিয়ারির পর থেকেই উভয় দেশ আলোচনার টেবিলে বসতে সম্মত হয়।
- তাইল্যান্ড প্রথমে অভিযোগ করেছিল যে, কম্বোডিয়া সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে নিরীহ নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
- কম্বোডিয়া সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেছিল যে, তাইল্যান্ডই সীমান্তে উস্কানি দিচ্ছে।
তবে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং কূটনৈতিক আলোচনার পথ খুলে যায়।

আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও চিনের ভূমিকা (Thailand Cambodia Ceasefire)
বৈঠকে চিনের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতি নজর কাড়ে। চিনের কূটনৈতিক সহায়তা ও চাপও এই সংঘর্ষবিরতির পেছনে কার্যকর ভূমিকা রাখছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
- পুত্রজয়ার বৈঠক মূলত আঞ্চলিক শান্তি ও সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়ে একটি চূড়ান্ত কাঠামো তৈরির দিকে প্রথম পদক্ষেপ।
- মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য এই যুদ্ধবিরতি একটি “ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত”।

আরও পড়ুন: Anubrata Mondal : মঞ্চ নয়, গাড়ির মাথায় বসেই দিদির বক্তব্য শুনলেন কেষ্ট!
কেন শুরু হয়েছিল সংঘর্ষ? (Thailand Cambodia Ceasefire)
গত সপ্তাহে সীমান্তবর্তী এলাকার কৃষিজমি ও জলসম্পদ নিয়ে বিরোধ থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
- স্থানীয় সেনা সংঘর্ষের জেরে শহর ও গ্রামাঞ্চল আতঙ্কে ভুগছিল।
- গোলাগুলি এবং মর্টার হামলার কারণে বহু মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়।