ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: টানা পাঁচদিন সংঘাতের পর মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় ‘তাৎক্ষণিক এবং নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া(Thailand-Cambodia)।মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাণিজ্য চুক্তির হুঙ্কার দিতেই মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। তিনি আরও বলেন, ‘এটি উত্তেজনা হ্রাস এবং শান্তি ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ।’
মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি (Thailand-Cambodia)
জানা গেছে, মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় আঞ্চলিক ব্লক আসিয়ানের সভাপতি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সরকারি বাসভবনে থাই এবং কম্বোডিয়ার নেতারা আলোচনায় বসেন(Thailand-Cambodia)।থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই এবং কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেটের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হয়।এছাড়াও মার্কিন ও চিনা কর্মকর্তারা আলোচনা অংশ নেন। আনোয়ার বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতি ও ফলাফল দেখেছি, যা কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের জন্য শুভসংবাদ বয়ে আনবে।’ তিনি জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের নেতৃত্বও সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে উভয় দেশ ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখেছেন।কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড সোমবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে সম্মত হয়েছে।

দুই রাষ্ট্র প্রধানের বক্তব্য (Thailand-Cambodia)
সাংবাদিকদের উদ্দেশে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বৈঠক খুব ভালো হয়েছে এবং আমরা এমন একটি ফল পেয়েছি যা অবিলম্বে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ বন্ধ করবে(Thailand-Cambodia)।’ তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘দৃঢ় ভূমিকার’ প্রশংসা করে বলেন, ‘আলোচনা ও যুদ্ধবিরতির পথ তৈরি করতে তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে ‘আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্গঠনে’ সহায়ক হবে।অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে থাই প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম বলেন, ‘থাইল্যান্ড যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং আমরা আশা করি, উভয় দেশই আন্তরিকতার সঙ্গে এটি কার্যকর করবে।’
আরও পড়ুন-Mass Shooting In Bangkok: ব্যাংককে ব্যস্ত বাজারে এলোপাথাড়ি গুলি! নিহত ৬, আত্মঘাতী বন্দুকবাজ
মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঙ্কার (Thailand-Cambodia)
ট্রুথ সোশাল পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাইয়ের কথা হয়েছে(Thailand-Cambodia)। দুই পক্ষই দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও শান্তির পক্ষে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।ভারতীয় সময় রবিবার তাঁকে লিখতে দেখা যায়, ‘কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খুব ভালো কথা হল আমার। আমি ওঁকে থাইল্যান্ড ও সেখানকার কার্যকরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হওয়া কথোপকথনের বিষয়টি জানিয়েছি। দুই পক্ষই দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও শান্তির পথ খুঁজছি। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের টেবিলে ফেরার কথাও ভাবছে, যা আমরা মনে করছি যুদ্ধ থামা না পর্যন্ত অসম্ভব। ওরা দ্রুত সাক্ষাৎ ও যুদ্ধবিরতি এবং শেষপর্যন্ত শান্তির দিকে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের সঙ্গে কথা বলতে পেরে আমি সম্মানিত। সব ঠিক হয়ে গেলে এবং শান্তি ফিরলে আমরা আবার ওদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করব।’

আরও পড়ুন-Panchayat Secretary: বিহারে বাস্তবের ‘পঞ্চায়েত!’ সচিবকে জুতো পেটা করার হুমকি বিধায়কের
রক্তক্ষয়ী সংঘাত (Thailand-Cambodia)
গত বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষের জেরে কার্যত রক্তস্রোত বইছে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডে(Thailand-Cambodia)। তিনদিন গোলাবর্ষণের পর অবশেষে শনিবার থাইল্যান্ডের কাছে যুদ্ধ থামানোর আর্জি জানায় কম্বোডিয়া। যদিও সে প্রস্তাব কানে তোলেনি থাইল্যান্ড। এই সংঘর্ষের কারণ ‘এমারেলড ত্রিকোণে’ অবস্থিত একটি শিবমন্দির। দুই দেশই ওই মন্দির ও সংলগ্ন এলাকাকে নিজেদের বলে দাবি করে। ওই মন্দিরগুলিকে নিয়ে সংবেদনশীল তিন দেশের সাধারণ মানুষেরা। এলাকাটির দখল নিয়ে বছর পনেরো আগেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে। নতুন করে গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে সীমান্ত অঞ্চলে গোলাগুলি চলে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাদের মধ্যে। এরপরেই এফ ১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামলা চালায় থাই সেনা।
