ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দুর্ঘটনার চার দিন পর হদিশ মিলেছে ‘অভিশপ্ত’ এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্সের(Second black box)।ঘটনাস্থল থেকেই তা উদ্ধার করা হয়েছে। এই ব্ল্যাক বক্সে বিমানের ককপিটের কথাবার্তা রেকর্ড করা রয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকরা, এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-১৭১ ফ্লাইটের ককপিট ভয়েস রেকর্ডারটি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। গত শুক্রবার যে হস্টেলের ছাদে বিমানটি আছড়ে পড়েছিল, সেখান থেকে প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার করা হয়েছিল। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দুটি ব্ল্যাক বক্স খতিয়ে দেখার পরই দুর্ঘটনার কারণ এবং ভেঙে পড়ার ঠিক আগের মুহূর্তে বিমানে কী কী হয়েছিল তা খুব শীঘ্রই জানা যাবে।
দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার (Second black box)
রবিবার আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রধান সচিব পি কে মিশ্র(Second black box)। ওই দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা ছাড়াও আহতদের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। তাঁর কাছেই ওই দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স পাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে আধিকারিকদের তরফে।এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেটিগেশন ব্যুরো এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সার্কিট হাউসে হওয়া ওই উচ্চ-পর্যায়ের পর্যালোচনায় পিকে মিশ্র কেন্দ্রীয় এবং গুজরাট রাজ্য সরকার, এএআইবি এবং ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে তদন্ত প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানেই তাঁকে ওই ফ্লাইটের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার দু’টিই পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে।আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই বিমান দুর্ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেটিগেশন ব্যুরো। আন্তর্জাতিক প্রটোকল মেনে সমান্তরালভাবে তদন্ত করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্র্যান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড-ও।

প্রথম ব্ল্যাক বক্স (Second black box)
দুর্ঘটনার পরের দিনই বিমানের প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি পাওয়া গিয়েছিল (Second black box)। যে বিল্ডিংয়ে বিমানটি ধাক্কা খায়, সেটি ছিল ডাক্তারদের হস্টেল ভবন। তার ছাদ থেকে প্রথম ব্ল্যাক্স বক্সটি উদ্ধার করা হয়েছিল। বিমান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তাতে রেকর্ড করা থাকে। তারপর চার দিনের মাথায় উদ্ধার করা হল দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স। এটি ‘ককপিট ভয়েস রেকর্ডার’ নামেও পরিচিত।প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি দুর্ঘটনার পরেও মোটের উপর অক্ষত ছিল। ফলে দ্রুত তার থেকে তথ্য বার করে আনা যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্সটি কী অবস্থায় মিলেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে অন্যতম প্রধান প্রমাণ হিসাবে এই দুই ব্ল্যাক বক্স ব্যবহৃত হবে।

আরও পড়ুন-Vijay Rupani: বিমান দুর্ঘটনার ৩ দিন পর গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দেহ শনাক্ত
বিমান দুর্ঘটনার রহস্য (Second black box)
আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার রহস্য লুকিয়ে রয়েছে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনার এআই-১৭১-এর ‘ব্ল্যাক বক্স’-এ (Second black box)। কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা, তা জানতে এখন তাই নজর সেটির দিকেই। বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই ‘ব্ল্যাক বক্স’? সব প্লেনেই দু’রকমের ব্ল্যাক বক্স রাখা থাকে। এটাই নিয়ম। একটি ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর)। অপরটি ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এফডিআর)। কোনও দুর্ঘটনা হলে এই দুই রেকর্ডিং থেকে কী ঘটেছিল সেটার একটা ছবি ভেসে ওঠে তদন্তকারীদের সামনে। ফ্লাইট ডেটা রেকর্ড থেকে পাওয়া যায় অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশের হিসেব, কোনদিকে যাচ্ছিল বিমান, কত স্পিড ছিল এমন মোট ৮০ রকমের তথ্য পাওয়া যায়। প্রথমে মেটালিক স্ট্রিপে রেকর্ড হত বিমানের ভিতরের সব ঘটনা। যাতে জলে কিংবা আগুনের গ্রাসে পড়লেও নষ্ট না হয় তথ্য। পরবর্তীতে উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাগনেটিক ড্রাইভ এবং মেমরি চিপ রাখা হয় ব্ল্যাক বক্সে।

আরও পড়ুন-US: আরও ৩৬ দেশের জন্য দরজা বন্ধ করতে পারে আমেরিকা
দুর্ঘটনার কবলে বিমান (Second black box)
গত ১২ জুন বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডন গ্যাটউইকের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ (Second black box)। বোয়িং সংস্থার এই ড্রিমলাইনার বিমানে এর আগে বড়সড় দুর্ঘটনা হয়নি। কিন্তু সে দিন রানওয়ে ছাড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সামনের বিল্ডিংয়ে ধাক্কা খেয়ে বিমানটি ভেঙে পড়ে। মুহূর্তে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে চারপাশ। বিমানে আগুন ধরে যায়। এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী-সহ ২৪২ জন ছিলেন। ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনাস্থলেও অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে। এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ২৭০। ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে, বিমান ভেঙে পড়ার আগে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন পাইলট। পাঠিয়েছিলেন বিপদবার্তা (মে ডে কল)। কিন্তু তারপর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মুহূর্তের মধ্যে বিমানটি ভেঙে পড়ে।
