ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শাস্ত্র অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya 2025) তিথি অনন্ত মাহাত্ম্য। প্রচলিত বিশ্বাস, এই তিথিতে পাপ করলেও তা অক্ষয় হয়, পূন্য করলেও তা অক্ষয় হয়। পৌরাণিক মতেও অক্ষয় তৃতীয়ার বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। জেনে নেওয়া যাক, পুরাণে এই দিনটি সম্পর্কে কী বলা আছে। অক্ষয় তৃতীয়ার একাধিক মাহাত্ম্যের কথা উল্লেখ আছে পুরাণে। পুরাকালে এই দিনটিতে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল।
কাশীতে দেবী অন্নপূর্ণার প্রকাশ (Akshaya Tritiya 2025)
অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya 2025) দিনেই কাশীতে দেবী অন্নপূর্ণার প্রকাশ ঘটে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, একবার দেবী পার্বতী মহাদেবের কাছে রান্নাঘর তৈরি করে দিতে অনুরোধ করেন, কিন্তু মহাদেব তা সহাস্যে উপেক্ষা করেন। অভিমানে দেবী কৈলাস ত্যাগ করেন। পৃথিবীতে অন্নের হাহাকার পড়ে যায়। দেবতা, মানব, দানব সবাই ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েন। মহাদেব নিজে ক্ষিদের জ্বালায় দিকে দিকে অন্নের খোঁজে ঘুরে বেড়ান। তখন তিনি সন্ধান পান, কোনও এক দৈবশক্তি সম্পন্ন নারী কাশীতে সবাইকে অন্নদান করছেন। মহাদেব তখনই সেখানে পৌঁছে দেখেন, দেবী স্বয়ং অন্নপূর্ণা রূপে সিংহাসনে আসীন এবং সকলকে অন্নদান করছেন অন্নপূর্ণা রূপে। মহাদেব নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং দেবী তাঁকে তিন মুষ্টি অন্ন প্রদান করেন।

দেবী ধুমাবতীর আবির্ভাব তিথি
অক্ষয় তৃতীয়া হল দশমহাবিদ্যার অন্যতম দেবী ধুমাবতীর আবির্ভাব তিথি (Akshaya Tritiya 2025)। দেবী ভগবত অনুযায়ী পার্বতী একবার দুরাচারী মল্ল ও মণিকে জীবন রক্ষার অভয় প্রদান করেন। এদিকে তাদের অত্যাচারে পৃথিবীতে হাহাকার পড়ে যায়। অসহায় মানুষকে রক্ষা করতে মহাদেব মল্ল ও মনিকে বধ করতে উদ্যত হন। দেবী পার্বতী তখন কালিকা রূপ ধারণ করে তাঁদের জীবন রক্ষা করেন এবং নিজেই মহাকালকে গিলে নেন। এরপর তিনি কাকে টানা রথে উপবিষ্ট হন এবং কুলো হাতে নিয়ে বৈধব্য রূপ ধারণ করেন। দেবীর এই রূপই ধূমাবতী নামে পরিচিত। তাঁর এই ত্যাগ দেখে মল্ল ও মণি সৎ পথে ফিরে আসে।

আরও পড়ুন: Akshaya Tritiya 2025: অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি পরশুরাম জয়ন্তী হিসেবেও পালন করা হয়, জানুন পুরাণের গল্প
ষোড়শ যাত্রার অন্যতম চন্দন যাত্রা
গোবিন্দর দ্বাদশ যাত্রা এবং দেবী ষোড়শ যাত্রার মধ্যে অন্যতম যাত্রা হল চন্দন যাত্রা। গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহে মা যশোদা গোপালের সারা অঙ্গে চন্দন লেপন করে রাখতেন দহন কমানোর জন্য। সেই প্রথা মেনে আজও মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের গাত্র দহন নিবারণের জন্য অঙ্গ সেবা ও চন্দন লেপন ২১ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়। চন্দন সরোবরে ভূদেবী ও জগন্নাথের জলকেলি চলে। এই প্রথা চন্দন যাত্রা নামে পরিচিত, যা অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই শুরু হয়।

পরশুরাম জয়ন্তী হিসেবে পালিত
অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে সত্যযুগের অবসান হয়ে ত্রেতা যুগের সূচনা হয়। অক্ষয় তৃতীয়াতেই ভগীরথ গঙ্গাকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে অবতরণ করান। বিষ্ণুর দশাবতারের অন্যতম পরশুরামের জন্ম হয়েছিল হল অক্ষয় তৃতীয়াতে। সেই কারণে এই দিনটি পরশুরাম জয়ন্তী হিসেবেও পালিত হয়।
