ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উপনির্বাচনে ছয়ে ছয় তৃণমূল। জোড়া আসনে তৃণমূলের এক লাখি জয়। খাতা খুলতেই পারল না বিরোধী শিবির। মাদারিহাটেও গড় রক্ষা হল না বিজেপির। বাকি ৬ আসনেও একই ছবি। সব কেন্দ্রেই জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা। ভোটের ব্যবধান কোথাও ৫০ হাজারের বেশি তো কোথাও আবার তা লাখ পেরিয়েছে। ফল প্রকাশের পর রীতিমত উৎসবের মেজাজ শাসক শিবিরে।
বাংলার উপভোটের ব্যালট বক্স খুলতেই সকাল থেকেই দেখা গিয়েছে সব আসনেই তৃণমূলের বিজয়রথ। সকাল এগারোটার মধ্যেই নৈহাটিতে বড় ব্যবধানে জয় লাভ করেন তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে। বাকি পাঁচ আসনেও বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। সিতাই থেকে মাদারিহাট, মেদিনীপুর থেকে তালডাংড়া, হাড়োয়াতেও একই ছবি। আরও এক বার ভোটের ফল প্রমাণ করে দিল, বাংলায় বাম-কংগ্রেস এখন প্রান্তিক শক্তি। গ্রাম, শহর— কোনও আসনেই তাদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
একমাত্র হাড়োয়া আসনে বাম সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল ইসলাম দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। এই একটি আসনেই জামানত রয়েছে। বাকি পাঁচ আসনেই জামানত খুইয়েছেন বামপ্রার্থীরা। পৃথক ভাবে লড়ে ছ’টি আসনেই জামানত খুইয়েছে কংগ্রেস। জয়ের ছবি স্পষ্ট হতেই দিকে দিকে বিজোয়ল্লাসে মেতে ওঠে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। বেলা গড়াতেই সবুজ আবির নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে ঘাসফুল শিবিরের লোকেরা।
‘এই জয় নৈহাটির মানুষের জয়। এখন আরও দায়িত্ব বাড়ল।’ জয়ের পর বললেন নৈহাটির জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে। একইসঙ্গে তিনি যে শুরুতেই নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালের উন্নয়নে হাত দেবেন সে কথাও এদিন আরও একবার জানিয়ে দেন সদ্য জয়ী তৃণমূল প্রার্থী।
আরও পড়ুন: https://tribetv.in/bjp-councilors-walk-out-from-kmc-monthly-session/
কৌতূহল ছিল, বিজেপির হাতে থাকা মাদারিহাট পদ্মশিবির ধরে রাখতে পারবে কি না। ফল ঘোষণার পরে দেখা গেল, তৃণমূল শুধু ছক্কাই হাঁকাল না, ইতিহাস গড়ে প্রথম বারের জন্য আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট বিধানসভা আসনে জোড়াফুল ফুটল। বিজেপি কার্যত ‘আত্মসমর্পণ’ই করেছে শাসক শিবিরের কাছে। মাদারিহাটে জয়ের রাস্তা প্রশস্ত হতেই গয়েরকাটায় আবির খেলে পটকা ফাটিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হতে দেখা গেল তৃণমূল কর্মীদের।
শুরু থেকেই মেদিনীপুর, নৈহাটি, হাড়োয়া, তালডাংরা, সিতাই ও মাদারিহাটে ভোটের ব্যবধানে বেড়েছে শাসকদলের প্রার্থীদের। শনিবার সকাল থেকেই হাড়োয়া কেন্দ্রে নিজের জমি শক্ত করে ধরে রেখেছে ঘাসফুল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে হাড়োয়া বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপিকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে আইএসএফ। মেদিনীপুর জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থী সুজয় হাজরা।
আরও পড়ুন:https://tribetv.in/maharashtra-election-who-will-be-cm-shinde-or-fadnavis/
সিতাই এবং তালডাংরাতেই অব্যহত থাকল সবুজ ঝড়। সিতাই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায় প্রথম রাউন্ডেই এগিয়ে ছিল। তালডাংরাতেও ৩৩ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী ফাল্গুনী সিং। সকাল থেকেই সেলিব্রেশন মুডে দেখা গিয়েছে শাসকদলের কর্মী সমর্থকদের। কোথাও তাসা বাজিয়ে, কোথায় আবির উড়িয়ে কোথাও বা ঢাক-কাঁসর বাজিয়ে বিজয়োৎসব ঘাসফুল শিবিরের।
আরও পড়ুন: https://tribetv.in/maharashtra-election-nda-set-to-win-again/
আরও পড়ুন: https://tribetv.in/rahul-gandhi-criticize-modi-and-adani/
আরজি কর কাণ্ডের পর উপনির্বাচনই ছিল প্রথম ভোট। বিরোধীরা দাবি করেছিল, রাজ্যজুড়ে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেওয়া হবে ইভিএমে। এমন আবহে এই নির্বাচন ছিল তৃণমূলের অ্যাসিড টেস্ট। ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে এই নির্বাচনকে কার্যত সেমি ফাইনাল বলেই মনে করা হচ্ছিল। উপনির্বাচনের ফলাফল বলছে আরজি কর আন্দোলনের রেশটুকুও গ্রামবাংলায় পৌঁছয়নি। বিরোধীরা সেখানে ফিকেই। বরং মা-মাটিতেই আস্থা রেখেছেন সাধারণ মানুষ।