'ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ'... আজ ১২ ডিসেম্বর, শুভেন্দু-বার্তার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল

সোমবার হটুগঞ্জের পাল্টা দিতে হাজরায় সভা করছেন শুভেন্দু। মমতা-অভিষেকের খাসতালুকে সভা শুভেন্দুর।

'ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ'... আজ ১২ ডিসেম্বর, শুভেন্দু-বার্তার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, '১২–১৪–২১ তিনটি দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ।'‌ সেখানে আজ মমতা–অভিষেক মেঘালয়ে যাচ্ছেন। আবার ১৭ তারিখ নবান্নের সভাঘরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আবার ১৯ ডিসেম্বর সুকান্ত, শুভেন্দু ও দিলীপকে নয়াদিল্লি তলব করেছেন জেপি নড্ডা। 

সোমবার হটুগঞ্জের পাল্টা দিতে হাজরায় সভা করছেন শুভেন্দু। মমতা-অভিষেকের খাসতালুকে সভা শুভেন্দুর। এদিন হাজরার জনসভার মঞ্চে উপস্থিত রয়েছে  সুকান্ত মজুমদার ও। কাঁথিতে শুভেন্দুর বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে সভা করে হুঙ্কার দিয়ে এসেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তার পাল্টা হিসেবেই কাঁথি ও হাজারায় সভা করছেন শুভেন্দু অধিকারী। 

এদিকে, আজ হাজরার সভা থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন শুভেন্দু। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক রয়েছে বলে খবর। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর বাংলায় বিজেপির নীচুতলার সংগঠন একেবারে তলানিতে। এই অবস্থা দেখে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। বারবার সংগঠন মজবুত করার বার্তা দেওয়া হলেও কোনও কাজ হয়নি। এই সংগঠনের হাল নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামলে আবার গোহারা হতে হবে। তাই বঙ্গ–বিজেপির ত্রয়ী নেতৃত্বকে তলব করলেন নাড্ডা। 

নয়াদিল্লিতে তিনি বৈঠকে ডেকেছেন তিন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাকে। সূত্রের খবর, সাংগঠনিক যে রিপোর্ট জেপি নড্ডার হাতে এসে পৌঁছেছে তাতে তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তাই বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তলব করা হয়েছে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে তাঁদের নিয়ে বৈঠক হবে। সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্ট্র‌্যাটেজি–সহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ বিজেপি নেতা জানান, এই বৈঠক ডাকা হয়েছে সাম্প্রতিক রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে। এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন বাংলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত দু’‌জন নেতা মঙ্গল পাণ্ডে এবং সুনীল বনশল। তাঁরা একাধিক জেলায় গিয়ে কর্মী–সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এমনকী সাধারণ মানুষের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তারপর দু’‌মাস আগে বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের হোমওয়ার্ক দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেসব কিছুই হয়নি। আর সেই কথা জেপি নড্ডাকে তাঁরা জানাতেই তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। তারপরই তড়িঘড়ি তলব করেন তিন নেতাকে। এদিকে, সোমবারের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাল্টা হিসেবে ডিসেম্বরে কলকাতার হাজরায় সভা করবে তৃণমূল। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ১৩ ডিসেম্বর হাজরা মোড়ে ওই সভায় থাকছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস। উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, রাসবিহারীর তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমার।

 গত ৩ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে শুভেন্দুর পাড়ায় সভা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পাল্টা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেকের তালুকে সভা করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। সেখানে একে অপরকে নাম না করে আক্রমণ শানান তাঁরা। সেখানে শুভেন্দু বলেন, ডিসেম্বরেই ডায়মন্ডহারবারে আবার সভা করবেন। বিজয় উৎসব করবেন। মিষ্টিমুখ করাবেন ডায়মন্ড হারবারবাসীকে। কিন্তু তার কারণ এখন বলবেন না। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাকায় সভা করার কথা ঘোষণা করেছেন বিরোধী দলনেতা। আর তার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে একই জায়গায় সভা করবে বলে ঘোষণা করল তৃণমূল।

 প্রসঙ্গত, হাজরায় সভা করার জন্য প্রথমে প্রশাসনের অনুমতি পাননি শুভেন্দু। এর পর তিনি দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের। গত বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট সেই অনুমতি দিয়েছে। তার পর শুভেন্দু জানান, আগামী ১২ ডিসেম্বর হাজরায় এবং কাঁথিতে ২১ ডিসেম্বর তিনি সভা করবেন। হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা অবশ্য তাঁর রায়ে জানান, হাজরা এবং কাঁথিতে সভা করতে গেলে শব্দবিধি মানতে হবে শুভেন্দুকে