ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পেট্রল পাম্পের শৌচালয় সর্বসাধারণের ব্যবহারযোগ্য নয়—সম্প্রতি এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল কেরল হাই কোর্ট (Toilet In Petrol Pump)। একগুচ্ছ পেট্রল পাম্প মালিকের করা মামলায় আদালত জানিয়ে দিয়েছে, পেট্রল পাম্পের শৌচালয়গুলি শুধুমাত্র তাঁদের গ্রাহকদের ব্যবহারের জন্যই নির্মিত হয়েছে। তাই সরকারি বা পুরসভা প্রশাসন ওই শৌচালয়গুলি সকলের জন্য খুলে দিতে পেট্রল পাম্প মালিকদের উপর কোনওরকম চাপ সৃষ্টি করতে পারে না।
‘পাবলিক টয়লেট’ নয় (Toilet In Petrol Pump)
এই মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি সিএস ডায়াসের একক বেঞ্চে(Toilet In Petrol Pump)। শুনানিতে আদালত স্পষ্ট করে জানায়, পেট্রল পাম্পের পরিকাঠামো তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ একটি বেসরকারি উদ্যোগ। সেখানে মালিকেরা তাঁদের খরচে শৌচালয় তৈরি ও পরিষ্কার রাখেন শুধুমাত্র গ্রাহকদের সুবিধার্থে। তাই সেটিকে ‘পাবলিক টয়লেট’ হিসেবে চিহ্নিত করা আইনসম্মত নয়।আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই শৌচালয়গুলি তৈরির পেছনে কোনও সরকারি অর্থ ব্যয় হয়নি। ফলে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এগুলিকে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য বাধ্য করা সংবিধানবিরোধী। এমনকি, আদালত নির্দেশ দেয় যে, স্থানীয় প্রশাসন বা কেরল সরকার কোনও ভাবেই পেট্রল পাম্প কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে জোর করতে পারবে না।
মামলা করেছিলেন পেট্রল পাম্প মালিকরা (Toilet In Petrol Pump)
প্রসঙ্গত, মামলাটি দায়ের করেছিলেন কেরলের ৩০০টিরও বেশি পেট্রল পাম্প মালিক (Toilet In Petrol Pump)। তাঁদের অভিযোগ ছিল, স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের শৌচালয়গুলিতে ‘Public Toilet’ বা ‘সবার জন্য শৌচাগার’ বলে পোস্টার লাগিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন এবং পাম্প মালিকদের উপর অযথা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। মামলাকারীদের দাবি ছিল, তাঁদের পাম্পে প্রতিদিন হাজারো গ্রাহক আসেন। তাঁদের সুবিধার্থেই শৌচালয় গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের এই একতরফা সিদ্ধান্ত তাঁদের আর্থিক এবং পরিকাঠামোগত চাপ বাড়াচ্ছে। অনেক সময়, অপরিচিত ব্যক্তিরা শৌচালয় ব্যবহারের পর তা অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রেখে যাচ্ছেন, যা পাম্পের পরিবেশ ও পরিষেবাকে ব্যাহত করছে।

আরও পড়ুন: Indigo Flight : এক দিনে তিনটি বিমানে প্রযুক্তিগত সমস্যা, প্রশ্নে বিমান নিরাপত্তা!
স্বস্তির নিঃশ্বাস পাম্প মালিকদের (Toilet In Petrol Pump)
কেরল হাই কোর্টের (kerala high Court) এই অন্তর্বর্তী নির্দেশে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন পেট্রল পাম্প মালিকেরা(Toilet In Petrol Pump)। তাঁদের সংগঠন জানায়, ‘‘এটি আমাদের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের জয়। আমরা কাউকে শৌচালয় ব্যবহারে বাধা দিচ্ছি না, কিন্তু সেটিকে জোর করে ‘সবার’ করে দেওয়া অন্যায়।’

এই বিষয়ে কী নীতি নেওয়া হবে? (Toilet In Petrol Pump)
এই রায়ের পর প্রশ্ন উঠেছে, দেশের অন্যান্য রাজ্যে এই বিষয়ে কী নীতি নেওয়া হবে(Toilet In Petrol Pump)। অনেক রাজ্যেই পেট্রল পাম্পে শৌচালয় না থাকায় সমস্যায় পড়েন পথচারীরা। তবে কেরল হাই কোর্টের এই রায় স্পষ্ট করে দিল, বেসরকারি পরিকাঠামোকে ‘জনসাধারণের সম্পদ’ বলে ধরে নেওয়া যাবে না, যতক্ষণ না তাতে সরকার নিজে বিনিয়োগ করে কিংবা নির্দিষ্টভাবে সেই উদ্দেশ্যে নির্মাণ করে।জনসাধারণের জন্য শৌচালয়ের চাহিদা অবশ্যই রয়েছে, তবে তা পূরণ করতে হলে প্রশাসনকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করতেই হবে—এমনই মত উঠে আসছে সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে।