ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে (Surplus Teacher Transfer) চাকরি হারিয়েছেন বাংলার ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। শেষমেষ শিক্ষকদের দাবি মেনে নিয়ে যোগ্য এবং অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করতে চলেছে এসএসসি৷ আর এই কথা খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন। কিন্তু এই আবহেই এবার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রশাসনিক বদলি স্থগিত করল রাজ্য।
প্রক্রিয়ার নির্দেশিকা প্রত্যাহার (Surplus Teacher Transfer)
দুই বছর আগে ২০২৩ সালে প্রতিটি স্কুলে ছাত্র-শিক্ষকের সংখ্যার অনুপাত সঠিক রাখতে শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে এক বিশেষ ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছিল (Surplus Teacher Transfer)। এবার সেই প্রক্রিয়ার নির্দেশিকাই প্রত্যাহার করে নিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। জানা গিয়েছে এই প্রক্রিয়ায় যাঁরা এতদিন অবধি বদলি হয় এসেছেন, তাঁদের সকলকেই এবার পুরনো কর্মস্থলে ফেরানো হবে।
১২০ জন বদলির বিষয়ে জানতেন না (Surplus Teacher Transfer)
প্রশাসনিক রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে উচ্চপ্রাথমিকে ৪৮৯ জন এবং মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক মিলিয়ে ৪৯০ জনের সারপ্লাস ট্রান্সফারের নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। যার মধ্যে ৬০৫ জনের বদলি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। তার উপর এই বদলির মধ্যে ১২০ জনকে ‘মেডিক্যালি আনফিট’ বিভাগে বদলি করা হয় (Surplus Teacher Transfer)। কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই ১২০ জন বদলির বিষয়ে কিছুই জানতেন না। পরবর্তীকালে তাই এই বিভাগের বদলি বাতিল করা হয়।
সর্বাধিক দুরত্ব ৫০ কিমি পর্যন্ত
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে বদলি নিয়ে আসা শিক্ষকদের উপরও এই নির্দেশ বলবৎ করা হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, রাজ্যের প্রচুর শূন্যপদে নিয়োগের ব্যবস্থা না করে কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বাড়ি থেকে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ কিমি এমনকি ৩০০ কিমি দূরত্ব পর্যন্ত ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, বদলির ক্ষেত্রে সর্বাধিক দুরত্ব ৫০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে।
নতুন করে আইনি জটিলতা চাইছে না
বদলি সংক্রান্ত এই নির্দেশ প্রত্যাহারের অন্যতম কারণ হিসেবে বিকাশ ভবন ব্যাখ্যা করেছে যে, এইমুহুর্তে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে রাজ্য সরকারের উদ্বেগের শেষ নেই। এই আবহে তাই শিক্ষকদের নিয়ে নতুন করে কোনও আইনি জটিলতা চাইছে না রাজ্য সরকার। আর বদলির নির্দেশ স্থগিত হওয়ায় বেশ খুশি বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি।
পরিস্থিতি সামলাতেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত
সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের দাবি, ‘‘বহু দিন ধরে এই বদলির বিরুদ্ধে লড়াই চলছিল, আসলে শিক্ষক-শিক্ষিকদের অনেক দূরে ট্রান্সফার করে দেওয়ায় অসুবিধা হচ্ছিল। অবশেষে সেই সমস্যার জট কাটল।’’ কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন,“সারপ্লাস খুব আপেক্ষিক শব্দ। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক স্কুলেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আসন শূন্য। হয়তো পরিস্থিতি সামলাতেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু এর জন্য আগের বদলি বাতিল হলে তাতে স্কুলগুলির সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।”