ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টের (Transgender Protest) সাম্প্রতিক রায় ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে লন্ডনের রাজপথ। বুধবার দেওয়া এক ঐতিহাসিক রায়ে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দেয়, কেবল জৈবিক ভাবে মেয়ে হিসেবে জন্মানো ব্যক্তিদেরই ‘মহিলা’ বলা যাবে। রূপান্তরিত মহিলারা সেই পরিচয়ের আওতায় পড়বেন না। এই রায়কে ঘিরে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে রূপান্তরিত ও রূপান্তরকামী মানুষের মধ্যে। শনিবার লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়ারে সেই অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ ঘটে হাজার হাজার মানুষের জমায়েতে।
স্লোগানে মুখরিত পার্লামেন্ট (Transgender Protest)
‘জরুরিকালীন প্রতিবাদ’ হিসেবে বর্ণিত এই বিক্ষোভে অংশ নেন ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের (Transgender Protest) বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষজন। তাঁদের অনেকেই রামধনু পতাকা ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সমকামী, রূপান্তরকামী ও তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার দাবিতে সরব হন। তাঁদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পার্লামেন্ট স্কোয়ারের চারপাশ।
বৈষম্য বিরোধী সুরক্ষা (Transgender Protest)
রায় অনুযায়ী, ২০১০ সালের সমতা আইনে যে বৈষম্য বিরোধী সুরক্ষা (Transgender Protest) দেওয়া হয়েছিল, তা এখন থেকে কেবলমাত্র জৈবিক লিঙ্গধারীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, লিঙ্গ পরিবর্তনের শংসাপত্র থাকলেও তা ‘নারী’ বা ‘পুরুষ’ পরিচয়ের সংজ্ঞাকে প্রভাবিত করতে পারবে না। আদালতের বক্তব্য, এই রায়ের ফলে পরিষেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলি যেমন শৌচাগার, হাসপাতালের ওয়ার্ড বা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে পরিষ্কারভাবে জৈবিক লিঙ্গ অনুসারে ব্যবস্থা নিতে পারবে। সরকারের মতে, এতে স্বচ্ছতা বাড়বে এবং জৈবিক মহিলাদের নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত হবে।
রূপান্তরকামীদের বক্তব্য
তবে রূপান্তরকামীদের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ১৯ বছর বয়সি রূপান্তরিত তরুণী সোফি গিব্স বলেন, “আমাদের অধিকার এক ধাক্কায় কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এটা এক ভয়ানক সময়। আমরা ভাবতাম উন্নত সমাজে বাস করছি, কিন্তু এখন সেই সমাজই আমাদের মানুষ হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করছে।”
সামাজিক ও আইনি সুরক্ষা
মানবাধিকার কর্মীদের একাংশের মতে, এই রায়ের ফলে ভবিষ্যতে রূপান্তরিতদের সামাজিক ও আইনি সুরক্ষা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। তারা আশঙ্কা করছেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত নজির হয়ে দাঁড়াবে এবং অন্যান্য দেশের নীতিনির্ধারকদের হাতেও এমন বৈষম্যমূলক রায় দিতে উৎসাহ যোগাবে।
আরও পড়ুন: WB Weather: বৈশাখের শুরুতেই গরমের হুঁশিয়ারি, দক্ষিণবঙ্গে চার-পাঁচ ডিগ্রি বাড়তে পারে তাপমাত্রা!
উল্লেখ্য, ব্রিটেনে বর্তমানে আনুমানিক ১ কোটি ১৬ লক্ষ মানুষ রূপান্তরকামী বা রূপান্তরিত বলে চিহ্নিত হয়েছেন। এ পর্যন্ত ৮,৫০০-র বেশি মানুষ সরকারিভাবে লিঙ্গ পরিবর্তনের শংসাপত্র পেয়েছেন। এই বিতর্কিত রায় স্পষ্ট করে দিল, উন্নত দেশ বললেও ব্রিটেনের সমাজে লিঙ্গ ও পরিচয় নিয়ে আলোচনা এখনও কতটা জটিল এবং বিভাজিত। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, তারা আরও বৃহৎ প্রতিবাদের দিকে এগোবে, কারণ এই লড়াই তাদের অস্তিত্বের, শুধু স্বীকৃতির নয়।