ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলা বহুচর্চিত দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও বিচারপ্রক্রিয়া চলতি সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা হল(Benjamin Netamyahu)। রবিবার জেরুজালেমের আদালতের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা ও বিতর্ক। কারণ, মাত্র দিন কয়েক আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতানিয়াহুর সমর্থনে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন। ফলে আদালতের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক চাপ আছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলেও।
সংবাদ সংস্থা ‘রয়টার্স’-এর সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বিচার প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ রাখার জন্য জাতীয় নিরাপত্তা ও গোপন কূটনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে আবেদন জানান। তিনি আদালতের কাছে দাবি করেন, এমন কিছু সেনা এবং গোয়েন্দা সংক্রান্ত বিষয় রয়েছে, যেগুলির স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এই মুহূর্তে বিচার চালানো উচিত নয়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত চলতি সপ্তাহের জন্য শুনানি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়(Benjamin Netamyahu)।
মোসাদ ও সেনার নথি জমা, আদালতের বিবেচনা (Benjamin Netamyahu)
রয়টার্স জানিয়েছে, আদালতে ইজরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ এবং সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ কিছু গোপন নথি জমা দিয়েছে(Benjamin Netamyahu)। সেই নথিপত্র খতিয়ে দেখে বিচারপতিরা সিদ্ধান্ত নেন যে এই সপ্তাহে সাক্ষ্যগ্রহণ চালানো সম্ভব নয়। এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এল, যখন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া এই তিনটি মামলা—কেস ১০০০, ২০০০ ও ৪০০০—নিয়ে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও মিডিয়া সংস্থার সঙ্গে গোপন সমঝোতা করেছেন এবং ঘুষ গ্রহণ করেছেন।
তিনটি মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ (Benjamin Netamyahu)
কেস ১০০০: হলিউড প্রযোজক আরনন মিলচ্যানের কাছ থেকে প্রায় তিন লক্ষ ডলারের উপহার গ্রহণ করেন নেতানিয়াহু ও তাঁর স্ত্রী(Benjamin Netamyahu)। বিনিময়ে মিলচ্যানকে করছাড় ও মার্কিন ভিসা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কেস ২০০০: দৈনিক ইয়েদিওত আহারনত-এর সম্পাদক আরনন মোজেসের সঙ্গে নেতানিয়াহুর গোপন চুক্তি হয়, যাতে সরকারপন্থী প্রচারের বিনিময়ে প্রতিদ্বন্দ্বী সংবাদমাধ্যমের ক্ষতি করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। কেস ৪০০০: অস্ট্রেলিয়ার ধনকুবের জেমস প্যাকারের কাছ থেকেও ‘উপহার’ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।
ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে নতুন বিতর্ক (Benjamin Netamyahu)
সম্প্রতি আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে নেতানিয়াহুর পক্ষে সওয়াল করে বলেন, “এই মামলা প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক কালোজাদু(Benjamin Netamyahu)। নেতানিয়াহুর মতো মহান নেতার রেহাই পাওয়া উচিত।” এমনকি শনিবারও তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতানিয়াহুর পক্ষে পোস্ট করেন। ফলে আদালতের সিদ্ধান্তের পিছনে কোনও রাজনৈতিক প্রভাব আছে কি না, সেই প্রশ্ন এখন চর্চার কেন্দ্রে।
আরও পড়ুন: Benjamin Netanyahu : দুর্নীতি মামলায় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অব্যাহতির আর্জি খারিজ!
নেতানিয়াহুর আইনজীবীরা আগেও একাধিক বার জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে বিচার স্থগিতের আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে গিয়েছিল। এবার হঠাৎ করে আদালতের এই নমনীয় মনোভাব এবং ট্রাম্পের বক্তব্যে সময়ের মিল বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ইজ়রায়েলের বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা এবং গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। সত্যিই যদি রাজনৈতিক চাপ না থাকে, তাহলে আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপই তা প্রমাণ করবে(Benjamin Netamyahu)।
