ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : মার্চের শুরু থেকেই তাপপ্রবাহের জেরে নাকাল পরিস্থিতি বাংলায়। অসহ্য গরমের হাত থেকে মুক্তি পেতে AC কিনতে রীতিমতো হিড়িক পড়ে গিয়েছে। গরমের তাপ যত বাড়ছে, এয়ার কন্ডিশনারের (এসি) ব্যবহারও ততই বাড়ছে। এতে একদিকে যেমন গরমের স্বস্তি পাচ্ছেন, তেমনই চড়ছে মিটার (AC Bill)। বিদ্যুতের বিল দেওয়ার দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন, কয়েকটা সহজ উপায় ও সতর্কতা অবলম্বন করলেই কমতে পারে এসির বিলের খরচ!
ইনভার্টার এসি ব্যবহার করুন (AC Bill)
এসি কেনার আগে, প্রতিটি ব্র্যান্ডে কী ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে তা জানাটা গুরুত্বপূর্ণ। এতে আপনি সহজেই সঠিক ব্র্যান্ড নির্বাচন করতে পারবেন এবং বিদ্যুৎ খরচও কমাতে পারবেন। ইনভার্টার এসি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দিক থেকে সবচেয়ে কার্যকরী। এর প্রধান সুবিধা হল, ইনভার্টার এসির কম্প্রেসর মোটর নিজে থেকেই চলার গতি পরিবর্তন করতে পারে। এর মধ্যে একটি সেন্সর থাকে, যা ঘরের তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে কম্প্রেসর বন্ধ না করে, মোটরের গতি কমিয়ে দেয়। এইভাবে বিদ্যুৎ খরচ কমে (AC Bill) এবং পরিবেশের জন্যও এটি উপকারী। আরও একটি কার্যকরী কৌশল হলো পিক আওয়ারে (বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা) এসি না চালিয়ে, অফ-পিক আওয়ারে এসি চালানো। এতে বিলের পরিমাণ অনেকটা কমে আসে।
এসি অন করার আগে দরজা-জানলা খুলে রাখুন (AC Bill)
এসি চালানোর আগে কিছু সময়ের জন্য ঘরের সব দরজা-জানলা খুলে দিন এবং পাখা চালিয়ে রাখুন (AC Bill)। এই দুটি কাজ তাপমাত্রা ও ভেন্টিলেশন প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করবে এবং ঘরের ভিতরের অতিরিক্ত গরম বাতাস বাইরে বেরিয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০ মিনিট দরজা-জানলা খুলে রেখে পাখা চালিয়ে রাখলে, এসি চালানোর পরে ঘরটি দ্রুত ঠান্ডা হবে। যদি আপনি এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন, তবে এসি চালিয়ে ঘর ঠান্ডা করতে মাত্র আধ ঘণ্টা বা তারও কম সময় নেবে।

এসি-র সঠিক তাপমাত্রা সেট করুন
এসি চালানোর প্রথম ২০ মিনিটের জন্য তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে কুইক কুল মোডে রাখুন এবং তারপর সেটি ২৪ ডিগ্রিতে সমন্বয় করুন। এটি ইলেকট্রিক বিল কমাতে সাহায্য করবে। ব্যুরো অফ এনার্জি এফিশিয়েন্সি অনুযায়ী, ২৪ ডিগ্রিতে এসি চালানো সবথেকে ভালো, কারণ এটি মানব শরীরের জন্য স্বস্তিদায়ক। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এসি-র তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রিতে রাখা হলে, প্রতি ডিগ্রিতে ৬% বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। তাই ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের পরিবর্তে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এসি চালালে বিদ্যুৎ খরচ কমে যাবে।
এসি চালিয়ে টাইমার সেট করে দিন
বেশিরভাগ এসি মডেলে টাইমার সেট করার সুবিধা রয়েছে, যা নির্দিষ্ট সময়ে এসি বন্ধ করতে সক্ষম। এটি বিদ্যুৎ খরচ কিছুটা কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময় টাইমার সেট করে রাখলে, আপনার এসির কম্প্রেসর নির্দিষ্ট সময় পরে বন্ধ হয়ে যাবে এবং বিদ্যুৎ খরচ কমানো যাবে।
ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ রাখুন
ঘরের অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি থেকে তাপ নির্গত হয়। তাই এসি চালানোর আগে এই সমস্ত ডিভাইস বন্ধ রাখলে, এসি তাড়াতাড়ি ঠান্ডা করবে এবং বিদ্যুৎ খরচ কম হবে।

নিয়মিত ফিল্টার পরিষ্কার করুন
এসি-র ফিল্টারে ধূলিকণা ও ময়লা জমে থাকে, যা এসির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। এসির ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত প্রতি ১০ দিন অন্তর ফিল্টার পরিষ্কার করলে তা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন : 25 March Horoscope: মঙ্গলেই অমঙ্গলের সম্ভাবনা, থাকুন খুব সাবধান!
ঘরে মোটা পর্দা লাগান
যত বেশি তাপমাত্রা বাড়ে, এসি বা কুলিং সিস্টেম ঘর ঠান্ডা করতে তত বেশি সময় নেয়। এতে এসি বেশি চালাতে হয়, যা বিদ্যুৎ খরচ বাড়িয়ে দেয়। ঘরের জানলা ও দরজায় মোটা পর্দা লাগানো হলে বাইরের গরম বাতাস ও সূর্যের আলো কম আসবে, ফলে ঘর দ্রুত ঠান্ডা হবে এবং এসি চালানোর সময় কমে যাবে।
আরও পড়ুন : Horoscope Today: বজরংবলীর কৃপায় ভাগ্য খুলবে কাদের, জানুন রাশিফল!
ঠিক সময়ে এসি সার্ভিসিং
এসি সার্ভিসিং এক বছর অন্তর করাটা সাধারণ নিয়ম, তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে আপনাকে আরও ঘন ঘন সার্ভিসিং করাতে হতে পারে। বিশেষ করে যেসব এলাকাতে ধুলাবালি বেশি, সেখানে দুই থেকে তিন মাস অন্তর এসি সার্ভিসিং করানো উচিত। নিয়মিত সার্ভিসিংয়ের ফলে এসি বেশি কার্যকরী থাকে এবং বিদ্যুৎ খরচও কম হয়। পুরনো এসি ব্যবহার করলে, তার কার্যকারিতা কমে যায় এবং তা বিদ্যুৎ বেশি হতে পারে, তাই খুব পুরনো এসি ব্যবহার করা উচিত নয়।