ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৯০ দিনের ‘পারস্পরিক শুল্ক’ স্থগিতাদেশ শেষ হচ্ছে এই বুধবার। তার আগেই নতুন করে বাণিজ্যচাপে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ(Trump Tariff War)। সোমবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, এশিয়ার প্রধান দুই অর্থনীতি—জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হবে। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি, ভারত-সহ ‘ব্রিক্স’ গোষ্ঠীর দেশগুলির উপরও ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক চাপানো হতে পারে।
এশিয়ার দেশগুলির উপর সরাসরি শুল্ক (Trump Tariff War)
ট্রাম্প (Donald J. Trump) জানিয়েছেন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পাশাপাশি মালয়েশিয়া, মায়ানমার, কাজাখাস্তান এবং ভিয়েতনামকেও শুল্ক-বৃদ্ধি সম্পর্কিত চিঠি পাঠানো হয়েছে(Trump Tariff War)। ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং মোটরগাড়ি যন্ত্রাংশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কথাও জানানো হয়েছে। তবে এই শুল্ক অবিলম্বে কার্যকর না হয়ে ১ অগস্ট থেকে চালু হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক।
ভারতের শুল্ক ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত (Trump Tariff War)
‘ব্রিক্স’ সদস্য হওয়ার ফলে ভারতের উপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হবে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়(Trump Tariff War)। কারণ ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে এখনও কোনও ঐকমত্যে পৌঁছনো যায়নি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, “আমরা বহু দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, ইতিবাচক ফল মিলবে।”

আরও পড়ুন: Operation Sindoor : ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাক সেনাকে সহায়তা করার অভিযোগ উড়িয়ে দিল চিন!
আগের শুল্ক এবং ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ (Trump Tariff War)
গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন দেশের উপর ‘পারস্পরিক শুল্ক’ ঘোষণা করে। ভারতের উপর চাপানো হয় ২৬ শতাংশ শুল্ক। এই শুল্কের আওতায় পড়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (২০%), ভিয়েতনাম (৪৬%), জাপান (২৪%), দক্ষিণ কোরিয়া (২৫%), ব্রিটেন (১০%), তাইল্যান্ড (৩৬%) ও সুইৎজ়ারল্যান্ড (৩১%)। যদিও তখনই ট্রাম্প ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ দেন, যাতে দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করা যায়।
‘ব্রিক্স’ লক্ষ্যবস্তু? (Trump Tariff War)
সোমবার ট্রাম্প তাঁর সামাজিক মাধ্যম পোস্টে বলেন, “যে কোনও দেশ যদি ‘ব্রিক্স’-এর আমেরিকাবিরোধী নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়, তবে তাদের উপর ১০ শতাংশ কর চাপানো হবে(Trump Tariff War)।” যদিও চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলায় তারা এই হুমকির বাইরে থাকছে। ভারতের মতো দেশ, যার সঙ্গে আলোচনা এখনও চলমান, সেই গোষ্ঠীকে চাপ দিতে এই বার্তা বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকেরা।
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ (Trump Tariff War)
বর্তমানে ১৫টি দেশের তালিকায় ১২টিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প(Trump Tariff War)। ১ অগস্ট থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, তার আগেই যেসব দেশ চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারবে, তারা রেহাই পেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চাপ-কৌশল ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি কৌশলের অঙ্গ। তবে ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু দেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। এখন দেখার, শেষ মুহূর্তে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কোনও সমঝোতা আদৌ সম্ভব হয় কি না।