ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দুই দশকের ব্যবধানে প্রথমবার কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন— এমনই চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলো(Trump Visit Pakistan)। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান সফরে যেতে পারেন বলে রিপোর্ট। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর প্রতিবেদনও এই দাবিকে সমর্থন করেছে।
যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে ওয়াশিংটন বা ইসলামাবাদের তরফে কোনও ঘোষণা হয়নি, তবে ওয়াকিবহাল কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, সফরের প্রস্তুতি অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। সফরের পর ট্রাম্প ভারতেও আসতে পারেন, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না পর্যবেক্ষকরা।
ইতিহাসে নজিরবিহীন মুহূর্ত (Trump Visit Pakistan)
২০০৬ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ পাকিস্তান সফর করেছিলেন(Trump Visit Pakistan)। তার পর প্রায় ১৯ বছর কেটে গেছে। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে— বিশেষ করে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, এবং চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির কারণে। এই প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের সফর শুধু প্রতীকী নয়, উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক বার্তাবাহী বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা।
ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে ট্রাম্পের ভূমিকা? (Trump Visit Pakistan)
ট্রাম্প এর আগেও দাবি করেছিলেন, তাঁর হস্তক্ষেপেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হয়(Trump Visit Pakistan)। যদিও নয়াদিল্লি সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। ভারতের মতে, অপারেশন সিঁদুর বা সীমান্তে সামরিক উত্তেজনার সময় ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউসের কোনও মধ্যস্থতা ছিল না।
তবে ইসলামাবাদ উল্টো দাবি করে ট্রাম্পের ‘অসাধারণ কূটনৈতিক বুদ্ধিমত্তা’র প্রশংসা করে তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাবও দেয়। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতি অনুযায়ী, “ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে ট্রাম্প দক্ষতার সঙ্গে যুদ্ধ রুখেছেন। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে বড় সংঘাত এড়ানো সম্ভব হয়েছে।”

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : পশ্চিম এশিয়ায় অশান্তি! ইরানে যেতে ‘ভেবে দেখার’ পরামর্শ ভারতীয় দূতাবাসের
আসিম মুনির-ট্রাম্প বৈঠক (Trump Visit Pakistan)
সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির গোপন সফরে আমেরিকায় গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজ করেন। সেখানেই ট্রাম্প জানান, “মুনিরের মতো একজন নেতাকে সম্মান জানাতে পেরে আমি গর্বিত।” ওই সাক্ষাৎপর্বকেই অনেকেই ভবিষ্যতের সফরের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন।
ভারত সফর কি পাকিস্তানের পরে? (Trump Visit Pakistan)
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, সেপ্টেম্বরের সফরের পরে ট্রাম্প ভারতেও পা রাখতে পারেন। যদি সত্যি হয়, তাহলে এটি হবে ট্রাম্পের আরও একটি আলোচিত কূটনৈতিক অভিযান, যা আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর আন্তর্জাতিক প্রভাবকে ফের একবার তুলে ধরবে। ভারতের অবস্থান যদিও স্পষ্ট— তারা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মানে না, এবং দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে বাইরের কোনও হস্তক্ষেপ চায় না। তাই ট্রাম্প ভারত সফরে এলেও, সম্পর্কের সূক্ষ্মতা বজায় রেখে চালাতে হবে কূটনীতি।

আরও পড়ুন: Russia Ukraine War : ২৪ ঘণ্টায় পাল্টে গেল সুর, মস্কোয় হামলা নয়, বললেন ট্রাম্প!
শুধু সফর নয়, মোড় ঘোরানোর ইঙ্গিত? (Trump Visit Pakistan)
ট্রাম্পের (Donald J. Trump) সম্ভাব্য পাকিস্তান সফর শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে (Trump Visit Pakistan)। আফগানিস্তানের যুদ্ধ-পরবর্তী প্রেক্ষাপট, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC), এবং আমেরিকা-চীন ঠান্ডা যুদ্ধের আবহে এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
বিশ্লেষকরা বলছেন— ট্রাম্পের সফর যদি সত্যিই বাস্তবায়িত হয়, তা হলে উপমহাদেশে কূটনীতির অঙ্ক নতুন করে কষতে হতে পারে ওয়াশিংটন, দিল্লি এবং ইসলামাবাদ— তিন পক্ষকেই।