ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ট্রাম্প হলেন প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি গত পঁচিশ বছরের মধ্যে প্রথম একজন সিরিয়ান নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন (Trump with Terrorist-Turned-President) এবং একসময়ের জিহাদী নেতাকে ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রিয়াধে ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ (Trump with Terrorist-Turned-President)
২০২৫ সালের ১৪ মে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন (Trump with Terrorist-Turned-President)। এই সাক্ষাৎটি মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক পরিসরে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আমন্ত্রণে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আল-শারার অতীত ও বর্তমান (Trump with Terrorist-Turned-President)
আহমেদ আল-শারা, যিনি আগে আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত ছিলেন, একসময় আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি হায়াত তাহরির আল-শাম (HTS) নামক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন, যা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের পর তিনি সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ট্রাম্পের প্রশংসা ও ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
সাক্ষাতের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আল-শারাকে “তরুণ, আকর্ষণীয় এবং দৃঢ়চেতা” ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “তার একটি শক্তিশালী অতীত রয়েছে এবং তিনি সিরিয়াকে স্থিতিশীল করতে সক্ষম হবেন।” ট্রাম্প আরও উল্লেখ করেন যে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, আল-শারার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছেন এবং তিনিও আল-শারার নেতৃত্বে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী।
আরও পড়ুন: India Pakistan Tensions : অক্ষত পাক পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার! নেই তেজস্ক্রিয় বিকিরণের, জানাল আইএইএ
যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন
এই সাক্ষাতের আগে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন, যা মূলত বাশার আল-আসাদের দমনমূলক শাসনের প্রতিক্রিয়ায় আরোপিত হয়েছিল। এই পদক্ষেপটি সিরিয়ার পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সহায়তা আকর্ষণের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
আল-শারার অতীত সন্ত্রাসবাদী সংযোগ এবং HTS-এর নেতৃত্বে থাকা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যদিও তিনি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবুও অনেক বিশ্লেষক তার নেতৃত্বে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান।
আরও পড়ুন: India Pakistan Tensions : কাশ্মীর নিয়ে ফের আলোচনা চাইল পাকিস্তান! ভারতকে আহব্বান পাক প্রধানমন্ত্রীর
সিরিয়ার ভবিষ্যৎ পথচলা
আহমেদ আল-শারা বর্তমানে সিরিয়ার একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন, যার লক্ষ্য একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং জাতীয় নির্বাচন আয়োজন। তিনি একটি জাতীয় সেনাবাহিনী গঠনের পরিকল্পনাও করছেন, যা দেশের বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে একত্রিত করবে।
এই সাক্ষাৎ এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলি মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।