ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২০২০ সালের বিমান দুর্ঘটনার পর পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) ইইউ দেশ এবং ব্রিটেনে চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল (UK clears Pakistani carriers), এরপর পাকিস্তানি পাইলটদের লাইসেন্সিং নিয়ে সমস্যা শুরু হয়েছিল।
পিআইএ-র জন্য খুলে গেল ব্রিটেনের আকাশপথ (UK clears Pakistani carriers)
পাকিস্তানের জাতীয় বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) ফের ব্রিটেনে বিমান চালুর দিকে এক ধাপ এগোল (UK clears Pakistani carriers)। লন্ডন তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। ২০২০ সালের বিমান দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। বুধবার এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ হাই কমিশন জানায়, “বিমান নিরাপত্তায় অগ্রগতির পর ব্রিটেনের এয়ার সেফটি কমিটি পাকিস্তানি এয়ারলাইন্সগুলির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। তবে প্রতিটি এয়ারলাইন্সকে পৃথকভাবে ইউকে সিভিল এভিয়েশন অথরিটির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।”
ইউরোপের পরে এবার ব্রিটেনেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার (UK clears Pakistani carriers)
২০২০ সালের পিআইএ দুর্ঘটনার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেনে পিআইএ-র কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় (UK clears Pakistani carriers)। পরে পাকিস্তানি পাইলটদের লাইসেন্স জালিয়াতির ঘটনা সামনে আসায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৩ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে পিআইএ ফের ইউরোপে উড়ান চালাতে শুরু করে। কিন্তু ব্রিটেন এখনো পর্যন্ত তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দিচ্ছিল না। ব্রিটেনের সর্বশেষ ঘোষণায় জানানো হয়েছে, “এখন থেকে সব পাকিস্তানি এয়ারলাইন্স ব্রিটেনে উড়ান চালানোর জন্য আবেদন করতে পারবে।”
আন্তর্জাতিক মান রক্ষায় পাকিস্তানের অগ্রগতি
পাকিস্তানে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার জেন মেরিয়ট বলেন, “পাকিস্তান ও ব্রিটেনের বিমান বিশেষজ্ঞদের যৌথ প্রচেষ্টার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। তারা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করেছেন।” ব্রিটিশ হাই কমিশনের মতে, ব্রিটেনের এয়ার সেফটি লিস্ট থেকে কোনও দেশ বা এয়ারলাইন্সকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্বাধীন বিমান নিরাপত্তা পর্যালোচনার মাধ্যমে নেওয়া হয়। হাই কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কমিটি মনে করেছে, ২০২১ সালের পর থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই স্বাধীন ও প্রযুক্তিনির্ভর পর্যালোচনার ভিত্তিতে পাকিস্তান ও তার বিমান সংস্থাগুলিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।”
পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের সম্ভাবনা
জেন মেরিয়ট আরও বলেন, “যদিও ফের উড়ান চালু করতে কিছুটা সময় লাগবে, তবে সব ব্যবস্থা হয়ে গেলে আমি নিজেও পাকিস্তানি এয়ারলাইন্সে চড়ে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে চাই।” বর্তমানে ব্রিটেনে ১৬ লক্ষেরও বেশি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মানুষ বসবাস করেন এবং হাজার হাজার ব্রিটিশ নাগরিক থাকেন পাকিস্তানে। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের পরিবারগুলির জন্য যোগাযোগ সহজ করবে। ব্রিটেন বর্তমানে পাকিস্তানের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে ৪.৭ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়। বিমান চলাচল সহজ হলে এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।
আরও পড়ুন: Death Penalty: ‘অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই!’ নিমিশার মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে সওয়াল নিহতের ভাইয়ের
পিআইএ বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া চলমান
এই ঘটনা এমন সময়ে ঘটল যখন পাকিস্তান সরকার পিআইএ-কে বেসরকারিকরণ করার চেষ্টা করছে। এর আগের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ কোনও সংস্থা পিআইএ-র মালিকানা নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখায়নি। বর্তমানে সরকার চারটি সংস্থাকে শর্টলিস্ট করেছে, যারা বিমান সংস্থাটি কেনার জন্য বিবেচনায় রয়েছে।