ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অতীতে রাজারাজড়াদের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি(UNESCO Recognized Tourist Spot) এরকম অনেক ভারতীয় মন্দির তাদের প্রাচীনত্ব এবং অভিনব শিল্পকলার কারণে বর্তমানে তারা নাম লিখিয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায়। একটা সময় যেখানে দেবতার আরধনার উদ্দেশ্যে ভিড় জমাতেন ভক্তরা, সেখানে এখন ইতিহাসের টানে জড়ো হয় পর্যটকের দল। অতীতে সেখানে পুরোহিত রাজা এবং পুণ্যার্থী ছাড়া আর কেউ উপস্থিত থাকার অনুমতি পেতেন না। এখন অবাধ যাতায়াত বিভিন্ন জায়গার মানুষের। ঘুরতে যাবেন নাকি ইতিহাস সমৃদ্ধ এই জায়গাগুলোতে? জেনে কোথায় কোথায় রয়েছে এসব জায়গা। ঘুরে আসুন ভারতের ঐতিহ্যবাহী এই জায়গা গুলো থেকে।
ইলোরার কৈলাস মন্দির, মহারাষ্ট্র (UNESCO Recognized Tourist Spot)
ইলোরার ৩৪টি শিলাখণ্ডিত গুহার মধ্যে, কৈলাস মন্দির (১৬ নং গুহা) রাষ্ট্রকূট স্থাপত্যের এক দারুণ বিস্ময়(UNESCO Recognized Tourist Spot)। একটি মাত্র শিলা খোদাই করে এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল। একশিলা নির্মাণের এক অসাধারণ উদাহরণ এই মন্দিরে আজও পুজো দেওয়ার প্রচলন রয়েছে।

ওড়িশার কোনার্কের সূর্য মন্দির (UNESCO Recognized Tourist Spot)
ওড়িশার কোনার্কের সূর্যমন্দির নির্মিত হয় ত্রয়োদশ শতকে। রাজা প্রথম নরসিংহদেবের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি এই মন্দির কলিঙ্গ স্থাপত্যের একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন(UNESCO Recognized Tourist Spot)। মন্দির কমপ্লেক্সটি একটি বিশাল রথের আকৃতিতে (সূক্ষ্ম কারুকার্যময় পাথরের চাকা, স্তম্ভ ও দেওয়াল সহ) তৈরি করা হয়েছে। তাতে খোদাই রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি এবং দৈনন্দিন জীবনের জটিলতার নানা চিত্র। মন্দিরে সূর্যদেবতার যে বিশাল বিগ্রহ ছিল তা এখন নেই।

পট্টড়কাল স্মারকসমূহ, কর্ণাটক
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান পট্টড়কাল হলো, অষ্টম শতাব্দীতে চালুক্য রাজবংশের সময় নির্মিত একগুচ্ছ মন্দির(UNESCO Recognized Tourist Spot)। বিরূপাক্ষ এবং মল্লিকার্জুন মন্দিরের মতো এই মন্দিরগুলিতে দ্রাবিড় এবং নাগর শৈলীর এক নিখুঁত মিশ্রণ দেখা যায়।

মহাল চোল মন্দিরসমূহ, তামিলনাড়ু
বৃহদীশ্বর মন্দির, গঙ্গাইকোণ্ডা চোলপুরম এবং ঐরাবতেশ্বর মন্দির হলো মহান চোল মন্দির (Great Living Chola Temples)-এর একটি অংশ। মহাবলিপুরমের মতো এই মন্দিরগুলিও তাদের বিশাল আকার এবং জটিল ভাস্কর্যের জন্য পরিচিত।

খাজুরাহো স্মারকসমূহ, মধ্যপ্রদেশ
দশম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে চন্দেল রাজবংশ কর্তৃক নির্মিত এই মন্দিরগুলি হিন্দু নাগররীতি স্থাপত্যের প্রতীক এবং কামোদ্দীপক ভাস্কর্যের জন্য প্রসিদ্ধ। দ্বাদশ শতকে ২০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খাজুরাহোতে ছিল ৮৫টি মন্দির। তার মধ্যে ২২টি মন্দিরের অস্থিত্ব আজও রয়ে গেছে। মন্দিরগুলির মধ্যে সবথেকে বিখ্যাত হলো, কাণ্ডারিয়া মহাদেব মন্দির, লক্ষ্মণ মন্দির এবং বিশ্বনাথ মন্দির। সমস্ত মন্দিরের মধ্যে, মাতঙ্গেশ্বর মন্দিরে আজও পুজো দেওয়ার চল রয়েছে।

আরও পড়ুন:Mankundu Station: চেন টেনে রোজ থামাতেন ট্রেন, গড়ে উঠল গোটা একটা রেলস্টেশন
মহাবলিপুরম স্মারকসমূহ
পল্লব রাজবংশ (খ্রিস্টিয় সপ্তম-অষ্টম শতাব্দী)-এর আমলে নির্মিত মহাবলিপুরমের পাথরে খোদাই করা মন্দিরগুলি তাদের জটিল এবং নিখুঁত ভাস্কর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানকার উল্লেখযোগ্য নিদর্শনগুলির মধ্যে রয়েছে শিব এবং বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত মন্দিরগুলি।

হাম্পি স্মারকসমূহ, কর্ণাটক
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানী হাম্পিতে রয়েছে অসংখ্য মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। সেগুলির মধ্যে প্রধান আকর্ষণ ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত বিরূপাক্ষ মন্দির এবং বিট্ঠল মন্দির। এ ছাড়া হাম্পির রহস্যময় সঙ্গীত স্তম্ভগুলির আকর্ষণও নেহাত কম নয়।
