ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনুসারে পাকিস্তানে মার্কিন বিদেশি সাহায্য সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে (US Aid to Pakistan)। মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে একটি সংবাদ সংস্থা।
এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তানে চলমান বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন উন্নয়ন প্রকল্প তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে (US Aid to Pakistan)। এর মধ্যে অন্যতম “অ্যাম্বাসেডরস ফান্ড ফর কালচারাল প্রিজারভেশন” (AFCP), যা পাকিস্তানের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি।
সংস্কৃতি সংরক্ষণ প্রকল্পে ধাক্কা (US Aid to Pakistan)
মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে (US Aid to Pakistan), AFCP প্রকল্পটি ঐতিহাসিক ভবন, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, জাদুঘরের সংগ্রহশালা এবং স্থানীয় ভাষা ও কারুশিল্প সংরক্ষণের জন্য সহায়তা প্রদান করে।
মার্কিন কনস্যুলেটের এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পর পাকিস্তানের জন্য বিদেশি সাহায্য পুনর্মূল্যায়নের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Guantanamo Bay: গুয়ান্তানামো বে-তে অভিবাসী আটক কেন্দ্র গড়ার নির্দেশ ট্রাম্পের
জ্বালানি খাতে বড় ধাক্কা (US Aid to Pakistan)
এই সিদ্ধান্তের ফলে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে (US Aid to Pakistan)। এগুলি হলো, পাওয়ার সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্টিভিটি, পাকিস্তান প্রাইভেট সেক্টর এনার্জি অ্যাক্টিভিটি, এনার্জি সেক্টর অ্যাডভাইসরি সার্ভিসেস প্রজেক্ট, ক্লিন এনার্জি লোন পোর্টফোলিও গ্যারান্টি প্রোগ্রাম এবং পাকিস্তান ক্লাইমেট ফাইন্যান্সিং অ্যাক্টিভিটি।
অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রকল্পেও আঘাত
এছাড়াও, অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত চারটি প্রকল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সোশ্যাল প্রোটেকশন অ্যাক্টিভিটি প্রকল্পটি ২০২৫ সাল পর্যন্ত চলার কথা ছিল, কিন্তু সেটিও এখন বন্ধ হওয়ার ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
স্বাস্থ্য, কৃষি ও শিক্ষাক্ষেত্রেও প্রভাব
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে শুধু জ্বালানি ও অর্থনীতি নয়, স্বাস্থ্য, কৃষি, জীবিকা, খাদ্য নিরাপত্তা, বন্যা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং শিক্ষাক্ষেত্রের অনেক প্রকল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং শাসনব্যবস্থা সংক্রান্ত অর্থ সাহায্যও স্থগিত করা হয়েছে।
অনেক প্রকল্প চিরতরে বন্ধ হতে পারে
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এই প্রকল্পগুলোর কিছু চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে অথবা বাজেট ব্যাপকভাবে কমিয়ে ফেলা হতে পারে। তবে, এই প্রকল্পগুলোর মোট আর্থিক মূল্য কত এবং বর্তমানে পাকিস্তানে মার্কিন বার্ষিক সাহায্যের পরিমাণ কত, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তান সরকারের প্রতিক্রিয়া নেই
এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। সরকারি কর্মকর্তারা এখনো নিশ্চিত করেননি যে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ফলে পাকিস্তানে কী পরিমাণ সাহায্য বন্ধ হয়েছে এবং এর কী প্রভাব পড়বে।
আরও পড়ুন: Viral Video Washington Crash: ওয়াশিংটনে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে যাত্রীবাহী বিমান, ভাইরাল ভিডিয়ো!
মার্কিন বিদেশ দফতরের বক্তব্য
গত সপ্তাহে মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও সমস্ত মার্কিন বিদেশি সাহায্য পুনর্মূল্যায়নের জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতি ডলার ব্যয়ের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর আমাদের দিতে হবে। সেগুলি হল এটি কি আমেরিকাকে নিরাপদ করছে? এটি কি আমেরিকাকে শক্তিশালী করছে? এটি কি আমেরিকাকে আরও সমৃদ্ধ করছে?”
চাপে পাকিস্তান
ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তানে গুরুত্বপূর্ণ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষত জ্বালানি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোতে বড় ধাক্কা লেগেছে। এখন দেখার বিষয়, পাকিস্তান সরকার কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করে এবং মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সাহায্য পুনরুদ্ধার করতে পারে কি না।