ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : ঘুষকাণ্ডে আরও চাপে ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানি (Gautam Adani)। এবার আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্তে সরাসরি ভারত সরকারের সাহায্য় চাইল মার্কিন সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC)।এসইসি নিউ ইয়র্ক জেলা আদালতকে জানিয়েছে যে গৌতম (Gautam Adani) ও সাগর আদানির কাছে অভিযোগপত্র পাঠানোর চেষ্টা চলছে এবং এর জন্য ভারতের আইন ও বিচার মন্ত্রকের সহায়তা চাইছে তারা।
আদানির বিরুদ্ধে কী অভিযোগ? (Gautam Adani)
বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পেতে অন্ধ্রপ্রদেশ সহ ভারতের কয়েকটি রাজ্যের সরকারি আধিকারিক, জনপ্রতিনিধিদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিল আদানি গ্রিন এনার্জিস (Gautam Adani)। আদানি গোষ্ঠী ২০০০ কোটি টাকার বেশি ঘুষ দিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। আমেরিকার বাজার থেকে তোলা টাকাতেই ঘুষ দেওয়া হয়েছিল এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে সেই তথ্য গোপন রাখা হয়েছিল বলে জানা যায়। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, আদানি নাকি ভারতীয় আধিকারিকদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল। ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৬.৫ কোটির ডলারেরও বেশি ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে সৌরশক্তি সরবরাহের লাভজনক চুক্তি পেয়েছিল আদানি। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়। যদিও এই সব অভিযোগই অস্বীকার করে আদানি গোষ্ঠী।
আদানির দাবি (Gautam Adani)
ভারতের সরকারি আধিকারিকদের ২৬.৫ কোটি ডলারের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে আদানি এবং আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের বিরুদ্ধে।তবে আদানি গোষ্ঠী নিজেদের ফাইলিংয়ে দাবি করেছিল, ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গৌতম আদানির (Gautam Adani) নাম নেই। সেই অভিযোগে অভিযুক্ত আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের এক কর্তা এবং এক কানাডিয়ান বিনিয়োগকারী।
আরও পড়ুন : দিল্লিতে পদপিষ্টের ঘটনার দায় কার? আদালত চত্বরে প্রশ্নের মুখে রেল কর্তৃপক্ষ!
তদন্তে মোদি সরকারের সাহায্য চাইল আমেরিকা
ঘুষকাণ্ডে তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকার ন্যায়বিচার দফতর এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ফৌজদারি এবং দেওয়ানি আইনের আওতায় মামলা করে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফরেন কোরাপ্ট প্র্যাক্টিসেস আ্যাক্টে মামলা হয়েছে। এছাড়াও প্রতারণার মামলাও হয়েছে। এর পাশাপাশি শেয়ার এবং ঋণপত্রে টাকা তোলার ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগেও দেওয়ানি মামলা হয়েছে আদানি গ্রিনের বিরুদ্ধে। সেই নিয়ে আমেরিকার আদালত গৌতম, সাগর এবং তাঁদের সংস্থার আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।বুধবার নিউ ইয়র্ক আদালতে সেই নিয়ে ফের শুনানি চলাকালীন SEC জানায়, আদানিরা ভারতের নাগরিক। ভারতেই ব্যবসা। তাই গোটা বিষয়টিতে ভারতের আইনমন্ত্রকের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। আদানিদের সেই মর্মে নোটিস দিতে বলা হয়েছে বলেও জানিয়েছে SEC।
আরও পড়ুন : মহাকুম্ভ নিয়ে মিথ্যা প্রচার বিশ্বাসের সঙ্গে খেলা, দাবি যোগী আদিত্যনাথের
মহুয়ার পোস্ট
মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি (Gautam Adani) এবং তার ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ জালিয়াতির তদন্তে ভারতের সহায়তা চেয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সাম্প্রতিক রিপোর্টে। এই আবহে এবার মোদীকে তোপ দেগে সোশ্যল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। প্রশান্ত ভূষণের একটি পোস্ট শেয়ার করে মহুয়া লেখেন, ‘এখন চাকা রাস্তায় নেমেছে- মার্কিন এসইসি চায় ভারত সরকার মোদীজির বিএফএফ আদানির কাছে অভিযোগপত্র পেশ করুক। তিনি কি এই ‘ব্যক্তিগত মামলা’য় পদক্ষেপ করবেন? জাতি জানতে চায়!’
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই ৬ জন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য নবনিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ বিষয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন। যাতে বলা হয়েছিল, প্রাক্তন মার্কিন বিচার মন্ত্রক একটি সন্দেহজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যেখানে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে একটি ঘুষদানের অভিযোগ ছিল। যার ফলে আমেরিকার ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তারপরেই গত নভেম্বরে ওঠা ঘুষের অভিযোগ নিয়ে নড়েচড়ে বসে নয়া ট্রাম্প সরকার।