ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্ব রাজনীতিতে ফের উত্তেজনার পারদ চড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে চলা দীর্ঘস্থায়ী শুল্কযুদ্ধকে কেন্দ্র করে (US China Tariff War)। চিনকে কড়া বার্তা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump)। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সমঝোতার পথ চিনকেই খুঁজতে হবে। আমেরিকা কোনওভাবেই মাথা নোয়াবে না।
বল এখন চিনের কোর্টে (US China Tariff War)
হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট (Karoline Leavitt) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য তুলে ধরেন (US China Tariff War)। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়েছেন—‘বল এখন চিনের কোর্টে।’ আমরাই চিনের সঙ্গে সমঝোতার জন্য দায়িত্ব নেব—এটা ভাবার কোনও কারণ নেই। বরং চিনের উচিত আলোচনার টেবিলে আসা।” ক্যারোলিনের কথায়, আমেরিকা কোনও দেশের কাছেই মাথা নোয়ায় না। চিনের মতো বড় দেশ হলেও তার জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
আকর্ষণীয় মার্কিন বাজার (US China Tariff War)
ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, বিশ্বজুড়ে মার্কিন বাজারই সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং শক্তিশালী। ক্যারোলিন বলেন, “আমাদের যা আছে, তা বিশ্বের প্রত্যেক দেশেরই কাম্য। সবাই চায় মার্কিন অর্থনীতি থেকে সুবিধা তুলতে। কিন্তু সেটা একতরফা হবে না। আমরাও নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে জানি।”

আরও পড়ুন: US China Tariff War : চিনা পোশাক পরায় বিতর্কে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট
কড়া বাণিজ্য নীতি (US China Tariff War)
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া বাণিজ্য নীতির জেরে আমেরিকা-চিন সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে পড়েছে। বছরের শুরুতেই চিনা পণ্যের উপর ২০ শতাংশ আমদানি শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু সম্পর্ক ক্রমেই তলানিতে গিয়ে ঠেকায় পরবর্তী পর্যায়ে সেই শুল্ক ৩৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়।

পাল্টা জবাব (US China Tariff War)
চিন পাল্টা জবাব দিলে ট্রাম্প শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করেন (US China Tariff War)। পরপর সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত চিনা পণ্যের উপর মোট শুল্ক দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে তা বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়। এর পাল্টা হিসেবে চিন ঘোষণা করেছে, মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে।

আরও পড়ুন: Balochistan Blast : বালোচিস্তানে ফের রক্তাক্ত হামলা! বোমা বিস্ফোরণে মৃত ৩ পুলিশকর্মী, আহত অন্তত ১৬
একতরফা সিদ্ধান্ত (US China Tariff War)
চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানায়, “আমেরিকার এই একতরফা সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অতিরিক্ত শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হোক।” চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান কড়া ভাষায় বলেন, “চিন কখনওই বসে থাকবে না। আমাদের নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় আমরা প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।”
উত্তেজনার প্রভাব বিশ্ব বাণিজ্যে (US China Tariff War)
এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের মন্তব্য একপ্রকার হুঁশিয়ারি বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দুই বৃহৎ অর্থনীতির দেশের মধ্যে এই উত্তেজনা বিশ্ব বাণিজ্যে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্ব বাজারে এর প্রভাব পড়ছে ইতিমধ্যেই—বিশেষ করে প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে।সামনের দিনে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার সুযোগ তৈরি হয় কি না, সেটাই এখন দেখার। আপাতত বল সত্যিই চিনের কোর্টেই।