ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্ব অর্থনীতির মানচিত্রে আবারও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে চলতে থাকা শুল্কযুদ্ধ (US-China Tariff War)। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) চিনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তাঁর এই ঘোষণায় শুধু চিনই নয়, বাকি দেশগুলির উদ্দেশেও একটি স্পষ্ট বার্তা রয়েছে—‘‘প্রতিশোধ নিলে শাস্তি, না নিলে পুরস্কার।’’
১২৫ শতাংশ হারে শুল্ক (US-China Tariff War)
চিনের সঙ্গে চলা শুল্কসংক্রান্ত (US-China Tariff War) বিবাদে ট্রাম্পের অবস্থান আগেও কঠোর ছিল, তবে এবারে তা আরও এক ধাপ এগিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে, চিনা পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের জবাবে চিনও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে দেরি করেনি। বেজিং জানিয়ে দিয়েছে, তারা মার্কিন পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে, ফলে মোট শুল্কহার দাঁড়াবে ৮৪ শতাংশ। এর আগে চিন ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল মার্কিন পণ্যের উপর।
কেউই আপসে ইচ্ছুক নয় (US-China Tariff War)
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, চিন ও আমেরিকা কেউই আপসের পথে হাঁটতে ইচ্ছুক নয় (US-China Tariff War)। তবে চিনের পক্ষ থেকে কিছুটা নমনীয়তা প্রদর্শন করা হয়েছে—জিনপিং (Xi Jinping) সরকার জানিয়েছে, ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নিয়ে সমঝোতার রাস্তা এখনও খোলা আছে। এর মানে, ভবিষ্যতে আলোচনা ও বোঝাপড়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: Panama Canal :পানামা খালে চিনা প্রভাবের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিল আমেরিকা!
প্রতিশোধ না নিলে পুরস্কার (US-China Tariff War)
ট্রাম্পের বার্তায় যে ৯০ দিনের শুল্কছাড়ের কথা বলা হয়েছে, তা মূলত অন্যান্য দেশগুলির জন্য (US-China Tariff War)। এই ছাড়ের মাধ্যমে তিনি অন্যান্য দেশগুলিকে সময় দিচ্ছেন চিন্তার ও সিদ্ধান্তের জন্য—তারা যদি প্রতিশোধের পথ বেছে না নেয়, তবে তাদের পুরস্কৃত করা হবে। কিন্তু যারা মার্কিন পণ্যের উপর বাড়তি শুল্ক চাপাতে যাবে, তাদের জন্য রয়েছে কঠোর পরিণতির সম্ভাবনা।

শক্তির কূটনীতি (US-China Tariff War)
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের নজর বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির দিকেও রয়েছে (US-China Tariff War)। কারণ, এই দেশগুলি ইতিমধ্যেই সয়াবিন, গাড়ি-সহ বেশ কিছু মার্কিন পণ্যের উপর বাড়তি শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। ট্রাম্পের এই ‘শক্তির কূটনীতি’ আসলে বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতি পুনর্গঠনের চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।

শুল্কযুদ্ধের প্রভাব (US-China Tariff War)
এই শুল্কযুদ্ধের প্রভাব পড়ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে, শেয়ার বাজারে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগে। বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ বাড়ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে। তবে একই সঙ্গে এটি একটি কৌশলগত খেলা, যেখানে শক্তি, বুদ্ধি ও কূটনীতি একসঙ্গে চলছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের বার্তা শুধু চিন নয়, গোটা বিশ্বকে একটি কঠোর বার্তা দিয়েছে। ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কতটা মুক্ত, কতটা সুরক্ষিত ও কতটা ন্যায্য হবে—তা নির্ভর করবে এই শুল্কযুদ্ধের পরবর্তী ধাপগুলির উপর।