ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চিন ও আমেরিকার মধ্যকার উত্তেজনাপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্কের মাঝেও রফতানিতে অবিশ্বাস্য সাফল্য দেখিয়েছে বেজিং (US China Tarrif War)। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে চিনের রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১২.৪ শতাংশ, যা অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্লুমবার্গের পূর্বাভাসকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। তারা অনুমান করেছিল এই বৃদ্ধি হবে মাত্র ৪.৬ শতাংশ।
সর্বাধিক পণ্য রফতানি আমেরিকাতেই(US China Tarrif War)
বেজিংয়ের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ কাস্টমস জানিয়েছে, মার্চে চিন সর্বাধিক পণ্য রফতানি করেছে আমেরিকাতে (US China Tarrif War)। মোট রফতানির পরিমাণ ছিল প্রায় ১১৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় নয় লক্ষ কোটি টাকা।তবে এই ইতিবাচক ছবির মধ্যেও রয়েছে আশঙ্কার মেঘ। কারণ, চলমান শুল্কযুদ্ধ দু’দেশের মধ্যে ভবিষ্যতের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে।
বিশ্ব বাণিজ্যে অস্থিরতা (US China Tarrif War)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, আমেরিকায় চিনা পণ্যের উপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে (US China Tarrif War)। এর জবাবে চিনও পিছু হটেনি—তারা ঘোষণা করেছে, আমেরিকা থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। এই পরস্পরের উপর শুল্ক চাপানোর প্রতিযোগিতাকে ঘিরে বিশ্ব বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা।

আরও পড়ুন: Sheikh Hasina : পুলিশের গুলিতে নয়, বিক্ষোভকারীদের ইটে প্রাণ হারান আবু সাইদ, দাবি শেখ হাসিনার
কিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় (US China Tarrif War)
তবে চাপে পড়ে কিছুটা নরম হয়েছে আমেরিকা। মোবাইল ও কম্পিউটার পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক থেকে ছাড় দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। এর পিছনে মূল কারণ, অ্যাপলসহ একাধিক মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানির উৎপাদন ঘাঁটি মূলত চিনে। এই পণ্যে উচ্চ শুল্ক বসানো হলে আমেরিকান বাজারেই ওই পণ্যের দাম বাড়ত, যার ফল ভুগতে হতো দেশীয় ক্রেতাদের।বিশ্লেষকদের মতে, চিনের মার্চ মাসের এই রফতানির সাফল্য মূলত শুল্ক বৃদ্ধি কার্যকর হওয়ার আগের সময়কালের চিত্র। অর্থাৎ, এই চমক দীর্ঘস্থায়ী না-ও হতে পারে।

নেতিবাচক প্রভাব (US China Tarrif War)
চিনা অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝিয়েই ঝাং জানিয়েছেন, “এই তথ্য প্রমাণ করে যে, শুল্ক আরোপের আগে চিনা রফতানিতে গতি ছিল (US China Tarrif War)। তবে এপ্রিল থেকে এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেবে।”উল্লেখ্য, গত বছর চিনের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিও বেশ কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। বিশেষ করে সম্পত্তি খাতে ব্যাপক ধস নামে। সরকার গৃহঋণ নীতিতে শিথিলতা আনলেও কাঙ্খিত সুফল মেলেনি। এই অবস্থায় আমেরিকার শুল্ক আরোপ অর্থনীতিকে নতুন করে চাপে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন চিনা অর্থনীতিবিদেরা।
বিশ্ব বাজারে দুই পরাশক্তি (US China Tarrif War)c
বিশ্ব বাজারে দুই পরাশক্তির এই শুল্কবিরোধ ইতিমধ্যেই প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার মতো অঞ্চল, যারা আমদানি-নির্ভর অর্থনীতির উপর দাঁড়িয়ে, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ।চিনের বর্তমান রফতানি সাফল্য বিশ্ব অর্থনীতিতে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেও, শুল্কের বেড়াজালে আগামী দিনে তাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কতটা টিকে থাকতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অর্থনৈতিক মহলে।সবার চোখ এখন রয়েছে এপ্রিল ও পরবর্তী মাসগুলির রফতানি পরিসংখ্যানের দিকে। কারণ তাতেই ধরা পড়বে, এই সাফল্য আদৌ টেকসই কি না।