ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসন (US Government) বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা (US F-1 Visa revoke) বাতিলের কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। অভিযোগ, কয়েকশো শিক্ষার্থী হামাস (Hamas) বা অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সমর্থনে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন কিংবা সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের মতামত প্রকাশ করেছেন। এ কারণে তাঁদের ভিসা (US F-1 Visa) বাতিল করা হয়েছে।
৩০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল (US F-1 Visa Revoke)
মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও (Marco Rubio) জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে কারা থাকবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার প্রশাসনের রয়েছে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) সাহায্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের প্রতি সমর্থন দেখিয়েছেন। এর ফলে অন্তত তিনশো শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল (US F-1 Visa Revoke) করা হয়েছে।শুধু শিক্ষার্থীরাই নন, স্বল্পমেয়াদী ব্যবসায়িক ও পর্যটন ভিসাধারীদেরও অনেকে এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়েছেন।
কঠোর নির্দেশ প্রশাসনের (US F-1 Visa Revoke)
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব শিক্ষার্থীকে ইমেল পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ভিসার (US F-1 Visa Revoke) মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইমেলে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, “আপনার ভিসা দেওয়ার পরে আমাদের হাতে নতুন কিছু তথ্য এসেছে, যার ভিত্তিতে আপনার ভিসার মেয়াদ অমুক তারিখে শেষ হয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে আপনি এ দেশ ছেড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। আমাদের তরফ থেকে আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও এ কথা জানানো হচ্ছে।” এছাড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র না ছাড়লে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে মার্কিন ভিসার জন্য আবেদন করাও অসম্ভব হয়ে পড়বে।
ভারতীয় শিক্ষার্থীর কতজন? (US F-1 Visa Revoke)
এই সিদ্ধান্তের ফলে ঠিক কতজন ভারতীয় শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জানা গেছে, নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ছাত্রী রঞ্জনী শ্রীনিবাসনের স্টুডেন্ট ভিসা ইতোমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। হামাসের সমর্থনে আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মেনে তিনি স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে গেছেন।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক
মার্কিন প্রশাসনের এই কঠোর সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বলছেন, শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে, এবং শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা অপরাধ হতে পারে না। মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছে, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকার কর্মীরা।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
প্রশাসনের তরফ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এই অভিযান চলমান থাকবে এবং ভবিষ্যতেও এমন শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সামাজিক মাধ্যমে করা পোস্ট বিশ্লেষণ করা হচ্ছে, এবং নতুন ভিসা আবেদনকারীদের অতীত কার্যকলাপ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন এক বাস্তবতা তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য এটি সতর্ক সংকেত, কারণ প্রশাসন এখন আরও কঠোর নজরদারির আওতায় এনেছে ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড।