ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে নতুন মোড় নিতে চলেছে ইরান ও আমেরিকার সম্পর্ক (US-Iran Nuclear Talks)। দীর্ঘদিনের উত্তেজনা, হুমকি ও কূটনৈতিক দূরত্ব কাটিয়ে অবশেষে সরাসরি আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছে দুই দেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের (Masoud Pezeshkian) সরকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে রাজি হয়েছে। ওয়াশিংটন এবং তেহরানের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী শনিবার এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ইরান ও আমেরিকার সম্পর্ক (US-Iran Nuclear Talks)
এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক মহলে বিস্ময়ের সঞ্চার করেছে (US-Iran Nuclear Talks)। ২০১৮ সালে ট্রাম্প (Donald Trump) প্রশাসন একতরফাভাবে ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসে। এর পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক চরমে পৌঁছায়। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা হুমকি এবং কূটনৈতিক দূরত্ব—এই আবহে হঠাৎ আলোচনায় সম্মতির বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ট্রাম্পের দাবি, ইরান এখন আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে প্রস্তুত এবং সম্ভাব্য একটি নতুন চুক্তির পথে অগ্রসর হচ্ছে।
আলচনায় বসছে ইরান (US-Iran Nuclear Talks)
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচিও (Seyed Abbas Araghchi) আলোচনায় বসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন (US-Iran Nuclear Talks)। তিনি বলেন, “আমরা আলোচনায় বসতে চলেছি। এটি আমাদের কাছে একটি সুযোগ এবং একই সঙ্গে একটি পরীক্ষা।” এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, ইরান হয়তো কূটনৈতিকভাবে কিছুটা নমনীয়তা দেখাতে চাইছে।

আরও পড়ুন: Oil Price Hike : ক্রুড অয়েলের দাম কমলেও কেন কমছে না বাজারে তেলের দাম?
কৌশলগত পদক্ষেপ? (US-Iran Nuclear Talks)
তবে এই নমনীয়তা (US-Iran Nuclear Talks) কি কেবল চাপে পড়ে এসেছে, নাকি এটি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ? বিশ্লেষকদের মতে, ইরান বর্তমানে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে ব্যাপক অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনার টেবিলে ফেরা তাদের জন্য আত্মরক্ষার একটি উপায় হতে পারে। অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনেরও রাজনৈতিক লাভের দিক রয়েছে। ২০২4 সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এটি একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে তুলে ধরা যেতে পারে।

আরও পড়ুন: Google Tax : ট্রাম্পকে খুশি করতে “গুগল কর” প্রত্যাহার ভারতের! কারা কী সুবিধা পাচ্ছে?
ইজরায়েলের ভূমিকা (US-Iran Nuclear Talks)
এই আলোচনার পটভূমিতে ইজরায়েলের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য (US-Iran Nuclear Talks)। সোমবার হোয়াইট হাউসে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পরই ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে বৈঠকের ঘোষণা দেন। এটি ইঙ্গিত করে, এই আলোচনার পেছনে একটি বৃহত্তর কৌশলগত পরিকল্পনা রয়েছে—যার মধ্যে ইজরায়েল এবং মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিও গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি (US-Iran Nuclear Talks)
তবে আলোচনা সফল না হলে তার ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ট্রাম্প নিজেই। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, দুই পক্ষই এখনও নিজেদের অবস্থান থেকে পুরোপুরি সরে আসেনি, বরং একপ্রকার “চুক্তির মাধ্যমে লাভ না হলে সংঘাতের পথেই ফেরা হবে”—এই বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। ইরান-আমেরিকা আলোচনার এই সম্ভাব্য বৈঠক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি বড় ধাপ হতে পারে। এটি যদি সফল হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পথে বড় অগ্রগতি হবে। আর যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে ফের উত্তেজনার আগুনে ঘি পড়তে পারে। আগামী শনিবারের বৈঠক তাই শুধু দুই দেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।