ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চলমান উত্তেজনার মধ্যেই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় বসেছে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র (US Iran Nuclear Talks)। শনিবার ওমানে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার বৈঠকের পর দু’পক্ষই ‘গঠনমূলক ও ইতিবাচক’ আলোচনা হয়েছে বলে জানালেও, উত্তেজনার আঁচ একটুও কমছে না। বরং সেই আবহেই আরও একবার কড়া হুঁশিয়ারি শোনালেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। জানিয়ে দিলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করলে, সামরিক পদক্ষেপ নিতে একটুও দ্বিধা করবে না আমেরিকা।
ইরান মার্কিন আলোচনা (US Iran Nuclear Talks)
ওমানে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ (Steve Witkoff) এবং ইরানি প্রতিনিধিদলের মধ্যে আলোচনার পরে ট্রাম্প বলেন, “আমরা জানি ইরান কী করছে(US Iran Nuclear Talks)। তারা যদি সত্যিই পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে এগোয়, তাহলে তার জবাব সামরিকভাবে দেওয়া হবে। আমরা এই বিষয়ে একেবারে কঠোর।” ট্রাম্পের দাবি, তেহরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।তবে ইরানের দাবি, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চিকিৎসা গবেষণার মতো বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনে সীমাবদ্ধ। তারা বারবার পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সন্দেহ কমছে না।
পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি(US Iran Nuclear Talks)
২০১৫ সালে ছয় পরাশক্তির সঙ্গে ইরান যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সই করেছিল, তাতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ ছিল (US Iran Nuclear Talks)। কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমেরিকা সেই চুক্তি থেকে সরে আসে। এরপর থেকেই ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে।

ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা(US Iran Nuclear Talks)
২০২৪ সালের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা আইএইএ জানায়, ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে—যা অস্ত্র তৈরির মাত্রার কাছাকাছি (US Iran Nuclear Talks)। এরপর থেকেই পশ্চিমা শক্তিগুলির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পক্ষে মত দেয়। তেহরান যদিও দাবি করেছে, এসব পদক্ষেপ তাদের আত্মরক্ষার অধিকার খর্ব করার চেষ্টা।

দ্বিতীয় দফার আলোচনা(US Iran Nuclear Talks)
বিশ্লেষকদের মতে, তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা হলেও, পারস্পরিক অবিশ্বাস এবং রাজনৈতিক চাপের কারণে সমাধানে পৌঁছনো সহজ হবে না। আমেরিকা চায়, ইরান পরমাণু অস্ত্রের কাছাকাছি না পৌঁছয়। অন্যদিকে, ইরান চায় তাদের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক।আগামী সপ্তাহে রোমে দ্বিতীয় দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। যদিও এখনই কোনো স্থায়ী চুক্তির সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা।এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ফের হুঁশিয়ারি শুধু আলোচনার পরিবেশকেই জটিল করছে না, বরং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার শঙ্কাও বাড়িয়ে তুলছে।