ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আসন্ন পরমাণু চুক্তি আলোচনা ঘিরে পশ্চিম এশিয়ায় নতুন করে উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে (US-Iran Nuclear Talks) । শনিবার আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও তার ঠিক আগেই মার্কিন সামরিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতোভাবে বেড়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার উপসাগরীয় অঞ্চলে পৌঁছেছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন। মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (U.S. Central Command) এক্সে এক পোস্টে এই খবর প্রকাশ করার পর থেকেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
মোতায়েন মার্কিন রণতরী (US-Iran Nuclear Talks)
ইতিমধ্যেই ইয়েমেনে সক্রিয় ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের দমনে গত বছর থেকে ওই অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে আরেকটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি ট্রুম্যান (US-Iran Nuclear Talks)। এবার সেই অঞ্চলে ইউএসএস কার্ল ভিনসনের মোতায়েনকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠছে, এটি নিছক রুটিন অভিযানের অংশ, না কি ইরানের উপর কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করার জন্য এই পদক্ষেপ? যদিও সেন্টিকম জানিয়েছে, এটি হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযানেরই একটি অংশ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) সাম্প্রতিক বিবৃতি সেই ব্যাখ্যাকে ঘিরে সন্দেহ তৈরি করেছে।
ট্রাম্পের মন্তব্য (US-Iran Nuclear Talks)
ট্রাম্প সাফ জানিয়েছেন (US-Iran Nuclear Talks), “পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হলে, আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবে না।” তার এই বক্তব্যের পর ইউএসএস কার্ল ভিনসনের মোতায়েনকে অনেকেই আলোচনার আগে তেহরানের উপর একপ্রকার চাপ তৈরির কৌশল বলেই মনে করছেন।
আরও পড়ুন: US-China Tariff War: চিন-আমেরিকা শুল্ক যুদ্ধ অব্যাহত! ফের মার্কিন পন্যে শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা ড্রাগনের

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতামত
গত ১৫ মার্চ থেকেই হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আক্রমণের গতি বাড়িয়েছে আমেরিকা। তবে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, হুথি বিদ্রোহীদের দমনে এত বড়সড় সামরিক শক্তি—যেমন এপথ-৩৫ স্টেল্থ যুদ্ধবিমান ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী প্রযুক্তিসহ ইউএসএস কার্ল ভিনসনের মোতায়েন—প্রয়োজন ছিল না। এই পদক্ষেপ বরং ইরানকে একটি কড়া বার্তা দেওয়ার কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Putin’s Shadow Fleets : নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে জ্বালানি রফতানির গোপন কৌশল দেখাচ্ছে রাশিয়ার ‘ছায়া নৌবহর

সামরিক চাপ প্রয়োগের কৌশল
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকা এই মুহূর্তে দ্বৈত লক্ষ্য পূরণে সচেষ্ট—একদিকে হুথি বিদ্রোহীদের প্রতিহত করা, অন্যদিকে ইরানকে পরমাণু চুক্তি আলোচনায় নমনীয় হতে বাধ্য করা। এই সামরিক চাপ প্রয়োগের কৌশল নিছক কূটনৈতিক কৌশলমাত্র নয়, বরং এর পিছনে রয়েছে পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখার গভীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
ভূ-কৌশলগত প্রতিযোগিতা
এই পরিস্থিতিতে শনিবারের আলোচনা কতটা সফল হবে, তা এখন সময়ই বলবে। তবে এতটা সামরিক চাপ এবং হুমকির আবহে ইরান আলোচনায় কতটা নমনীয় অবস্থান নেয়, সেটাই এখন আন্তর্জাতিক কূটনীতির অন্যতম প্রধান প্রশ্ন। একবিংশ শতকের ভূ-কৌশলগত প্রতিযোগিতার এই সময়ে, একটি চুক্তির ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারে সমগ্র পশ্চিম এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও বিশ্বশান্তির পথচলাকে।