ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘর্ষবিরতির ঘটনায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করল হোয়াইট হাউস (US On India Pakistan Tensions)। একে ‘শান্তির জয়’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে মার্কিন প্রশাসন ট্রাম্পকে আখ্যা দিল ‘Peacemaker’ বা শান্তির দূত হিসেবে। হোয়াইট হাউস আশাবাদী, এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনার পরিবেশ গড়ে উঠবে। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, “আমরা এই সংঘর্ষবিরতিকে স্বাগত জানাই। আমাদের প্রেসিডেন্ট শান্তির পক্ষেই কাজ করেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি সংলাপই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা সেই পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করেছি এবং এখন শান্তি উদ্যাপন করছি।” মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র টমি পিগট বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা সংলাপ চাই। ট্রাম্প শান্তির বার্তা বহন করেন (US On India Pakistan Tensions)।”
সংঘর্ষ ও যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপট (US On India Pakistan Tensions)
উল্লেখযোগ্য যে, ৬ মে পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভারত-পাক সীমান্ত (US On India Pakistan Tensions)। ওই হামলার জবাবে ভারত মধ্যরাতে চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’, যেখানে পাকিস্তানের মাটিতে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয় বলে দাবি ভারতীয় সেনার। পাল্টা জবাব দিতে সীমান্তে গোলাবর্ষণ শুরু করে পাকিস্তান। শুরু হয় টানা সংঘর্ষ। ভারতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশিরভাগ আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে বলেও জানানো হয়। অবশেষে ১০ মে রাতে দুই দেশের ডিজিএমও (Director Generals of Military Operations) পর্যায়ে হটলাইনে কথা হয় এবং দুই দেশ সম্মত হয় সংঘর্ষবিরতিতে। সেনা সূত্র বলছে, এই যুদ্ধবিরতি রবিবার পর্যন্ত বহাল থাকতে পারে এবং সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে উভয় পক্ষই সচেষ্ট (US On India Pakistan Tensions)।
কূটনৈতিক স্তরে ট্রাম্পের অবস্থান (US On India Pakistan Tensions)
এই সংঘর্ষবিরতির আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald J. Trump) বলেছিলেন, “ভারত ও পাকিস্তান শান্তির পথে হাঁটছে, এবং তাতে আমাদের (আমেরিকার) ভূমিকা রয়েছে (US On India Pakistan Tensions)।” তিনি কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার আগ্রহও প্রকাশ করেন, যদিও ভারত সরকার একাধিকবার জানিয়ে দিয়েছে, কাশ্মীর একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সেখানে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চলবে না।

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া (US On India Pakistan Tensions)
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও শান্তির পক্ষে বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানান, “আমরা ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনা করতে চাই, দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব।” দুই দেশের ডিজিএমওর মধ্যে আবারও হটলাইনে আলোচনা হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে দু’দেশই সংঘর্ষ প্রশমনের বিষয়ে আন্তরিক।

আরও পড়ুন: S Jaishankar : পহেলগাঁও কান্ডের নিন্দা করায় কাবুলকে ধন্যবাদ জানালেন জয়শঙ্কর !
আমেরিকার কৌশলগত অবস্থান (US On India Pakistan Tensions)
বিশ্লেষকদের মতে, এই শান্তির পথে ফিরতে আন্তর্জাতিক কূটনীতির একটি বড় ভূমিকা রয়েছে (US On India Pakistan Tensions)। আমেরিকা নিজস্ব কৌশলগত অবস্থান থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চায়। ট্রাম্প প্রশাসনের এই অবস্থান, যদিও কিছু ক্ষেত্রে বিতর্কিত, কিন্তু সংঘর্ষ থামাতে কার্যকর হয়েছে বলেই অনেকের অভিমত।ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এই মুহূর্তে যুদ্ধের পর ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। সংঘর্ষবিরতির এই মুহূর্তকে আরও সুদৃঢ় করতে হলে দরকার দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক সদিচ্ছা। ট্রাম্পের মধ্যস্থতা আপাতত একটা বিরতিতে পৌঁছেছে ঠিকই, তবে তা কতটা স্থায়ী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয় (US On India Pakistan Tensions)।