ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা আমেরিকা। পশ্চিমে ক্যালিফর্নিয়া থেকে শুরু করে পূর্বে নিউ ইয়র্ক, দক্ষিণে টেক্সাস পর্যন্ত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত(US Protest)। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টেক্সাস প্রদেশেও নামানো হয়েছে ন্যাশনাল গার্ড, এমনকি লস অ্যাঞ্জেলেসে সাময়িকভাবে মোতায়েন করা হচ্ছে মেরিনবাহিনীও। গত কয়েক দিন ধরে ক্যালিফর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েছে প্রশাসন। ট্রাম্প (Donald J. Trump) সরকারের কঠোর অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিক্ষোভ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে শহরের স্পর্শকাতর অঞ্চলে রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করতে বাধ্য হয়েছেন মেয়র কারেন বাস।
টেক্সাসে মোতায়েন সেনা, পুলিশের সঙ্গে যৌথ তৎপরতা (US Protest)
সেই উত্তাল পরিস্থিতির আঁচ পৌঁছেছে টেক্সাসেও। আগামী সপ্তাহে স্যান অ্যান্টোনিও এবং ডালাস-সহ দক্ষিণ টেক্সাসের একাধিক শহরে বিক্ষোভের পরিকল্পনা থাকায়, আগেভাগেই ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট(US Protest)। মঙ্গলবার গভীর রাতে সামাজিক মাধ্যমে অ্যাবট জানান, “শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ আইনসঙ্গত। কিন্তু সহিংসতা বা সম্পত্তির ক্ষতি বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হবে।” যদিও কত সংখ্যক সেনা মোতায়েন করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি অ্যাবট। তবে জানা গিয়েছে, সেনা ও পুলিশ যৌথভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা নেবে।
‘নো কিংস’ কর্মসূচি ঘিরে টেনশন(US Protest)
শনিবার স্যান অ্যান্টোনিও শহরে ‘নো কিংস’ নামক একটি কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের বিরুদ্ধে সরব হবেন কর্মীরা(US Protest)। পাশাপাশি, ডালাস-সহ আরও কয়েকটি শহরে ICE (Immigration and Customs Enforcement)-এর বিরুদ্ধেও বিক্ষোভের সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, প্রশাসন যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। কোনও সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা যাতে না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতেই প্রদেশজুড়ে সেনা-পুলিশ তৎপরতা জোরদার করা হচ্ছে।

অন্যান্য শহরেও উত্তেজনা(US Protest)
লস অ্যাঞ্জেলেসের পাশাপাশি বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, সিয়াটেল, ডেনভার, আটলান্টা এবং সান ফ্রান্সিসকো-তেও(US Protest)। কিছু জায়গায় লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। প্রশাসন মনে করছে, একাধিক বিক্ষোভ ‘অর্গানাইজড’ বা সংগঠিত ভাবে ঘটছে, এবং তার পেছনে কিছু রাজনৈতিক বা নাগরিক গোষ্ঠী সক্রিয়।

আরও পড়ুন: COVID Test : প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগে বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষা, সতর্কতা জারি কেন্দ্রের
কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা(US Protest)
হোয়াইট হাউস এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত রাখার বার্তা দিলেও, ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতিতে বদল আনার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। বরং অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করার কথাই উঠে এসেছে সরকারি মহলে। এর ফলে বিক্ষোভ আরও জোরদার হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে আমেরিকায় যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, তা শুধু কোনও একটি শহরের ক্ষোভ নয়, বরং সমগ্র অভিবাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের জমে থাকা অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ। টেক্সাসে সেনা মোতায়েন ও কার্ফুর মতো সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রশাসন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে বটে, তবে প্রতিবাদে যে গতি এসেছে, তা সহজে থামার নয় বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।