ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার উপর আরোপিত দীর্ঘমেয়াদি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সরকারি নির্দেশে সই করেছেন(US Syria Relation)। গৃহযুদ্ধে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যত স্বীকৃতি দিয়ে সিরিয়ার প্রশাসনিক ও আর্থ-সামাজিক খাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাল ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন অর্থ দফতর এক বিবৃতিতে জানায়, “সিরিয়ার পুনর্গঠন, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং সামাজিক কাঠামো পুনর্বিন্যাসের কাজে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো।”
রিয়াধে আলোচনায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আশ্বাস (US Syria Relation)
এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধে গত মে মাসে ট্রাম্প (Donald J. Trump) ও সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান আহমেদ আল-শরার মধ্যে হওয়া বৈঠক(US Syria Relation)। সেখানেই প্রথমে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করল হোয়াইট হাউস।
আসাদের পতন ও নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ (US Syria Relation)
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরেই বিদ্রোহী সুন্নি গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম (HTS)’ এবং তাদের মিত্র বাহিনী ‘জইশ আল-ইজ্জা’ সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস দখল করে আসাদ সরকারের পতন ঘটায়(US Syria Relation)। আসাদ ও তার পরিবার পালিয়ে আশ্রয় নেন রাশিয়ায়।এই বিদ্রোহী বাহিনীগুলিকে দীর্ঘ সময় ধরে সমর্থন করে এসেছে নেটো সদস্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের সরকার। যুদ্ধ শেষে HTS নেতৃত্বেই সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, যার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে আসেন প্রাক্তন আল কায়দা নেতা আহমেদ আল-শরা।

জিহাদিদের সেনায় অন্তর্ভুক্তির বিতর্ক (US Syria Relation)
নতুন সরকার গঠনের পর সিরিয়ায় ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’ নামে একটি সশস্ত্র রাজনৈতিক মঞ্চ গঠিত হয়, যেখানে কুর্দ এবং অন্যান্য বিরোধী গোষ্ঠীগুলিও অংশ নেয়(US Syria Relation)। এই সংগঠনের সামরিক কমান্ডার মাজলুম আবদি ও তুরস্কের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যাতে বিদেশি জিহাদিদের নবগঠিত সিরিয়া সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব ছিল। প্রায় চার হাজার বিদেশি জিহাদি HTS-এর হয়ে গৃহযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। তাদের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিতে সায় দেন ট্রাম্পও। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দেশে-বিদেশে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।

আরও পড়ুন: Blackout Bomb : চিনের নতুন ‘ব্ল্যাকআউট বম্ব’! নিঃশব্দে অচল করে দিতে পারে গোটা শহর
মানবাধিকার সংগঠনগুলির উদ্বেগ (US Syria Relation)
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এই সিদ্ধান্তকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে(US Syria Relation)। তাদের মতে, সুন্নি জিহাদিদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলে সিরিয়ার সংখ্যালঘু শিয়া, আলাওই ও দ্রুজ সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের সম্ভাবনা বাড়বে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর এক মুখপাত্র বলেন, “আন্তর্জাতিক জিহাদিদের রাষ্ট্রীয় সেনায় স্থান দেওয়া শুধু চরমপন্থাকে প্রতিষ্ঠা দেবে না, বরং ভবিষ্যতে সিরিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলবে।”
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ সিরিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণ করবে। একদিকে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দিলেও, জিহাদিদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও চরমপন্থার পুনরুত্থানের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।