ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখলে সেই দেশের রপ্তানি পণ্যের উপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে — এমনই বিস্ফোরক প্রস্তাব উঠে এল মার্কিন কংগ্রেসে (US Tariff On India)। রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম-এর আনা ‘Sanctioning Russia Act, 2025’ বিলের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার ট্রাম্প সরাসরি জানান, তিনি এই বিলের নীতিগত ভিত্তিকে সমর্থন করছেন। তার ফলে ভারত-সহ একাধিক রাশিয়া-নির্ভর দেশের অর্থনীতিতে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরাসরি নিশানায় ভারত ও চিন (US Tariff On India)
বিলটিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যে কোনও দেশ যদি মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বজায় রাখে, তবে সেই দেশের পণ্য আমদানির উপর ৫০০% শুল্ক বসানো হবে (US Tariff On India)। সেনেটর গ্রাহাম বলেন, “যদি আপনি রাশিয়া থেকে পণ্য কিনে থাকেন, তা হলে আমেরিকায় আসা আপনার পণ্যের উপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “রাশিয়া থেকে ভারত ও চিন প্রায় ৭০ শতাংশ তেল আমদানি করে। এইভাবেই পুতিনের যুদ্ধযন্ত্র সচল রাখা হচ্ছে।”এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, বিলের মূল লক্ষ্য চিন ও ভারত — যারা এখনও ইউক্রেন যুদ্ধের পরেও রাশিয়া থেকে ব্যাপক তেল আমদানি করছে।
ভারতের রাশিয়া নির্ভরতা বাড়ছেই (US Tariff On India)
মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপনের সময় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাসে ভারত দৈনিক ১৯.৬ লক্ষ ব্যারেল তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করেছিল (US Tariff On India)। জুনে সেই সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ২০ লক্ষ ব্যারেলেরও বেশি, যা ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে একটি রেকর্ড। ভারতের পক্ষে এই আমদানি রাশিয়ার তুলনায় কম মূল্যে জ্বালানি সংগ্রহের কৌশল হলেও, আমেরিকার দৃষ্টিতে এটি রুশ যুদ্ধকে আর্থিক ভাবে পুষ্ট করার সমতুল।
রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখলে সেই দেশের রপ্তানি পণ্যের উপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে — এমনই বিস্ফোরক প্রস্তাব উঠে এল মার্কিন কংগ্রেসে (US Tariff On India)।

আরও পড়ুন: US Syria Relation : সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ট্রাম্পের!
কূটনৈতিক টানাপড়েনের সম্ভাবনা (US Tariff On India)
ঘটনাচক্রে, আমেরিকা ও ভারত বর্তমানে একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে (US Tariff On India)। আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে সেই চুক্তির রূপরেখা তৈরি করতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে ট্রাম্প (Donald J. Trump) প্রশাসন। এই প্রেক্ষাপটে ৫০০% শুল্ক আরোপের হুমকি শুধু চাপ তৈরির কৌশল নয়, বরং ভবিষ্যতে মার্কিন-বিশ্ব বাণিজ্যনীতিতে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

বিরোধী ডেমোক্র্যাটদেরও সায় (US Tariff On India)
বিলে শুধু রিপাবলিকানদেরই নয়, বিরোধী ডেমোক্র্যাটদেরও সমর্থন মিলেছে (US Tariff On India)। ডেমোক্র্যাট সেনেটর রিচার্ড ব্লুমেন্থাল এই বিলের অন্যতম সহ-প্রস্তাবক। তাঁর কথায়, “ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণ থামাতে হলে কড়া আর্থিক ব্যবস্থা ছাড়া উপায় নেই।”গ্রাহাম দাবি করেছেন, ইতিমধ্যেই ১০০ সদস্য বিশিষ্ট সেনেটে ৮৪ জন এই বিলকে সমর্থন জানিয়েছেন, যার ফলে বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে চাপ বাড়াতে আমেরিকার নতুন কৌশল এখন ভারতের অর্থনীতি ও কূটনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট — “পুতিনকে জ্বালানি দিলে, তার খেসারত দিতে হবে।” এখন দেখার, নয়াদিল্লি কীভাবে এই চাপ সামলায়।