ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) সম্প্রতি ‘ব্রিক্স’ জোটকে উদ্দেশ করে একটি শুল্ক-হুমকি ছুঁড়ে দিয়েছেন (US Trade Deal)। জানিয়েছেন, ব্রিক্স সদস্য রাষ্ট্রগুলির কেউ আমেরিকাবিরোধী নীতি গ্রহণ করলে, তাদের উপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর চাপানো হবে। এই মন্তব্যের পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দেয়, বিশেষত ভারত, চিন, রাশিয়ার মতো শক্তিধর দেশের শুল্কনীতিতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা ঘিরে।
স্বস্তির খবর দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন (US Trade Deal)
তবে এই অবস্থায় কিছুটা স্বস্তির খবর দিয়েছে আমেরিকার প্রশাসনিক মহল (US Trade Deal)। মার্কিন সংবাদ সংস্থা ‘রয়টার্স’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, এখনই ব্রিক্সের সদস্যদের উপর অতিরিক্ত কর বসানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা কিছু নীতিগত সীমারেখা নির্ধারণ করছি। কোনও দেশ যদি সেই সীমা অতিক্রম করে আমেরিকাবিরোধী অবস্থান নেয়, তখনই বিষয়টি বিবেচনার মধ্যে আসবে।”
আমেরিকাকে লক্ষ্য করে যৌথ বিবৃতি (US Trade Deal)
গত রবিবার ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ব্রিক্স সম্মেলন(US Trade Deal)। সেখানে বক্তৃতা দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ অন্যান্য নেতারা। সম্মেলনের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “যে কোনও ধরনের নির্বিচার শুল্ক বৃদ্ধি কিংবা বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা বিশ্ববাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং অনিশ্চয়তা তৈরি করে।” বিবৃতিতে কোনও দেশের নাম সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও, আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ মনে করছে এই মন্তব্য আমেরিকাকে লক্ষ্য করেই করা।
এরপরই ট্রাম্প নিজের এক সমাজমাধ্যম পোস্টে স্পষ্ট করে লেখেন, “ব্রিক্স-এর সঙ্গে যুক্ত এবং আমেরিকাবিরোধী নীতিতে বিশ্বাসী যে কোনও দেশকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর দিতে হবে। ব্যতিক্রম হবে না।”

১৪টি দেশকে শুল্ক-চিঠি (US Trade Deal)
এই বার্তার সঙ্গে সঙ্গেই জল্পনা শুরু হয় – তবে কি আমেরিকা ব্রিক্স জোটকে অর্থনৈতিক চাপে ফেলতে চাইছে? এই জোটে বর্তমানে সদস্য দেশ হিসেবে রয়েছে ভারত, চিন, রাশিয়া, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা (US Trade Deal)। এছাড়া নতুন করে ইরান, ইন্দোনেশিয়া, ইথিওপিয়া, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও যোগ দিয়েছে এই জোটে।
এই আবহে সোমবার ট্রাম্প প্রশাসন ১৪টি দেশকে শুল্ক-চিঠি পাঠায়। এর মধ্যে রয়েছে ব্রিক্স-এর দুই সদস্য — দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইন্দোনেশিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার ক্ষেত্রে ৩২ শতাংশ শুল্কের কথা বলা হয়েছে। তবে এই দুটি দেশ আগেই ট্রাম্প ঘোষিত শুল্কনীতির আওতায় ছিল। নতুন করে কোনও বড় ঘোষণা হয়নি(US Trade Deal)।

রাজনৈতিক কৌশল (US Trade Deal)
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই মন্তব্যগুলি মূলত রাজনৈতিক কৌশলের অংশ(US Trade Deal)। নির্বাচনের মুখে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে নিজের জনভিত্তিকে আরও মজবুত করতে চাইছেন তিনি। তবে এখনই ভারত, চিন কিংবা রাশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার ঝুঁকি নিতে চান না ট্রাম্প প্রশাসন।
সুতরাং, আপাতত শুল্ক হুমকিতে অস্বস্তি তৈরি হলেও, বাস্তবে এখনই বড়সড় কোনও অর্থনৈতিক আঘাত আসছে না বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। তবুও, ট্রাম্পের মতো অনিশ্চয়তায় ভরা নেতৃত্বের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের দিক নজরে রাখা ছাড়া উপায় নেই(US Trade Deal)।