ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নবাব আলিবর্দী খাঁর (Watch-Towers About To Collapse) নির্মিত ওয়াচ-টাওয়ারগুলি (Watch-tower) একসময় ছিল বাংলার প্রতিরক্ষার অঙ্গ। সেগুলির আজ ভগ্নপ্রায় দশা। বহু বছর ধরে অযত্ন আর অবহেলায় জীর্ণ হয়ে পড়েছে একসময়ের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা কাঠামো। বিলুপ্তির পথে অতীতের প্রহরী। অবিলম্বে সরকারের কাছে ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্নগুলি রক্ষার আর্জি জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দারা (Watch-Towers About To Collapse)।
ভগ্নপ্রায় নবাব আলিবর্দীর ‘ওয়াচ-টাওয়ার’গুলি (Watch-Towers About To Collapse)
একসময় বাংলা (Bangal), বিহার (Bihar) ও উড়িষ্যার (Orissa) শক্তিশালী নবাব ছিলেন আলিবর্দী খাঁ (Watch-Towers About To Collapse)। তিনি শুধু একজন কুশলী শাসকই ছিলেন না, ছিলেন দূরদর্শী সামরিক পরিকল্পনাকারীও। বর্গী আক্রমণের রক্তাক্ত দিনগুলিতে যখন বাংলার মাটিতে আগুন জ্বলছিল, তখন তিনি প্রতিরোধের কৌশল হিসেবে রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াচ-টাওয়ার নির্মাণ করেন (Watch-Towers About To Collapse)।
প্রতিরক্ষার অঙ্গ ছিল ওয়াচ টাওয়ার (Watch-Towers About To Collapse)
পূর্ব বর্ধমানের তালিত (East Burdwan), খণ্ডঘোষের মাধপুর, রায়নার উচিৎপুর (Raina), বাঁকুড়ার সোনামুখি (Sonamukhi of Bankura) থেকে শুরু করে বিষ্ণুপুর, বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা এই ওয়াচ-টাওয়ারগুলিই একসময় বাংলার প্রতিরক্ষার অঙ্গ ছিল (Watch-Towers About To Collapse)।
স্থানীয় বাসিন্দাদের গর্ব ওয়াচ টাওয়ারগুলি (Watchtowers Are The Pride Of Local Residents)
ইতিহাসের এই অনন্য নিদর্শনগুলি (These Unique Monuments Of History) আজ ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বহু বছর ধরে অযত্ন আর অবহেলায় জীর্ণ হয়ে পড়েছে একসময়ের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা কাঠামো। স্থানীয় বাসিন্দারা এখনও গর্ব করেন (Local Residents Are Still Proud) এই সব ইট-কাঠের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে। একসময় এগুলি ছিল বাংলার স্বাধীন অস্তিত্বের প্রহরী। সংরক্ষণের অভাবে এই সব ঐতিহাসিক স্থাপনা হারিয়ে যেতে বসেছে ধীরে ধীরে।
আলিবর্দীর শাসন আমলের সময়কাল (Period Of Alivardi’s Rule)
আলিবর্দীর শাসনামলের প্রথম এগারো বছর কেটেছে একের পর এক বিদ্রোহ দমনে। মারাঠা বর্গীদের লাগাতার আক্রমণে বাংলা হয়ে উঠেছিল এক বিধ্বস্ত জনপদ। সেই সময়, তিনি রাজ্যের সেই সব এলাকাগুলোতে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণের নির্দেশ দেন, যেখান থেকে শত্রুর গতিবিধি নজরে রাখা যায় এবং দ্রুত প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব। ১৭৫১ সালে মারাঠাদের সঙ্গে শান্তিচুক্তির পর তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলার পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। কৃষকদের উৎসাহিত করা, জনপদ পুনর্নির্মাণ, শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির মতো নানান উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেন।
সরকারের কাছে স্মৃতিচিহ্নগুলি রক্ষার আর্জি (Petition To Gov To Protect Monuments)
স্বাধীনতা-উত্তর ভারত নানা ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে, কিন্তু আলিবর্দী এই গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কাঠামোগুলি অবহেলিতই রয়ে গেছে। এই ওয়াচ-টাওয়ারগুলি কেবল ইট-পাথরের স্তূপ নয়, বরং বাংলায় বর্গী হানা প্রতিরোধের এক জীবন্ত ইতিহাস (Living History)।সরকারি উদ্যোগ না নিলে অচিরেই হারিয়ে যাবে এই অতীতের সাক্ষী। অবিলম্বে সরকারের কাছে ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্নগুলি রক্ষার আর্জি জানিয়েছেন বাসিন্দারা (Petition To Gov To Protect Monuments)।
আরও পড়ুন: BGBS 2025: বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ‘উল্লেখযোগ্য সাফল্য’! প্রায়
স্থাপত্য নিদর্শন সংরক্ষণের দায়িত্ব কার? (Who Is Responsible For Preservation Of Architectural Monuments?)
এই স্থাপত্য নিদর্শন সংরক্ষণের দায়িত্ব কে নেবে (Who Will Take Responsibility) ? প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ? নাকি স্থানীয় প্রশাসন ? একদিন যেগুলো ছিল বাংলার রক্ষাকবচ, সেগুলো কি কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে ? নাকি শেষ মুহূর্তে এগিয়ে আসবে সংরক্ষণের হাত ? দ্রুত বয়ে যাচ্ছে সময়, ধ্বংসসীমার কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে আলীবর্দীর দূরদর্শিতার সাক্ষী ওয়াচ-টাওয়ারগুলি (The Watch-Towers Standing On The Edge Of Destruction)। এখনই পদক্ষেপ না নিলে হয়তো আর কিছুদিন পর শুধুই ইতিহাসের পাতায় খুঁজতে হবে বাংলার প্রতিরক্ষা দুর্গের গল্প!