ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: জয়েন্ট এনট্রান্স বোর্ডের(WBJEE)মেধাতালিকা প্রকাশের আগেই বাতিল করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নতুন করে মেধা তালিকা তৈরির নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দর। ওবিসি সংক্রান্ত পুরনো বিধি মেনেই প্রকাশ করতে হবে মেধাতালিকা। নতুন ওবিসি তালিকা মেনে মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না।
১৫ দিনের মধ্যেই নতুন মেধা তালিকা প্রকাশ (WBJEE)
২০১০ সালের আগে ইস্যু হওয়া ওবিসি শংসাপত্রের ভিত্তিতে অর্থাৎ ৬৬টি ওবিসি জনজাতির তালিকার ভিত্তিতেই তৈরি করতে হবে নতুন মেধা তালিকা। পুরনো বিধি মেনে ওবিসি পড়ুয়াদের জন্য ৭ শতাংশ আসন সংরক্ষণই করতে হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে(WBJEE) আদালতের এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশ কার্যকরের ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে হলফনামা দিতে হবে বোর্ডের সিনিয়র স্পেশ্যাল সেক্রেটারি পদমর্যাদার কোনও আধিকারিককে। এবং আদালতের এই রায় রাজ্যের মুখ্য সচিবকে জানাতে হবে। অর্থাৎ ২০১০ সালের আগের ওবিসি শংসাপত্রকে মান্যতা দিয়েই ১৫ দিনের মধ্যেই মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে বলে জানিয়ে দিলেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ।
পুরনো ওবিসি তালিকায় ফল প্রকাশে রাজি নয় রাজ্য(WBJEE)
পুরনো ওবিসি তালিকা অনুযায়ী ফল প্রকাশ করতে রাজি নয় রাজ্য। ওবিসি ‘এ’ ও ওবিসি ‘বি’ তালিকা মেনেই ফল প্রকাশ করতে চাইছে রাজ্য। আর এতেই আপত্তি আদালতের। বিচারপতি কৌশিক চন্দর পর্যবেক্ষণ,পুরনো মামলায় নতুন ক্যাটাগরি হতে পারে না। তাই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, পুরনো ভর্তির বিজ্ঞপ্তি মেনে ৭ শতাংশ সংরক্ষণই দিতে হবে। কারণ, ২০২৪ সালে মামলা হওয়ার আগে ৭ শতাংশই ওবিসি সংরক্ষণ ছিল। কিন্তু রাজ্য বর্তমানে সেটা বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ করতে চাইছে। আর তাতেই আপত্তি বিচারপতির। এদিন শুনানিতে বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন, ওবিসি সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পরিষ্কার নির্দেশ ছিল যে ৬৬ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ করা যাবে না। সেই নির্দেশ মেনেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার(WBJEE)ফল তথা মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে।
২০১০ সালের সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট(WBJEE)
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গত বছর ২০১০ সালের রাজ্যে ইস্যু হওয়া সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করার নির্দেশ দেয়। এবং নতুন করে সমীক্ষা করার কথা বলে। তারপর মোট ১৪০টি জাতিকে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৭৬টি জাতিকে সমীক্ষার মাধ্যমে নতুন করে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আগের ৬৬টির মধ্যে ৬৪টি জনজাতিকে রাখা হয়েছে। বাকি দুটি জাতি নিয়ে এখনও সমীক্ষা চলছে। এই কারণেই, বৃহস্পতিবার যে লিখিত পরীক্ষার ফলপ্রকাশ করার ছিল, তাতে আপত্তি জানায় হাইকোর্ট। যে হেতু ২০১০ সালের আগের ওবিসি শংসাপত্রগুলি বৈধ, তাই জয়েন্ট এন্টান্স বোর্ডের(WBJEE) মামলায় আগের শুনানিতে বিচারপতি কৌশিক চন্দ ২০১০ সালের আগের ওবিসি তালিকা মেনেই ফলপ্রকাশ করার কথা বলেন।

আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: দিল্লিতে রওনা দিলেন অভিষেক, বিরোধী বৈঠকে থাকবে কোন কোন ইস্যু?
আদলতের প্রশ্নের মুখে বোর্ড
এরমধ্যেই গত ২৮ জুলাই ওবিসি সার্টিফিকেট সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাতে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এদিন শুনানিতে সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের আগে কেন হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি? সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাই বিচারপতি চন্দর মতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। এদিন আদালত অবমাননা নিয়েও শুনানি হয়।
শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের কয়েক দিনের মধ্যেই কী করে সকলকে ওবিসি শংসাপত্র প্রদান করা সম্ভব হল? আবেদন, যাচাই প্রক্রিয়া কী ভাবে এত কম সময়ের মধ্যে সম্ভব হল? সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি চন্দ। আদালত মনে করছে মেধাতালিকা সঠিক পদ্ধতিতে তৈরি হয়নি। তাই বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশের কথা থাকলেও, তা করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত। এবং আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে ওবিসির পুরনো বিধি মেনেই নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের আদালতের এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: Voter ID: ভূতুড়ে ভোটার চিহ্নিত করতে কড়া নজরদারি, এবার ভোটার কার্ডে ট্র্যাকিং সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত