ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: একটা চাকরি মানে শুধু পেট চালানো নয়। সেটা একটা স্বপ্ন, একটা লড়াইয়ের ফল (Teachers Protest)। রাতের ঘুম ত্যাগ করে, দিনের আলো নিভিয়ে যারা একটার পর একটা পরীক্ষায় বসেছে, বইয়ের পাতা ওলটাতে ওলটাতে যারা ভবিষ্যতের ভিত গড়তে চেয়েছে, আজ তাদেরই হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে সেই স্বপ্নের চাকরি।
২৬ হাজার চাকরিহারার জীবনে অনিশ্চয়তার অন্ধকার (Teachers Protest)
পশ্চিমবঙ্গের ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা, যাদের মধ্যে অনেকে নিঃসন্দেহে যোগ্য। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এক ঝটকায় চাকরি হারিয়েছেন। কারণ, সরকার যোগ্য-অযোগ্যর ফারাক ঠিক সময়ে করতে পারেনি (Teachers Protest)। এখন সবাইকে একসঙ্গে ‘অযোগ্যের’ তকমায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই যেন ভেঙে পড়েছে হাজার হাজার পরিবারের ভবিষ্যৎ।
আরও পড়ুন: Abhijit Ganguly on SSC: এসএসসি আন্দোলনের পাশে বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
৩ এপ্রিল থেকে রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করেন চাকরিহারা শিক্ষকরা (Teachers Protest)। কেউ বা সদ্য বিবাহিত, কেউ বা বৃদ্ধ বাবা-মার একমাত্র ভরসা। কিন্তু আশ্বাসের পর আশ্বাস এলেও, সমাধানের দেখা নেই।
এই অন্ধকার সময়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ ভিজিয়ে দিচ্ছে এক শিক্ষক বাবার ছবি। কোলের শিশুকে নিয়ে রাস্তায় বসে তিনি প্রমাণ করছেন নিজের যোগ্যতা। তার হাতে পরীক্ষার ওএমআর শিট। আর খুদে সন্তানের হাতে প্ল্যাকার্ড—”আমার বাবা যোগ্য শিক্ষক।”
আরও পড়ুন: Kasba incident: চাকরিহারাদের লাঠিচার্জ কেন? কসবা-কাণ্ডে পুলিশের আচরণের জবাব তলব লালবাজারের
এই একটি ছবি যেন সমস্ত প্রশ্নকে ছুঁড়ে দেয় আমাদের মুখের উপর—এই কি আমাদের সমাজ, যেখানে যোগ্যতা প্রমাণ করতে বাচ্চাকে নিয়ে পথে বসতে হয় একজন শিক্ষকে? এই কি আমাদের প্রশাসনিক বোধ, যেখানে সময়মতো বিচার করতে না পেরে আজ একসঙ্গে হাজারও জীবন অনিশ্চয়তায় ঢেকে যায়?
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন না কেউ (Teachers Protest)। কারণ কেবল আশ্বাসে তো সংসার চলে না। প্রশ্ন একটাই—এই ‘যোগ্য’ মানুষগুলোর ভবিষ্যৎ কী? তাদের লড়াই কি শুধুই বাতাসে মিলিয়ে যাবে? উত্তর এখনও অজানা। কিন্তু তাদের চোখে জেদ, হাতে ধরা প্রশ্নপত্র, আর কোলের শিশুর নীরব প্রতিবাদ বলে দিচ্ছে, এই লড়াই থামবে না।