ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মণিপুর রয়েছে সেই মণিপুরেই(Manipur)।কখনও শান্ত হয়, পরক্ষণেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গত দু’বছরে বারবার মণিপুরের ছবি বদলেছে। কুকি জনজাতি এবং মেইতেই গোষ্ঠীদের মধ্যে সংঘর্ষে মণিপুরে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আবার পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শান্তি ফিরেছে। তবে সেই শান্তি আবার বিঘ্নিত হয়েছে। স্থায়ী সমাধান এখনও অধরা মণিপুরে।
আবারও অশান্ত মণিপুর (Manipur)
শনিবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মণিপুরে(Manipur)। অশান্তির কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী ইম্ফল। সেই অশান্তির আগুন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে অন্য জেলাগুলিতেও। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে বিক্ষোভকারীদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে গুলিও ছুড়তে হয় পুলিশকে।

ঘটনার সূত্রপাত (Manipur)
ঘটনার সূত্রপাত একটি গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে(Manipur)। শনিবার মেইতেই গোষ্ঠীভুক্ত সংগঠন আরামবাই টেংগোলের এক কমান্ডর পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ! খবর ছড়িয়ে প়়ড়তেই একদল বিক্ষোভকারী জড়ো হন পশ্চিম ইম্ফলের কোয়াকেইথেল পুলিশ পোস্টের সমানে। ‘গুজব’ ছড়ায় ওই পোস্টেই নাকি আটকে রাখা হয়েছে তাঁদের। অবিলম্বে ধৃতদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। কয়েকজন যুবককে নিজের গায়ে পেট্রল ঢালতেও দেখা যায়। নিজেদের পুড়িয়ে মারার হুমকিও দেন বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুর চালানো হয় ওই পুলিশ পোস্টেও। বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ। দুই পক্ষের ধস্তাধস্তিতে দুই সাংবাদিক-সহ তিন জন আহত হন। তারপরেই রাজ্যে অশান্তির আগুন ছড়াতে শুরু করে।
আরও পড়ুন-Maharashtra: মহারাষ্ট্রের হাওয়া বদলের রাজনীতিকে পাত্তা দিতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী
ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ (Manipur)
শুধু ইম্ফল নয়, আশপাশের মেইতেই অধ্যুষিত এলাকায় শুরু হয় বিক্ষোভ(Manipur)। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র্যাফ, আধাসেনা নামানো হয়। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে মণিপুরের বেশ কয়েকটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিষ্ণুপুর জেলায় কার্ফু জারি করেছে পুলিশ। এছাড়াও, ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবল, কাকচিঙের মতো জেলাগুলিতে জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাঁচ বা তার বেশি লোকের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মণিপুর পুলিশ। অন্যদিকে, শনিবার রাতের ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার থেকে ১০ দিন মণিপুর বন্ধের ডাক দিয়েছে আরামবাই টেংগোল। সোশ্যাল মিডিয়ায় যাতে কোনও রকম গুজব বা হিংসাত্মক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই জন্য সতর্ক পুলিশ ও প্রশাসন। চলছে নাকা চেকিং। আগামী পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে মণিপুরের অবস্থা থমথমে।
আরও পড়ুন-Los Angeles: অবৈধ অভিবাসী ধরপাকড়! বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ লস অ্যাঞ্জেলস, হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
রাষ্ট্রপতি শাসন জারি (Manipur)
চলতি বছরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর মণিপুরের পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি জারি ছিল(Manipur)। মার্চ মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘অবাধ চলাচল’ নির্দেশের প্রতিবাদে মণিপুরের কুকি জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধের ডাকও দেওয়া হয়েছিল। গত ১৩ মার্চ বন্ধ প্রত্যাহার করা হলেও কুকিরা জানিয়ে দিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ তাঁরা মানবেন না। কুকিদের দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ‘অবাধ চলাচল’-এর বিরোধিতা করে যাবেন। মণিপুরে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে মেইতেই এবং কুকি জনজাতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকও করে কেন্দ্র সরকার। কিন্তু তাতেও যে শান্তি ফেরেনি।

সরকার গঠনের তোড়জোড় (Manipur)
মণিপুরে শুধু কুকি ও মেইতেই মধ্যে অশান্তিতে থেমে নেই, অন্য গোষ্ঠীদের মধ্যেও মাঝেমধ্যেই সংঘর্ষ বাধে(Manipur)। সেই তালিকায় রয়েছে মার এবং জোমি জনজাতি। সম্প্রতি মণিপুরে রাজনৈতিক টালবাহানা শুরু হয়েছে। আবার সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছে বিজেপি। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখাও করেছেন বিজেপি বিধায়কেরা। তবে এখনও সরকার গঠনের ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। সেই আবহে আবার নতুন করে উত্তেজনার আগুন জ্বলতে শুরু করল মণিপুরে।