ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উত্তর হাওড়ার ঘুষুড়িতে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা (Women Shackled By Parents)। কলেজ পড়ুয়া ও চাকরিরত এক তরুণীকে প্রায় দশ দিন ধরে তাঁদের ফ্ল্যাটের একটি ঘরে পায়ে লোহার শিকল বেঁধে তাতে তালা চাবি দিয়ে আটকে রাখা হল। এমনটাই অভিযোগ করলেন ওই তরুণী। পুলিশের কাছে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন মেয়ে। পাল্টা বাবা-মায়ের যুক্তি, বিপথে যাচ্ছিলেন মেয়ে।
পাত্র দেখা হচ্ছে বিয়ের পিঁড়তে বসো (Women Shackled By Parents)
উত্তর হাওড়ার ঘুসুড়ির ২৬/১ দয়ারাম নস্কর লেনে বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন ওই তরুণী। পড়াশোনা করেন বড়বাজারের সাবিত্রী মহাবিদ্যালয়ে। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ শুরু করেছেন। সেখান তাঁর ট্রেনিং চলছে। প্রতিদিন যাতায়াতের সমস্যার কারণে তাঁকে নিউ ব্যারাকপুর এলাকাতেই থাকতে হচ্ছিল। রবিবার বাড়ি ফিরতেই বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝামেলা হয় তার। চাকরি ও পড়াশোনার দরকার নেই, পাত্র দেখা হচ্ছে বিয়ের পিঁড়তে বসতে বলা হয়েছে তাকে (Women Shackled By Parents)। তারপরেই মেয়ের পায়ে শিকল তালা চাবি দিয়ে দিলেন বাবা মা।
চাকরি ছাড়তে জোর করেন (Women Shackled By Parents)
তরুণীর অভিযোগ, বাবা-মা তাঁকে চাকরি ছাড়তে জোর করেন। এ-ও জানিয়ে দেওয়া হয়, তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে হবে। পাত্র দেখা হচ্ছে। আপত্তি করেন কলেজছাত্রী। কিন্তু তাতে ফল হল আরও খারাপ। কলেজ পড়ুয়া আরতির কথায়, ‘‘চাকরি করতে চাওয়ায় আমায় মারধর করা হত। চাকরি করব বলে বাড়ি ছেড়ে চলেও গিয়েছিলাম। কিন্তু ফিরে আসাই ভুল হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, বাড়িতে ফেরার পর বাবা-মা তাঁকে একটি ঘরে বন্দি করে রাখেন। এমনকি, ঘরের বাইরে যাতে মেয়ে পা দিতে না পারেন, সে জন্য পায়ে শিকল বেঁধে দেওয়া হয়েছিল (Women Shackled By Parents)।
আরও পড়ুন: IC Mrinal Sinha: রাস্তায় ভিক্ষা করেই কাটছিল দিন, বৃদ্ধার চোখের দৃষ্টিশক্তি ফেরালেন পুলিশ আধিকারিক
পুলিশের পক্ষ থেকে তরুণীকে উদ্ধার
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে মালি পাঁচঘরা থানার পুলিশ এসে তরুণীকে উদ্ধার করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের সঙ্গেও এমন ব্যবহার কেউ করে না। মেয়ে পড়তে চাইছে তাকে কি না পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হচ্ছে। বিয়ে দিতে জোর করছে এ কেমন বাবা-মা। কোন সমাজে রয়েছে ওঁরা। পুলিশের পক্ষ থেকে তরুণীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাবা-মাকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
ওকে ভুল বুঝিয়ে কাজে রেখেছে
আরতির বাবা গৌর সাউয়ের বলছেন মেয়ে চাকরি করবে বলে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাতে তাঁদের আপত্তি। তাঁরা চান, তাড়াতাড়ি মেয়ের বিয়ে দিতে। গৌরের কথায়, ‘‘ও যে কোম্পানিতে কাজ করত, সেই কোম্পানি ওকে ভুল বুঝিয়ে কাজে রেখেছে। মেয়ে কোনও প্রতারণা সংস্থায় কাজ করছে বলে আমার সন্দেহ। বাড়ি থেকে অনেক বার টাকা নিয়ে গিয়েছে। তাতেই আমাদের সন্দেহ।’’ তিনি জানান মেয়ে যাতে ওই সুযোগে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেই জন্য তাঁর পায়ে শিকল পরিয়ে ঘরবন্দি করেছিলেন।