ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্বের ইতিহাসে কিছু স্থাপত্য (World Tour) রয়েছে, যা কেবল তাদের অসাধারণ সৌন্দর্য ও কারুকার্য দিয়ে নয়, বরং তাদের নির্মাণের পেছনের কাহিনি এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্যও পৃথিবীজুড়ে অবিস্মরণীয়।
মিশরের পিরামিড (World Tour)
মিশরের গিজা শহরে অবস্থিত পিরামিডটি পৃথিবীর (World Tour) প্রাচীনতম আশ্চর্য। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ২৬০০ সালের দিকে নির্মিত হয়েছিল এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় পিরামিড হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হল গ্রেট পিরামিড, যা মিশরের ফারাও খুপ্তের সমাধি হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। এই পিরামিডটি প্রায় ৪,৫০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে এবং এটি একটি অসাধারণ কারুকার্য, যা আজও বিশ্বের অন্যতম বড় নির্মাণ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর উচ্চতা ১৪৭ মিটার এবং একে তৈরির জন্য প্রায় ২.৩ মিলিয়ন পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল।
বাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান (World Tour)
বাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যগুলোর (World Tour) মধ্যে একটি, যদিও এর স্থিতি সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ আজও পাওয়া যায়নি। এটি প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার (বর্তমান ইরাক) বাবিলন শহরে ছিল এবং এটি কিং নেবুচদনেজারের রাজত্বকালে তৈরি হয়েছিল। কিং নেবুচদনেজার তার স্ত্রীর জন্য এই উদ্যানটি তৈরি করেছিলেন, যিনি তাঁর জন্মস্থান পার্বত্য এলাকায় গাছপালা ও উদ্যান দেখতে অভ্যস্ত ছিলেন। ঐতিহাসিকদের মতে, এটি স্তম্ভের ওপর স্থাপিত একটি উদ্যান ছিল, যেখানে বিভিন্ন ধরনের গাছ এবং জলাধার ছিল।
আরও পড়ুন: Shibkhola: টেনশন থেকে পাবেন মুক্তি, ঘুরতে চলুন শিবখোলায়
আরিস্তটলের মন্দির
গ্রিসের এফেসাস শহরে অবস্থিত এই মন্দিরটি আরিস্তটল দেবীর প্রতি নিবেদিত ছিল এবং এটি একটি অসাধারণ স্থাপত্যকর্ম হিসেবে পরিগণিত। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫০ সালে তৈরি হয়েছিল এবং এর আকার ও আভিজ্ঞান ছিল অত্যন্ত বিস্ময়কর। মন্দিরটি ১২২টি বৃহৎ স্তম্ভ দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল, এবং এটি তখনকার সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মন্দির হিসেবে পরিচিত ছিল। এই মন্দিরটি অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হয়ে যায়, তবে এর স্থাপত্য ছিল পৃথিবীজুড়ে প্রশংসিত।
গ্রেট ওয়াল অব চায়না
চীনের মহাপ্রাচীর একটি অন্যতম ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতীক। এটি পৃথিবীর দীর্ঘতম মানবসৃষ্ট স্থাপনা, যা প্রায় ২১,১৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ। মহাপ্রাচীরটি খ্রিষ্টপূর্ব ৭ম শতাব্দী থেকে ১৬শ শতাব্দী পর্যন্ত নির্মিত হয়েছিল এবং এটি চীনের নিরাপত্তা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এটি একদিকে যেমন আক্রমণকারীদের প্রতিরোধে সহায়ক ছিল, তেমনি এটি চীনের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং সভ্যতার এক প্রতীক হিসেবেও পরিচিত।
জিউসের মূর্তি
গ্রিসের অলিম্পিয়াতে অবস্থিত এই মূর্তিটি পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যগুলোর একটি ছিল। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ৪৪০ সালে সিসিফাস নামক এক সুদক্ষ শিল্পী দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। এই মূর্তিটি প্রায় ১২ মিটার উচ্চ এবং এটি সোনালি ও হাতি দাঁতের সংমিশ্রণে নির্মিত হয়েছিল। জিউসের এই মূর্তি অলিম্পিয়া শহরের মন্দিরের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছিল এবং এটি গ্রিক দেবতাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেবতা জিউসকে তুলে ধরেছিল।
মহান আলেকজান্ডার ফ্যারোস
মিশরের আলেকজান্ড্রিয়া শহরে অবস্থিত ফ্যারোস বাতিঘর ছিল প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বাতিঘর। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ২৮০-২৪০ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এর উচ্চতা প্রায় ১০০ মিটার ছিল। এটি আকাশ থেকে দেখা যেত এবং এটি বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করত। এটির আলো এত শক্তিশালী ছিল যে, এটি দূর থেকে নৌযানদের পথ দেখাত। এই বাতিঘরটি একটি প্রযুক্তিগত দুর্দান্ত উদাহরণ হিসেবে পরিগণিত হয়।
মহান মহম্মদ মন্দির
এই স্থাপত্যটি ছিল পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি। এটি বর্তমান তুরস্কের হালিকার্নাসাসে (বর্তমান বড্রাম) অবস্থিত। এটি নির্মিত হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০ সালে এবং এটি ছিল মসোলাস নামক এক রাজা এবং তার স্ত্রীর সমাধি। এর আকার ছিল অত্যন্ত বড় এবং প্রতিটি অংশে ছিল অসাধারণ কারুকার্য, যা একে অনন্য করে তুলেছিল।