ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মহাকাশ থেকে প্রকাশিত হলো X-37B-এর বিরল ছবি! এই ছবি আমেরিকার স্পেস ফোর্স প্রকাশ করেছে।
প্রথমবার মহাকাশে প্রকাশ্যে এল গোপন মহাকাশযান (X-37B Photo)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস ফোর্স সম্প্রতি X-37B মহাকাশযানের এক বিরল ছবি প্রকাশ করেছে (X-37B Photo)। এই প্রথমবার মহাকাশে থাকা অবস্থায় এই গোপন মহাকাশযানের কোনো ছবি জনসাধারণের সামনে এসেছে। ছবিটি onboard ক্যামেরায় তোলা হয়েছে, যেখানে পিছনের অংশে পৃথিবীর দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে।
আফ্রিকার উপর দিয়ে উড়ছে X-37B (X-37B Photo)
২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, X-37B আফ্রিকার আকাশের উপর দিয়ে উড়ছে (X-37B Photo)। ছবির বাঁ পাশে মহাকাশযানের সৌর প্যানেলের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। ছবির উপরের অংশে তার পেলোড বে খোলা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। এই গোপন মহাকাশযান এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মহাকাশে রয়েছে। এটি ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩-এ SpaceX Falcon Heavy রকেটে চড়ে তার সপ্তম মিশনে উৎক্ষেপিত হয়েছিল। এর আগে শুধুমাত্র একটি লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিওতে X-37B-এর ঝলক দেখা গিয়েছিল। সেটি ছিল তার শেষ উৎক্ষেপণের সময়, যখন মহাকাশযানটি Falcon Heavy-এর আপার স্টেজ থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছিল।
X-37B-এর মিশন ও পরীক্ষামূলক গবেষণা
মার্কিন স্পেস ফোর্স X-37B-এর মিশন নিয়ে বরাবরই গোপনীয়তা বজায় রেখেছে (X-37B Photo)। তবে তারা নিশ্চিত করেছে যে, বর্তমান ফ্লাইটে নতুন কক্ষপথ পরিবর্তন পদ্ধতি পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়াও মহাকাশ ডোমেইন সচেতনতা প্রযুক্তির উপর গবেষণা চলছে। নাসাও এই মিশনের সঙ্গে যুক্ত। তারা গবেষণা করছে বিভিন্ন পদার্থের উপর মহাজাগতিক বিকিরণের প্রভাব। আগের মিশনগুলোর কক্ষপথ ছিল লো আর্থ অরবিট (LEO), কিন্তু এবার পরিস্থিতি আলাদা। Falcon Heavy এমন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে যেখানে ভূস্থির কক্ষপথ (geosynchronous orbit) প্রায় ৩৫,০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
আরও পড়ুন: Nothing 3a: নতুন ফোনে AI ফিচার আনছে Nothing, থাকছে ‘Essential Space’ প্রযুক্তি
এই মিশনে “অ্যারোব্রেকিং” পদ্ধতির পরীক্ষাও চলছে, যেখানে মহাকাশযানটি বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণ ব্যবহার করে জ্বালানি খরচ কমিয়ে কক্ষপথ পরিবর্তন করবে।
স্পেস ফোর্স জানিয়েছে যে, onboard ক্যামেরা X-37B-এর অবস্থা নজরে রাখছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, “X-37B তার সপ্তম মিশনে প্রথমবারের মতো নতুন কৌশলগত অ্যারোব্রেকিং পরীক্ষা করছে, যা কম জ্বালানিতে নিরাপদে কক্ষপথ পরিবর্তনের জন্য ব্যবহার করা হবে।”
X-37B-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
X-37B হল নতুন মহাকাশ প্রযুক্তি পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এর আগেও এই মহাকাশযান বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি পরীক্ষা করেছে, যেমন সৌরশক্তি মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা, তাপ প্রতিরোধী প্রযুক্তি এবং স্বয়ংক্রিয় ফ্লাইট ব্যবস্থা। X-37B-এর আগের মিশনটি ৯০৮ দিন মহাকাশে কাটানোর পর ২০২২ সালের নভেম্বরে পৃথিবীতে ফিরে এসেছিল।
আরও পড়ুন: iOS Update: এপ্রিল মাসে আসছে iOS 18.4 আপডেট, থাকছে নতুন ফিচার ও উন্নত সুবিধা
স্পেস ফোর্স এখনও জানায়নি এই মহাকাশযান কবে পৃথিবীতে ফিরবে। এর মিশন সম্পর্কিত সময়সীমা সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছে।
এদিকে, চীনও একই ধরনের পুনঃব্যবহারযোগ্য মহাকাশযান তৈরি করছে। তাদের তৃতীয় মিশন X-37B-এর এই মিশনের মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। বিশ্বজুড়ে মহাকাশ গবেষণায় পুনঃব্যবহারযোগ্য মহাকাশযানের গুরুত্ব বাড়ছে। X-37B-এর সাফল্য ভবিষ্যতে মহাকাশ অভিযানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।