ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্বজুড়ে যখন বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাসরি চিঠি লিখলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (Yunus Letter)। চিঠিতে ট্রাম্পের (Donald Trump) নতুন শুল্কনীতির ফলে বাংলাদেশের উপর চাপ সৃষ্টি হওয়ায়, সেই শুল্কনীতি অন্তত তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন ইউনূস। সোমবার বিকেলে এই চিঠির কথা জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ (Yunus Letter)
উল্লেখ্য, আমেরিকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের উপর ৩৭ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে (Yunus Letter)। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, চামড়ার সামগ্রী, হস্তশিল্পসহ নানা পণ্যের মার্কিন বাজারে প্রতিযোগিতা ক্ষমতা হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এই প্রেক্ষাপটেই ইউনূস এই শুল্কনীতি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার আবেদন জানান।
শুল্ক হ্রাসের অনুরোধ (Yunus Letter)
চিঠিতে ইউনূস (Muhammad Yunus) শুধু শুল্ক হ্রাসের অনুরোধই করেননি, বরং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার বার্তাও দিয়েছেন (Yunus Letter)। মার্কিন রফতানি পণ্যের ওপর বাংলাদেশে শুল্ক ছাড় দেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। বিশেষত, গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর এবং চিকিৎসা সামগ্রীর উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক হ্রাস করার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।

আরও পড়ুন: Sheikh Hasina : “চিন্তা করবেন না, আসতেছি আমি।” ভার্চুয়াল বার্তায় বললেন শেখ হাসিনা
কৌশলগত পদক্ষেপ (Yunus Letter)
বাংলাদেশের দিক থেকে এই পদক্ষেপ এক কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে (Yunus Letter)। কারণ, শুল্ক-সামঞ্জস্য বজায় রেখে বাংলাদেশের রফতানিকারকরা যাতে মার্কিন বাজারে তাদের স্থান ধরে রাখতে পারে, সেই চেষ্টাই করছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সঙ্গে আমেরিকাকে দেওয়া হয়েছে একটি ইতিবাচক বার্তা—বাংলাদেশ শুধু নিজস্ব রফতানির স্বার্থ রক্ষা করতে চায় না, বরং আমেরিকার কৃষিজ পণ্য যেমন তুলো, গম, ভুট্টা, সয়াবিন ইত্যাদির আমদানির ক্ষেত্রে আগ্রহী।

আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ (Yunus Letter)
চিঠিতে এও জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা ইতিমধ্যেই আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যতের বাণিজ্যিক কাঠামো কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চলছে।

ইউনূসের দ্বিতীয় চিঠি (Yunus Letter)
প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও জানান, ট্রাম্পকে পাঠানো চিঠির পাশাপাশি আমেরিকার বাণিজ্য দফতরেও আরেকটি চিঠি পাঠানো হবে। যদিও দ্বিতীয় চিঠির বিষয়বস্তু এখনও প্রকাশ্যে আসেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে দুই দেশের রফতানি ও আমদানি কাঠামোর বিশদ পর্যালোচনা থাকবে।
শুল্ক যুদ্ধের আঁচ বাংলাদেশে
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কৌশলের মিশ্র রূপ। একদিকে দেশের শিল্প ও রফতানি খাতকে রক্ষা করা, অন্যদিকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ রাখা—এই দুই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে ঢাকার অন্তর্বর্তী প্রশাসন। বিশ্বব্যাপী যখন শুল্ক যুদ্ধের আঁচ বাড়ছে, তখন বাংলাদেশ এই সঙ্কটকে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে মেটাতে চাইছে। ট্রাম্পের জবাবের অপেক্ষায় এখন বাংলাদেশ। এই চিঠির প্রতিক্রিয়া আগামী দিনে দুই দেশের সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।