ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এবার পোস্ট অফিস থেকে উধাও গ্রাহকের ১২ লক্ষ টাকা (Post office Scam)। ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। এডিজি সিআইডি করবে তদন্ত। আগামী ছ’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে সিআইডিকে। এই মামলায় কেন সঠিক ভাবে তদন্ত হয়নি, কেন পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি, সিআইডিকে ওই বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে হবে। তদন্তে ঢিলেমি নিয়ে আগের তদন্তকারী অফিসারদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে সিআইডিকে। নির্দেশ হাইকোর্টের।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর পোস্ট অফিসে (Post office Scam) এক গ্রাহকের একাউন্ট থেকে উধাও ১২ লক্ষ টাকা। অভিযোগ ২০২১ সালে জামালপুর ডাকঘরে ১২ লক্ষ টাকা আমানত হিসেবে রাখলেও সেই টাকা ফেরত পাননি স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী সুরজিৎ পাল। টাকা আমানত করেছিলেন পেশায় মৃৎশিল্পী তাঁর বাবা রণজিৎ পাল। ২০২২ সালে সেই টাকা পোস্ট অফিস থেকে তুলতে গেলে তিনি পাননি।
আরও পড়ুন: RSS: মোহন ভাগবতের অনুষ্ঠানের অনুমতিতে ‘না’, হাইকোর্টের দ্বারস্থ আরএসএস
পোস্ট অফিস টাকা দেয়নি বলে অভিযোগ। পোস্ট অফিসের বিরুদ্ধে জামালপুর থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেই অভিযোগ সুরজিৎ পালের আইনজীবী উদয় শংকর চট্টোপাধ্যায়ের। টাকা না পাওয়ায় মায়ের অসুস্থতার চিকিৎসা করাতে পারছেন না বলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। বৃহস্পতিবার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ পুলিশি তদন্ত নিয়ে চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন।
তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ (Post office Scam)
গত ৩১ জানুয়ারি এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। এই ঘটনায় পুলিশ কী তদন্ত করেছে, তা এক সপ্তাহের মধ্যে আদালতে জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। মামলার কেস ডায়েরিও তলব করেছিলেন তিনি (Post office Scam)। এদিন পুলিশের রিপোর্ট দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। এবং তদন্তভার বর্ধমান জেলা পুলিশের থেকে নিয়ে সিআইডি-র হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে এডিজি সিআইডি-কে আগামী ৬ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এই ঘটনায় কেন পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পরও সঠিকভাবে তদন্ত করেনি, কেন কোনও পদক্ষেপ করেনি, তাও খতিয়ে দেখতে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই ঘটনায় কেন আগের দুই তদন্তকারী অফিসার (আইও) ঢিলেমি করেছেন, সেই নিয়ে তাঁদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি-কে রিপোর্ট হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।

বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘মানুষ তার খাটনির টাকা পোস্ট অফিসে জমা রেখেছেন। আর সেখান থেকে টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে! আর পুলিশ সব জেনেও কিছু করছে না! কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখেও যদি মানুষ টাকা না পান, তাহলে কোথায় যাবে? কেন সরকারি প্রতিষ্ঠানে মানুষের গচ্ছিত টাকা থাকবে না?
এইভাবে যদি সাধারণ মানুষের টাকা পোস্ট অফিস (Post office Scam) থেকে লোপাট হয়ে গেলে পুলিশ যদি কিছু না করে তাহলে মানুষের তো পোস্ট অফিসের উপর থেকেই আস্থা উঠে যাবে! গত দেড় বছরে জামালপুর থানা কিচ্ছু করেনি। কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে যদি এই ভাবে মানুষ প্রতারিত হয় তাহলে মানুষ কোথায় যাবে? কেউ কোনও দায়িত্ব নেবে না। একটু কঠিন কাজ হলে সবাই দায় এড়িয়ে যায়।’