ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত সফলভাবে পৃথ্বী-২ এবং অগ্নি-১ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে (3 major missiles test), যা গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনাল প্যারামিটারগুলিকে বৈধতা দিয়েছে। এই পরীক্ষাগুলি ভারতের পারমাণবিক এবং বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষণ।
পৃথ্বী-২, অগ্নি-১ এবং আকাশ প্রাইম সফল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ (3 major missiles test)
ভারত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মিসাইল সফলভাবে পরীক্ষা করেছে (3 major missiles test)। এর মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল পৃথ্বী-২ ও অগ্নি-১ এবং অত্যাধুনিক সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল আকাশ প্রাইম। এই সাফল্য ভারতের কৌশলগত ও প্রতিরক্ষাগত সক্ষমতা আরও জোরদার করেছে। এর আগে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুরের’ সাফল্য ছিল। সেখানে পাকিস্তান মোতায়েন করা চীনা ড্রোন ও তুরস্কের বিমানকে ধ্বংস করতে আকাশ মিসাইল ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
লাদাখের উচ্চ পর্বতশ্রেণিতে আকাশ প্রাইম-এর সফল পরীক্ষা (3 major missiles test)
১৬ জুলাই লাদাখের ৪,৫০০ মিটার উচ্চতায় ভারতীয় সেনা বাহিনী সফলভাবে আকাশ প্রাইম-এর পরীক্ষা চালায় (3 major missiles test)। এত উচ্চতায়, কম অক্সিজেন এবং প্রবল বাতাসের মধ্যে, এই ধরনের পরীক্ষা খুবই বিরল। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) দ্বারা তৈরি আকাশ প্রাইম হল আগের আকাশ মিসাইল সিস্টেমের উন্নত সংস্করণ। এটি যুদ্ধবিমান, ক্রুজ মিসাইল এবং ড্রোন ধ্বংসে সক্ষম। এর পাল্লা ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার এবং এটি ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটার উচ্চতায় শত্রু টার্গেট ধ্বংস করতে পারে।
কী আছে আকাশ প্রাইমে?
মিসাইল সিস্টেমটিতে রয়েছে রাডার (রাজেন্দ্র), কমান্ড কন্ট্রোল ইউনিট ও লঞ্চার। এটি বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা গঠনে সক্ষম। পরীক্ষার সময় এটি দুইটি দ্রুতগামী ড্রোন সফলভাবে ধ্বংস করে। একটি বড় অগ্রগতি হল দেশের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিকার, যা নির্ভুলভাবে লক্ষ্য খুঁজে নিয়ে মিসাইল পরিচালনা করে। এই প্রযুক্তি বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশের কাছেই রয়েছে। এই পরীক্ষা ছিল ‘ফার্স্ট অফ প্রোডাকশন মডেল ফায়ারিং ট্রায়াল’-এর অংশ। এর লক্ষ্য হল দ্রুত সেনাবাহিনীতে একে অন্তর্ভুক্ত করা। DRDO, ভারত ডাইনামিক্স লিমিটেড, ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড এবং একাধিক বেসরকারি প্রতিরক্ষা সংস্থা এই পরীক্ষায় অংশ নেয়। অপারেশনাল ফিডব্যাকের ভিত্তিতে আপগ্রেড হওয়া আকাশ প্রাইম এখন উচ্চ পর্বত এলাকায় ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এটি শীঘ্রই সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে।
ওড়িশা থেকে পৃথ্বী-২ ও অগ্নি-১ এর সফল উৎক্ষেপণ
১৭ জুলাই ওড়িশার চাঁদিপুরের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ থেকে পৃথ্বী-২ এবং অগ্নি-১ স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হয়। স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড-এর তত্ত্বাবধানে এই পরীক্ষা হয় এবং উভয় মিসাইল সব ধরনের অপারেশনাল ও টেকনিক্যাল শর্ত পূরণ করে।
পৃথ্বী-২ হল একটি তরল জ্বালানিচালিত সারফেস-টু-সারফেস মিসাইল। এর পাল্লা ৩৫০ কিলোমিটার এবং এটি অত্যন্ত নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম। অগ্নি-১ কঠিন জ্বালানিচালিত এবং এর পাল্লা ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। দুটি মিসাইলই ভারতের পারমাণবিক প্রতিরোধ শক্তির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এই পরীক্ষাগুলি প্রমাণ করে যে ভারত নিজের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা কেবল বাড়াচ্ছে না, বরং প্রযুক্তিগত ও কৌশলগত দিক থেকেও আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাচ্ছে।