ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সামরিক ময়দান হোক কিংবা প্রযুক্তির ময়দান, কূটনীতি হোক কিংবা ভূরাজনীতি! সমস্ত ক্ষেত্রেই আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ করছে চিন (USA vs China)। যেভাবে বৈশ্বিক ভু-রাজনীতি এগোচ্ছে তাতে আমেরিকা ও চিন এই দুই মহাশক্তি যে সামরিক ময়দানে পরস্পরের মুখোমুখি আসতে চলেছে তা খুব আশ্চর্যের বিষয় নয়। কিন্তু যদি সামরিক ময়দানে ড্রাগন বনাম যুক্তরাষ্ট্র হয় তাহলে কে এগিয়ে থাকবে? কার পাল্লা ভারী হতে পারে তা নিয়ে বিশ্বের তাবড় সামরিক শক্তি বিশেষজ্ঞরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স (USA vs China)
সম্প্রতি ফৌজশক্তি অনুযায়ী বিশ্বের ১৪৫টি দেশের একটি বিশেষ তালিকা প্রকাশ করেছে ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’। যে তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে আমেরিকা। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে চিন। বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, এই দুই মহাশক্তির মধ্যে সামরিক শক্তির যে ব্যবধান ছিল সেই ব্যবধান দ্রুত কমে যাচ্ছে। যে ঘটনাকে আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বেশ উদ্বেগ জনক ঘটনা বলে দাবি করছেন (USA vs China)।
কোন কোন দিক বিচার করা হয়েছে? (USA vs China)
একাধিক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে (USA vs China)। সামরিক ক্ষমতা বিচারের ক্ষেত্রে সামরিক বাজেট, হাতিয়ার, এবং সৈন্যসংখ্যা এমনকি পরমাণু-সহ অন্যান্য মারণাস্ত্রের ভাণ্ডারের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। এই ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’-ইনডেক্সে আমেরিকার প্রাপ্ত নম্বর হল ০.০৭৪৪। আর চিনের প্রাপ্ত নম্বর হল ০.০৭৮৮। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে এই দুটি দেশ কতটা কাছাকাছি ব্যবধানে রয়েছে সামরিক শক্তির দিক থেকে।
সামরিক বাজেট
আমেরিকা ও চিনের মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অনেকগুলি দিক থেকে ব্যবধান কম হলেও সামরিক বাজেটের ক্ষেত্রে আমেরিকার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে চিন। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে চিনের প্রতিরক্ষা খাতে চিন খরচ করেছে ২৭ হাজার কোটি ডলার।অন্যদিকে ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে প্রতিরক্ষা খাতে আমেরিকা খরচ করেছে ৯০ হাজার কোটি ডলার।
আরও পড়ুন: Doanld Trump Tax Law: কার্যকরের পথে ট্রাম্পের শুল্ক-নীতি, কঠোর বার্তা চিনকেও
সৈন্যসংখ্যা
ড্রাগনের লালফৌজে রয়েছে ২০ লক্ষের বেশি সৈনিক। অন্যদিকে আমেরিকার কাছে রয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ সেনার বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের রিজ়ার্ভ ফোর্সে রয়েছে ৭.৯৯ লক্ষ সৈনিক। চিনের রিজ়ার্ভ বাহিনীতে রয়েছে ৫.১ লক্ষ সেনা। চিনের কাছে রয়েছে ৬.২৫ লক্ষ রিজ়ার্ভ ফোর্স।
কার কাছে কত হাতিয়ার
আমেরিকান বায়ুসেনার কাছে ১৩ হাজার ৪৩টি যুদ্ধবিমান রয়েছে। বোমারু বিমান ও লড়াকু জেটের সংখ্যা ১,৭৯০। চিনের কাছে রয়েছে ৩,৩০৯টি যুদ্ধবিমান। রয়েছে ১,২১২টি বোমারু বিমান ও লড়াকু জেট। জ্বালানি ভরতে সাহায্য করা ও রাডার সেনা বিমান আমেরিকার কাছে রয়েছে ২,৬৪৭টি, এবং চিনের কাছে রয়েছে মাত্র ৪০২টি। মোট ৫৮৪৩টি ফৌজি হেলিকপ্টার রয়েছে আমেরিকান বায়ু সেনার কাছে। চিনের কাছে হামলাকারী হেলিকপ্টার রয়েছে ১,০০২টি। চিনের কাছে ট্যাঙ্ক রয়েছে ৬,৮০০টি। সাঁজোয়া গাড়ি রয়েছে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৭টি। আমেরিকার কাছে রয়েছে ৪,৬৪০টি ট্যাঙ্ক। আমেরিকার কাছে রয়েছে ৩ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৬৩টি সাঁজোয়া গাড়ি। চিনের রণতরি রয়েছে ৭৫৪টি। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা ৪৪০। ১১টি বিমানবাহী রণতরি রয়েছে আমেরিকার। চিনের কাছে বিমানবাহী রণতরি রয়েছে ৩টি।
আরও পড়ুন: Missing Indians in Iran: ইরানে নিখোঁজ ৩ ভারতীয়, খোঁজ নিচ্ছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক
পরমাণু অস্ত্র
চিনের লাল ফৌজের কাছে পরমাণুবাহী ওয়ারহেড রয়েছে ৬০০টি। অন্যদিকে আমেরিকার কাছে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার আণবিক অস্ত্র। কিন্তু চিন দ্রুত বাড়াচ্ছে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের। ড্রাগেন লাগাতার চেষ্টা করছে তাদের পরমাণু অস্ত্র সংখ্যা এক হাজারের বেশি করার। যা আমেরিকার কাছে চিন্তার কারণ হতে পারে। শুধু তাই নয় চিনের পরমাণু অস্ত্র সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়া ভারত সহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও বড় হুমকি!