ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আপাতত ২৫% শুল্ক থেকে আপাতত রেহাই পেল কানাডা ও মেক্সিকো(US Pauses Tariff on Canada And Mexico)। কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর চাপানো ২৫ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা একমাসের জন্যে স্থগিত রলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্প(Donald Trump)। গত শনিবার কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনা পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। চিনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক এবং বাকি দুই দেশের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার থেকেই তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে কানাডা এবং মেক্সিকোর পণ্যের উপর শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাম্প।
ট্রুডোর সঙ্গে ফোনে কথা ট্রাম্পের(Donald Trump)
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর(Justin Trudeau) সঙ্গে সোমবার রাতে দুই দফায় আলোচনা হয় ট্রাম্পের(Donald Trump)। তার পরেই দুই রাষ্ট্রনেতা সমাজমাধ্যমে জানান, আপাতত ৩০ দিনের জন্য শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেনবামের সঙ্গেও সোমবার রাতে আলোচনা হয়েছে ট্রাম্পের।
কানাডার উপর শুল্ক চাপানোর নেপথ্যে ফেন্টানাইল(Donald Trump)
কানাডার উপর ট্রাম্পের(Donald Trump) শুল্ক চাপানোর নেপথ্যে অন্যতম বড় কারণ ছিল ফেন্টানাইল। এই মাদকটি ব্যথার উপশমের ক্ষেত্রে মরফিনের তুলনায় বহুগুণ শক্তিশালী। ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, কানাডা হয়ে এই মাদক আমেরিকায় প্রবেশ করছে। ট্রুডো যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। পরে সমাজমাধ্যমে ট্রুডো জানান, ফোনে ট্রাম্পের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে পরিকাঠামো এবং নজরদারি বৃদ্ধির জন্য ১৩০ কোটি ডলার খরচ করার পরিকল্পনা নিয়েছে কানাডা। নতুন হেলিকপ্টার, প্রযুক্তি এবং অন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন হবে। ফেন্টানাইল কানাডা থেকে আমেরিকায় যাওয়া আটকাতে নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হবে এবং এ বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে যৌথ সহযোগিতায় কাজ করা হবে।
সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আশ্বাস ট্রাম্পের
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া(Claudia Sheinbaum Pardo)সোমবার জানান, ”সৌহার্যমূলক আলোচনার প্রেক্ষিতে এক মাসের জন্য বাড়তি শুল্ক থেকে মুক্তি এবং সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি মেক্সিকো থেকে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ করতে আমেরিকা সীমান্তে ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে বলেও জানিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট।”
আরও পড়ুন: Elon Musk Tightens Grip: ক্ষমতা বাড়ছে এলন মাস্কের! মার্কিন মুলুকে ছড়াচ্ছে অসন্তোষ
সীমান্তে নজরদারিতে হবে ১০ হাজার কর্মী মোতায়েন
ট্রুডোর সমাজমাধ্যমে পোস্টের পর ট্রাম্পও অনুরূপ একটি পোস্ট করেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জানান, সীমান্তে নজরদারির জন্য প্রায় ১০ হাজার কর্মী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা। ফেন্টানাইল, আর্থিক তছরুপ এবং সংগঠিত অপরাধ রুখতে কানাডা এবং আমেরিকা একটি যৌথ বাহিনী জয়েন্ট স্ট্রাইক ফোর্স গঠনের বিষয়েও সহত হয়েছে। ট্রাম্প আরও জানান, কানাডা থেকে আমেরিকায় ফেন্টানাইল প্রবেশ রুখতে ওয়াশিংটনের তরফেও প্রয়োজনীয় আর্থিক লগ্নি করা হচ্ছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকার তরফেও ২০ কোটি ডলার খরচের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, ”এতে সবার জন্যই ভাল হল।”
ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি বোকা বাণিজ্যযুদ্ধ!
নতুন শুল্ক নীতির জন্য আমেরিকার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল কানাডা। কানাডার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আমেরিকান পণ্যের উপর পাল্টা ২৫ শতাংশ করের কথা ঘোষণাও করেছিলেন। তবে এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। চিন সোমবার আমেরিকার বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় মামলা করার হুমকি দিয়েছে। ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বোকা বাণিজ্যযুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন অনেকেই। সিদ্ধান্তের নেতিবাচক প্রভাব যে আমেরিকার অর্থনীতিতে পড়বে, সে সম্পর্কে অবগত স্বয়ং ট্রাম্পও। তাই কি ফের পিছনে হাঁটা ট্রাম্পের?