ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Case) মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে ভুল স্বীকার করলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ২০১০ সালের পর ইস্যু হওয়া ওবিসি সার্টিফিকেটে নিয়োগ প্রক্রিয়া কী করে হলো? বুধবার মামলার শুনানিতে আদালতের এই প্রশ্নের মুখে পড়লেন রাজ্যের মুখ্য সচিব। বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে পড়ে ভুল স্বীকার করলেন মুখ্য সচিব (Manoj Pant) । আদালতকে আশ্বস্ত করে তিনি জানালেন ‘ভবিষ্যতে আর হবে না।’
গতবছরের ২২ মে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Case) বাতিল করেছিল। ২০১০ সালের পর রাজ্যে ইস্যু হওয়ার সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। সেই নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে যায় রাজ্য। এখনও দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সেই মামলা বিচারাধীন থাকলেও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের ওপর কোনও রকম স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে পড়ে ভুল স্বীকার মুখ্য সচিবের (OBC Case)
এর মাঝেই অভিযোগ ওঠে, হাইকোর্টে স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Case) ব্যবহার করে রাজ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা হয়। প্রশ্নের মুখে পড়ে পশ্চিমবঙ্গ কোঅপারেটিভ সোসাইটির নিয়োগপ্রক্রিয়া। অভিযোগ ওঠে, ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এমনকি, প্যানেলও প্রকাশ করা হয়েছে। এই মামলার গতসুরালীতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের মুখ্য সচিবকে আদালতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে গোটা বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের সেই মামলার শুনানিতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী শুনানিতে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমরা আমাদের নির্দেশ স্পষ্ট দিয়েছিলাম। তারপরও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নিয়োগ প্রক্রিয়া কী করে শুরু হলো?’ তার উত্তরে দুঃখ সচিব বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বরেই আদালতের এই নির্দেশ রাজ্যের সমস্ত দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আদালতের নির্দেশ না মানার কোনও কারণ নেই। এখানে একটা ভুল হয়েছে। আমরা সেই ভুল স্বীকার করে নিচ্ছি।’ অপর বিচারপতি রাজশেখর মান্থা আদালতের নির্দেশ স্মরণ করিয়ে দিয়ে মুখ্য সচিবের উদ্দেশ্যে বলেন বলেন, ‘২০১০ সালের আগে যাঁরা ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Case) পেয়েছিলেন, তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। আদালত তার নির্দেশ স্পষ্ট করে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro Rail: দোলের দিন এই লাইনে চলবে না মেট্রো, সময়সূচিতেও বদল!
এরপর আমাদের ওপর কোনও দোষ দিতে পারবেন না। বলবেন না যেন যে আমরা চাকরিতে বাধা দিয়েছি।’ তার উত্তরে মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ যখন আদালতকে বলেন যে আদালতের নির্দেশ সমস্ত দফতরকে জানানো হয়েছিল, সেই শুনে বিচারপতি মান্থা পাল্টা বলেন, ‘আপনি শীর্ষ আধিকারিক (OBC Case)। আর আপনার লোকেরা আপনাকেই মানছেন না! এটা আমাদের খুব খারাপ লাগছে। আপনাকে আদালতে ডেকে পাঠানোটাও খুব দুঃখজনক।
আপনার কথাই যদি না শোনে তাহলে আর কার কথা শুনবে? নির্দেশ মানার ব্যাপারে সরকারি আইনজীবী আদালতে একাধিক হলফনামা দিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। অথচ রাজ্য সরকারই তাঁর পাশে নেই? আদালতের নির্দেশ সব দফতরকে পাঠানোর পরেও কেন তা অমান্য হচ্ছে? যদি কেউ আপনাদের নির্দেশ না মানেন তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? অন্তত সেই অফিসারদের ডেকে তাঁদের থেকে নির্দেশ না মানার ব্যাখ্যা চাইবেন না? অন্তত এইটুকু করুক সরকার।’ তখন মুখ্য সচিব আদালতকে আশ্বস্ত করে জানান, ‘আমি ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সতর্ক থাকবো।’