ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সৌদি আরবে আলোচনায় একটি প্রতিশ্রুতি তৈরি হয়েছিল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা তথ্য এবং ‘নিরাপত্তা সহায়তা’ পুনর্নবীকরণ করবে (Ukraine Ceasefire Deal)। এর পরেই ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন রাজি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সৌদি আরবে আলোচনার পর যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিল ইউক্রেন (Ukraine Ceasefire Deal)
সৌদি আরবে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে ইউক্রেন (Ukraine Ceasefire Deal)। এই চুক্তির অংশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং নিরাপত্তা সহায়তা আবার শুরু করতে রাজি হয়েছে। জেড্ডায় হওয়া এই আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে সম্পর্ক মেরামত করা। গত মাসে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকটি ব্যর্থ হয়েছিল।
ওই ঘটনার পর ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের সঙ্গে সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় বন্ধ করে দেয়। উদ্দেশ্য ছিল জেলেনস্কিকে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করার আলোচনায় বসতে চাপ দেওয়া।
কোন কোন নেতা আলোচনায় ছিলেন? (Ukraine Ceasefire Deal)
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক, মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে আলোচনা করেন (Ukraine Ceasefire Deal)। এই বৈঠকে হোয়াইট হাউসের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফও উপস্থিত ছিলেন। তিনি এই সপ্তাহেই মস্কো গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন।
কী চুক্তি হয়েছে? (Ukraine Ceasefire Deal)
মঙ্গলবার আট ঘণ্টার আলোচনার পর ইউক্রেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে (Ukraine Ceasefire Deal)। “আমরা ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে রাজি, যা দুই পক্ষের সম্মতিতে বাড়ানো যেতে পারে। তবে রাশিয়াকেও এটি মেনে নিতে হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করতে হবে” ইউক্রেন জানিয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারও ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য ও সামরিক সহায়তা দেবে।”
আরও পড়ুন: Greenland Election: ট্রাম্পকে উপেক্ষা করে গ্রিনল্যান্ডে চলছে ভোট
জেলেনস্কি বৈঠকে বলেছেন, তিনটি মূল বিষয় গুরুত্ব দিতে হবে। সেগুলি হল আকাশে নীরবতা, সমুদ্রে নীরবতা এবং যুদ্ধবন্দি ও আটক ব্যক্তিদের মুক্তি। আকাশে নীরবতা মানে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা বন্ধ রাখা। সমুদ্রে নীরবতা মানে ইউক্রেনের জাহাজ চলাচল নিরাপদ রাখা। ব্রিটিশ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জনাথন পাওয়েল এই চুক্তির খসড়া তৈরিতে সাহায্য করেছেন। তিনি মার্কিন প্রতিনিধি মাইক ওয়াল্টজ ও জার্মান-ফরাসি কূটনীতিকদের সঙ্গে মিলে যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা তৈরি করেন।

রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া কী?
রাশিয়ার সূত্র জানিয়েছে, পুতিন এখনই এই চুক্তি মেনে নেবেন না। ক্রেমলিনের উদ্বেগ না মেটানো পর্যন্ত মস্কো চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে না। একজন রুশ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, “পুতিনের পক্ষে এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়া কঠিন। কারণ রাশিয়া এখন সামরিকভাবে এগিয়ে রয়েছে।” আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, “এই প্রস্তাব মস্কোর জন্য একটি ফাঁদ হতে পারে। কারণ যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর করলে রাশিয়ার শক্ত অবস্থান দুর্বল হয়ে যেতে পারে।” তবে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী রুবিও জানিয়েছেন, এখন রাশিয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। তিনি বলেন, “আমাদের আশা, রাশিয়া দ্রুত ইতিবাচক উত্তর দেবে যাতে আমরা পরবর্তী ধাপে যেতে পারি।”
আরও পড়ুন: PM Modi: মরিশাসের প্রেসিডেন্টকে বিশেষ উপহার প্রধানমন্ত্রী মোদির
বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া
ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেছেন, এখন বল রাশিয়ার কোর্টে। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “আমরা জেড্ডায় হওয়া আলোচনার ফলাফলকে স্বাগত জানাই। এই চুক্তি ইউক্রেনে একটি স্থায়ী শান্তি আনার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।” ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারও যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এখন সিদ্ধান্ত রাশিয়ার। আমরা এই যুদ্ধকে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ীভাবে শেষ করতে সহায়তা করতে প্রস্তুত।”
জার্মান চ্যান্সেলর ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রীও চুক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। এদিকে, চুক্তি ঘোষণার পরও রাশিয়া ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাতভর বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে রুশ বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, তারা মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি এই সপ্তাহেই পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে রাশিয়া আগেও বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির বদলে দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায়।