ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নবদ্বীপ (Nabadwip Holi) পুরসভা দোল উৎসব উপলক্ষে ১৩ থেকে ১৫ মার্চ শহরের বাসিন্দাদের আমিষ খাওয়াদাওয়া বর্জনের জন্য আবেদন জানিয়েছে, যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। নবদ্বীপ, যা শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মভূমি এবং অধিকাংশ বাসিন্দা বৈষ্ণব, নিরামিষভোজী, সেখানে ঐতিহ্যগতভাবে মাছ বা মাংস বিক্রি ও রান্নার প্রচলন রয়েছে। কিন্তু দোল উৎসবের প্রস্তুতি পর্বে সম্প্রতি পুরসভার তরফে একটা বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে বৈষ্ণব মঠের প্রধান, বিভিন্ন ক্লাবের প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বিমানকৃষ্ণের আবেদন নবদ্বীপবাসীর জন্য, দোলে মাছমাংস খাবেন না।
আমিষ ত্যাগ করে নিরামিষ খান (Nabadwip Holi)
একটি ভিডিয়োতে পুরপ্রধান বলছেন যে আমি কোনও ধর্মকে ছোট করছি না। আমাদের হিন্দুধর্মে বিভিন্ন উৎসবে আমরা নিরামিষ খেয়ে থাকি। এটা চৈতন্যদেবের আবির্ভাবতিথি। এই তিথিতে এখানে চৈতন্যদেবের লক্ষ লক্ষ ভক্ত আসেন। তাঁরা অধিকাংশই নিরামিষভোজী। তাঁরা এসে এই দৃশ্যদূষণ দেখবেন (Nabadwip Holi)। দেখবেন কেউ রাস্তার এ ধারে খাসি খাচ্ছেন, কেউ ওধারে মুরগি খাচ্ছেন। এটা তাঁদের কাছে অসহনীয়। সেটা মাথায় রেখে নবদ্বীপবাসীর কাছে পুরসভার পক্ষ থেকে আমাদের আবেদন আগামী ১৩,১৪ ও ১৫ মার্চ আমিষ ত্যাগ করে নিরামিষ খান।
এটি শুধু একটি আবেদন (Nabadwip Holi)
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, “যে যার ইচ্ছেমতো খাবে, পরবে। কেউ কিছু চাপিয়ে দিতে পারে না,” তবে নবদ্বীপের (Nabadwip Holi) এই আবেদন তা কিছুটা আলাদা চিত্র তুলে ধরেছে। নবদ্বীপ শহরের একাংশের মানুষ এই আবেদনকে স্বাগত জানালেও, অন্য অংশ এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, এটি শুধু একটি আবেদন এবং কেউ চাইলে তা মানবেন না। তবে, পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই আহ্বানটি শহরের ধর্মীয় উৎসবের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং ভক্তদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এই শহরের সংস্কৃতির মধ্যে নিরামিষাশী খাদ্যাভ্যাসের গভীর প্রভাব রয়েছে, তবে এর মানে এই নয় যে, সেখানে আমিষ খাদ্য নিষিদ্ধ।
হাজার ভক্তবৃন্দদের সমাগম ঘটে
এছাড়া এই ক’দিন শহরে বিভিন্ন বাজারে মাছ-মাংস বিক্রি না করারও আবেদন জানানো হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে। শহরবাসীর একাংশ পৌর প্রশাসনের এই আবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। গৌর নিতাইয়ের স্মরণে নবদ্বীপে দোল পূর্ণিমার উৎসব ‘গৌড় পূর্ণিমা’ হিসেবে পালিত হয়। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দদের সমাগম ঘটে নবদ্বীপের পুণ্যভূমিতে। শুক্রবার দোল উপলক্ষে বুধবার থেকেই সেখানে উৎসবের আবহ। নগর পরিক্রমা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মঠ মন্দিরে নাম সংকীর্তন ও নানা ধরনের অনুষ্ঠান চলছে। আমিষ খাদ্য বিক্রি ও খাওয়ার চল নবদ্বীপে সাধারণ। তবে এবার পৌরসভার এই উদ্যোগ কিছু বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।