ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ব্র্যাডলি বার্টেলের স্ত্রী, ক্যামিলা মুনোজ, একজন পেরুর নাগরিক, যার কাজের-অধ্যয়ন ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল (Trump Voter Deported)। তিনি যখন গ্রিন কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন, তখন অভিবাসন এজেন্টরা তাকে গ্রেফতার করে।
হানিমুন থেকে ফেরার পরই স্ত্রীকে গ্রেফতার করল ইমিগ্রেশন (Trump Voter Deported)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক সমর্থক, ব্র্যাডলি বার্টেল, জানিয়েছেন যে তিনি গত নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে কোনো ভুল করেননি (Trump Voter Deported)। অথচ, তার স্ত্রী ক্যামিলা মুনোজকে মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ গ্রেফতার করেছে।
ক্যামিলা পেরুর নাগরিক, যিনি আমেরিকায় ওয়ার্ক-স্টাডি ভিসায় এসেছিলেন। তবে, তার ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও তিনি স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করছিলেন। এই পরিস্থিতিতেই তাকে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) কর্তৃপক্ষ গ্রেফতার করে।
‘আমি আমার সিদ্ধান্তে অনুতপ্ত নই’ (Trump Voter Deported)
যদিও এমন কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, তবুও বার্টেল ট্রাম্পের সমর্থক হয়েই রয়েছেন (Trump Voter Deported)। তিনি Newsweek-কে বলেন, “আমি আমার ভোট নিয়ে অনুতপ্ত নই।” প্রসঙ্গত, ট্রাম্প তার শাসনকালে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো বিতাড়ন অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছেন। এই কঠোর অভিবাসন নীতির ফলে লক্ষ লক্ষ অভিবাসীকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে।
কীভাবে গ্রেফতার হলেন ক্যামিলা? (Trump Voter Deported)
২০১৯ সালে ক্যামিলা মুনোজ ওয়ার্ক-স্টাডি ভিসায় উইসকনসিনে এসেছিলেন। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির সময় তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, আর সেই সময় আন্তর্জাতিক ভ্রমণও প্রায় বন্ধ ছিল। এই সময়েই তার পরিচয় হয় বার্টেলের সঙ্গে। প্রথমবার বার্টেল তার নম্বর একটি কাগজে লিখে দেন, যা ক্যামিলা ফেলে দিয়েছিলেন। পরে তারা ফেসবুকে যোগাযোগ করেন এবং সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: Borbaad: ইধিকার জন্য রণমূর্তিতে শাকিব, পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন যিশু! কী হতে চলেছে?
পরে তারা বিয়ে করেন, কিন্তু মহামারির কারণে তখনই হানিমুনে যেতে পারেননি।
অবশেষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তারা পুয়ের্তো রিকোতে হানিমুনে যান। কিন্তু ফেরার সময় যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তারা ক্যামিলাকে আটকান এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তিনি জানান যে তিনি গ্রিন কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। কিন্তু এরপরও ICE কর্মকর্তারা তাকে আটক করে লুইসিয়ানার একটি বন্দিশিবিরে পাঠায়।
‘এক বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা’
বার্টেল বলেন, “আমার স্ত্রীর গ্রেফতার হওয়ার দৃশ্য দেখা এক দুঃস্বপ্নের মতো ছিল।” তিনি আরও বলেন, “আমরা একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছি। কিন্তু অভিবাসন প্রক্রিয়া এতটাই জটিল যে, এটি অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে।”
ঘৃণার শিকার বার্টেল
তার স্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্টেল প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তিনি জানান, “অনেকেই আমাকে ঘৃণার বার্তা পাঠিয়েছে। অনেকেই বলেছে, আমরা যা ঘটছে, তা ডিজার্ভ করি।” বার্টেল ICE-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই সংস্থার জরুরি সংস্কার প্রয়োজন।”
আরও পড়ুন: Hotel View Scam: জানালায় লাগানো সমুদ্রের ছবি, তাই দেখতেই লক্ষ লক্ষ খরচ পর্যটকের!
স্ত্রীর জন্য দেশ ছাড়ার ভাবনা
তিনি আরও জানান, যদি ক্যামিলাকে পেরুতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তবে তিনিও দেশ ছাড়ার কথা ভাববেন। তবে, তার ছেলের জন্য এটি কঠিন সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়াবে। ট্রাম্প সম্পর্কে বার্টেল বলেন, “এই ব্যবস্থা তিনিই তৈরি করেননি, তবে তিনি একে ঠিক করতে পারেন। আশা করি, এত বিতর্কের ফলে এই সমস্যাগুলি সামনে আসবে।”
ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি নিয়ে বিতর্ক
বার্টেলের ঘটনা নতুন কিছু নয়। অনেক ট্রাম্প সমর্থকই তার অভিবাসন নীতির কারণে সমস্যায় পড়েছেন। সম্প্রতি, জেন্সি মাচাদো নামের এক ট্রাম্প সমর্থক, যিনি একজন স্বাভাবিককৃত মার্কিন নাগরিক, তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। ফেবিয়ান শ্মিট নামের এক জার্মান নাগরিক, যিনি মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী, তাকেও মার্কিন অভিবাসন অফিসাররা আটক করে।
ট্রাম্পের শাসনকালে হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। শুধু ভারতীয়দের মধ্যেই ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ৩৮৮ জনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। ভারত সরকার সংসদে জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ৩৩৩ জনকে ফেব্রুয়ারিতে তিনটি সামরিক বিমানে সরাসরি ফেরত পাঠানো হয়েছে।