ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত ও চিন—এশিয়ার দুই বৃহত্তম অর্থনীতি (India-China Relationship)। অতীতে সীমান্ত বিবাদ ও রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে দুই দেশের সম্পর্ক বহুবার সংকটের মুখে পড়েছে। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, দুই দেশের মধ্যে জমে থাকা উত্তেজনার বরফ ধীরে ধীরে গলছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ফিরে আসার পাশাপাশি কূটনৈতিক স্তরেও ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে ভারত-চিনের।
শুল্কযুদ্ধে ভারতকে পাশে চায় বেজিং (India-China Relationship)
বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump) বাণিজ্য নীতির পরিপ্রেক্ষিতে চিন এখন নতুন করে কৌশল সাজাচ্ছে (India-China Relationship)। আমেরিকার সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের আবহে ভারতকে পাশে চায় বেজিং। এই পরিপ্রেক্ষিতে চিনা রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ৮৫ হাজার ভারতীয়কে চিন ভিসা দিয়েছে। তাঁর কথায়, “আমরা ভারতীয় নাগরিকদের জন্য চিনে ভ্রমণ আরও সহজ করতে চাই।”
ভিসা সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল (India-China Relationship)
চিন ইতিমধ্যেই ভারতীয় নাগরিকদের জন্য একাধিক ভিসা সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করেছে (India-China Relationship)। যেমন, আগে ভিসা আবেদন করার জন্য অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হত। এখন সরাসরি ভিসা কেন্দ্রে গিয়েই আবেদন করা যাচ্ছে। বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়ার প্রয়োজনও বহু ক্ষেত্রে বাদ দেওয়া হয়েছে। চিনা কর্তৃপক্ষ দ্রুত ভিসা অনুমোদনের দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

আরও পড়ুন: US China Tariff War : “এগোতে হবে বেজিংকেই” শুল্ক সমঝোতা নিয়ে চিনের উপর দায় চাপালেন ট্রাম্প!
ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চায় (India-China Relationship)
চিনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা এসেছে—ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক চায় তারা (India-China Relationship)। কূটনৈতিক স্তরে এমনকি কৌশলগত স্তরেও একযোগে কাজ করতে আগ্রহী বেজিং। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, “হাতি ও ড্রাগন একসঙ্গে নাচলে, পুরো বিশ্ব উপকৃত হবে।” তাঁর মতে, ভারত-চিন একজোট হয়ে আধিপত্যবাদ ও ক্ষমতার রাজনীতির বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে পারে।

সরাসরি বিমান পরিষেবা (India-China Relationship)
বেজিংয়ের তরফে আরও জানানো হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা চালুর সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা চলছে, যা দুই দেশের ভ্রমণ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও গতিময় করবে। এই প্রেক্ষাপটে ৮৫ হাজার ভিসা প্রদান শুধুমাত্র এক পরিসংখ্যান নয়, বরং এটি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উষ্ণতা বৃদ্ধির একটি প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি (India-China Relationship)
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির জেরে যেভাবে বাণিজ্যনীতিতে কড়াকড়ি এসেছে, তাতে চিন চাইছে এশিয়ায় তাদের অবস্থান মজবুত করতে। ভারতকে পাশে পাওয়া সেই কৌশলেরই অংশ। বিশেষত, বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া আধিপত্যের বিরুদ্ধে এক বিকল্প শক্তি হিসেবে ভারত-চিন জোট একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।সব মিলিয়ে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত ও চিনের মধ্যে যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠছে, তা শুধু এই দুই দেশের জন্য নয়, সমগ্র এশিয়া এবং বিশ্বের অর্থনীতির জন্যও একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।