ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে কূটনৈতিক স্তরে সক্রিয় হল রাষ্ট্রপুঞ্জ (Pahalgam Terror Attack)। মঙ্গলবার, রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস পৃথকভাবে কথা বলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সঙ্গে। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে এই দুই আলোচনার আনুষ্ঠানিক বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি, তবে দুই দেশের প্রতিনিধিরা নিজেরাই সমাজমাধ্যমে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
মহাসচিবের ফোন পেয়েছি (Pahalgam Terror Attack)
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর(Dr. S. Jaishankar) এক্স-এ লেখেন, “রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের ফোন পেয়েছি(Pahalgam Terror Attack)। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার দ্ব্যর্থহীন নিন্দা করার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।” একই সঙ্গে তিনি জানান, এই হামলার পিছনে যে ষড়যন্ত্রকারীরা রয়েছে, তাদের ভারত আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করবে। যদিও তিনি সরাসরি পাকিস্তানের নাম করেননি, তবে কূটনৈতিক মহলের মতে, তার মন্তব্যের লক্ষ্য যে ইসলামাবাদ, তা স্পষ্ট।
ভিন্ন সুরে শাহবাজ় শরিফ(Pahalgam Terror Attack)
অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ (Shehbaz Sharif) একেবারে ভিন্ন সুরে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে লেখেন, “আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের সঙ্গে কথা হল। আমি জানালাম যে, পাকিস্তান সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে। একই সঙ্গে ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগ খারিজ করেছি।” শুধু তাই নয়, শাহবাজ় দাবি করেন, পহেলগাঁও হামলার বিষয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া উচিত।

জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান(Pahalgam Terror Attack)
শাহবাজ় আরও বলেন, “আমি রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানিয়েছি, জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী পদক্ষেপ করা দরকার(Pahalgam Terror Attack)। পাকিস্তান শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র, তবে সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে শাহবাজ় ভারতকেই পরোক্ষে হুমকি দিয়েছেন।রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের এই আলোচনার উদ্দেশ্য দ্ব্যর্থহীনভাবে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমন করা এবং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা। তবে কাশ্মীর ইস্যুতে রাষ্ট্রপুঞ্জ অতীতে যতবারই মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছে, ততবারই ভারত সাফ জানিয়েছে, এটি একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কোনও অবকাশ নেই।

আন্তর্জাতিক সমর্থন(Pahalgam Terror Attack)
বিশ্লেষকদের মতে, গুতেরেসের এই আলোচনার তাৎপর্য দুই দিক স্পষ্ট। একদিকে ভারতকে আন্তর্জাতিক সমর্থন জানানো, অন্যদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে মধ্যস্থতামূলক ভূমিকা পালন করা।এই প্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ফের একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারতের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় জোরালো ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে সর্বস্তরে, আর পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলের সামনে নিজেকে ‘শান্তিপ্রিয়’ দেখিয়ে অভিযানের দায় এড়াতে চাইছে।রাষ্ট্রপুঞ্জের এই কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে উত্তেজনার কোনও প্রশমন হয় কি না, সে দিকেই এখন নজর গোটা বিশ্বের।