ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তান যেভাবে ভারতের শ্রীনগর, পঠানকোট, অমৃতসর, লুধিয়ানা ও চণ্ডীগড় সেনা ঘাঁটিগুলিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করেছিল, তা যে শুধু ভারত রুখে দিয়েছে তাই নয়—উল্টে পাকিস্তানের একাধিক সামরিক ঘাঁটির এয়ার ডিফেন্স রাডার সিস্টেম ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা (Sudarshan Chakra)। আর এই প্রতিরক্ষা ও পাল্টা হামলার মূল কারিগর হয়ে উঠেছে ভারতের গর্ব, অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ‘সুদর্শন চক্র’।
‘সুদর্শন চক্র’ (Sudarshan Chakra)
‘সুদর্শন চক্র’ নামটি শুনলেই মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণের অনন্ত শক্তির প্রতীক মনে পড়ে (Sudarshan Chakra)। বাস্তবেও এই নামের সার্থকতা মিলেছে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (DRDO)-র তৈরি এই অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমে। এটি একটি মাল্টি-লেয়ার্ড, ইন্টিগ্রেটেড ও অটোমেটেড প্রতিরক্ষা বলয়, যা অত্যন্ত কম সময়ে আকাশপথে আসা শত্রু হামলা শনাক্ত করে তা ধ্বংস করতে সক্ষম।
এই সিস্টেমে রয়েছে:
- রাডার ফিউশন টেকনোলজি – একাধিক সেন্সর ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য একত্রিত করে AI-এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য হুমকি চিহ্নিত করা হয়।
- ইলেকট্রনিক ও অপটিক্যাল ট্র্যাকিং – শুধু রেডার নয়, থার্মাল ও ভিজ্যুয়াল সেন্সর দিয়েও টার্গেট নজরবন্দি হয়।
- AI-চালিত টার্গেট অ্যানালিসিস – কোন বস্তু বিপজ্জনক, কোনটি বিভ্রান্তিমূলক, তা চিহ্নিত করতে স্বয়ংক্রিয় বিশ্লেষণ হয়।
- ইনটিগ্রেটেড ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম – একাধিক দূরত্বে মোতায়েন করা অস্ত্র ব্যবস্থা ও মিসাইল লঞ্চার থেকে নির্দেশিতভাবে আক্রমণ চালানো যায়।
পাকিস্তানের হামলার ছক (Sudarshan Chakra)
বুধবার গভীর রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে পাকিস্তান যে হামলা চালাতে চেয়েছিল, তার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সেনা ছাউনিগুলি অচল করে দেওয়া(Sudarshan Chakra)। সীমান্ত বরাবর ড্রোন, মিসাইল ও রাডার জ্যামার পাঠিয়ে একযোগে আক্রমণের ছক ছিল। ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগের অগ্রিম তথ্য এবং সেনাবাহিনীর প্রস্তুতির ফলে এই ছক শুরুতেই ধাক্কা খায়।কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, ‘সুদর্শন চক্র’ সিস্টেমের মোতায়েন, যা রাতারাতি দেশের আকাশকে অদৃশ্য ঢালের মতো ঢেকে দেয়। প্রতিটি সেনা ঘাঁটির উপর এয়ার রেডার বলয় তৈরি করে শত্রুপক্ষের আকাশযান প্রবেশ করতেই তাকে শনাক্ত ও ধ্বংস করা হয়। ড্রোনগুলির উপর অ্যান্টি-ড্রোন লেজার গাইডেড অস্ত্র প্রয়োগ করা হয়, এবং যেসব মিসাইল আকাশসীমায় প্রবেশ করে, সেগুলি স্যাটেলাইট নির্দেশিত মিসাইল দিয়ে মধ্যেই ভূপাতিত করা হয়।

আরও পড়ুন:Operation Sindoor : মধ্যরাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’, সকালে কেমন ছবি ছিল পাকিস্তানে?
পাকিস্তানের রাডার ধ্বংস(Sudarshan Chakra)
ভারত শুধু আত্মরক্ষায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। জবাবি হামলায় লাহোর, গুজরানওয়ালা ও সিন্ধের একাধিক এয়ার ডিফেন্স রাডার সিস্টেমে আঘাত হানে ভারতীয় বাহিনী। এই কাজে ব্যবহৃত হয় ‘সুদর্শন চক্র’-এর বাইন্ডেড ফায়ার কন্ট্রোল মডিউল, যা সীমান্ত বরাবর স্থাপন করা আক্রমণাত্মক অস্ত্র ব্যবস্থা থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশে হামলা চালাতে সক্ষম।এই হামলায় পাকিস্তানের অন্তত তিনটি রাডার স্টেশন ও দুটি UAV কন্ট্রোল সেন্টার সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে পড়ে বলে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া(Sudarshan Chakra)
অভিজিৎ রায়, প্রাক্তন এয়ার মার্শাল, বলেন,
“‘সুদর্শন চক্র’ একটি গেমচেঞ্জার। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা ও আক্রমণের ভারসাম্য। শুধু প্রতিরোধ নয়, আগ্রাসনের জবাব কীভাবে দেওয়া যায়, তা দেখিয়েছে এই সিস্টেম।”
ডিফেন্স অ্যানালিস্ট নন্দিতা সরকার জানান,
“এই ধরনের ইনটিগ্রেটেড সিস্টেম সাধারণত আমেরিকা, ইজরায়েল বা চীন ব্যবহার করে। ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে এমন সিস্টেম গড়ে তোলা আমাদের আত্মনির্ভরতার দৃষ্টান্ত।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বার্তা(Sudarshan Chakra)
বৃহস্পতিবার এক সরকারি বিবৃতিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানায়,
“ভারতের ভূখণ্ড ও আকাশসীমা সুরক্ষার জন্য সেনা প্রস্তুত এবং প্রয়োজনে প্রতিশোধ নিতে সম্পূর্ণ সক্ষম। ‘সুদর্শন চক্র’-এর মোতায়েন দেশের আকাশরক্ষার ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”
কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের ইঙ্গিত(Sudarshan Chakra)
এই ঘটনার পর দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক ভারতের পাল্টা হামলার বিষয়ে নিন্দা জানালেও, ভারত তার প্রতিরক্ষা কৌশলকে ন্যায্য ও প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেছে। আন্তর্জাতিক মহল পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।তবে একটি সত্য এবার সামনে এসেছে— ভবিষ্যতের যুদ্ধে শুধু সেনা ও অস্ত্র নয়, প্রযুক্তি এবং তথ্য-নির্ভরতা-ই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আর সেই লড়াইয়ে ভারতের হাতে রয়েছে ‘সুদর্শন চক্র’-এর মতো অদৃশ্য অথচ অপ্রতিরোধ্য অস্ত্র।